নীল নদের নামে হযরত ওমর (রা.) এর চিঠি
আমি অনেক বুযুর্গদের মুখে হযরত ওমর (রা.) এর একটি অত্যান্ত আশ্চর্য ঘটনা শুনেছি । কিন্তু কোনো কিতাব তার সন্ধান পাইনি। ঘটনাক্রমে ইবনে তাগরী বরদী (রহ.) এর আন নুজুম যাহেরা নামক কিতাব খানা অধ্যয়নের এক পর্যায়ে ঘটনাটির বিবরণ নজরেএলো ।
তিনি লিখেন হযরত আমর ইরনুল আস (রা.) মিশর বিজয় করার পর সেখানকার গভর্নর নিযুক্ত হলেন। কিছু দিন পর রওনা মাস এলো। (রওনা হলো কিবতী ভাষায় জুন মাসকেবলা হয়) মাসের শুরুতেই মিশরের প্রাচীন কিবতী সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনিধি দল তার নিকট হাজির হলো। প্রতিনিধি দল আমর ইবনুল আসকে বললো, জাহাঁপনা । আমাদের এখানে নীল নদের একটি রীতি নদের একটি রীতি প্রচলিত আছে।
প্রতি বছর তা পূরণ করা না হলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ইবনুল আস (রা.) প্রশ্ন করলেন রীতিটা কি? তারা বললো, এ মাসের বার তারিখে আমরা একজন সুশ্রী তরুণীকে বহু মূল্যবান অলংকারাদি দিয়ে সাজিয়ে নীল নদে নিক্ষেপ করি। তারপরই কাকতালীয়ভাবে দ্রুত বেগে পানির স্রোত প্রবাহিত হতে থাকে। হযরত আমর ইবনুল আস (রা.) বললেন, এটা কোনোভাবেই ইসলামী রীতি হতে পারে না বা ইসলাম এটাকে সমর্থন করে না ।
বরং ইসলাম জাহেলী যুগের সকল কুসংস্কার কুপ্রথাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। কিবতীদের প্রতিনিধি দল একথা শুনে চলে গেলো। কিন্তু ঘটনা তাই ঘটলো তারা যা বলেছিলো। রওনা (জুন) আবইয়াব (জুলাই) এবং মুসরী (আগস্ট) এ তিন মাস নীলনদ পানিবিহীন পড়ে থাকলো। আমর ইবনুল আস (রা.) তখন খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর (রা.) এর নিকট একটি চিঠি লিখে এ ব্যাপারে পরামর্শ চাইলেন।
হযরত ওমর (রা.) প্রতিনিধি দলের সাথে কৃত ভূমিকাকে স্বাগতম জানিয়ে বললেন ,আমি একটি চিঠি লিখে দিচ্ছি। এটা নীল দরিয়ায় নিক্ষেপ করবেন। হযরত আমর ইবনে আস (রা.) চিঠিটা খুলে দেখলেন লেখা আছে, আল্লাহর বান্দা আমীরুল মুমিনীন ওমরের পক্ষ হতে মিশরের নীল নদের নামে।
হামদ ও সালাতের পর,যদি তুমি নিজ থেকে প্রবাহিত হও তবে আমার পানির কোনো দরকার নেই। আর যদি মহান আল্লাহর নির্দেশে প্রবাহিত হও তবে আমরা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি ,পানি প্রবাহের জন্য। আমর ইবনুল আস (রা.) খৃস্টানদের সালীব উৎসবের একদিন পূর্বে উক্ত চিঠিখানা নীল নদে নিক্ষেপ করলেন।
এদিকে মিসরের সমস্ত অধিবাসীরা সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিলো, কারণ নীলনদের পানির উপরই নির্ভর করতো তাদের জীরন। অতঃপর সালীব উৎসবের দিন ভোরে তারা গিয়ে দেখে নীল নদ পানিতে টুইটুই করছে ।
টলটলে পানির ঢেউ আছড়ে পড়ছে দুইকূলে। মাত্র এক এক রাত্রে নীল নদের পানি ষোল ফিট পযন্ত উঠে গেলো।
নীল নদের নামে হযরত ওমর (রা.) এর চিঠি