হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ - Abdullah Ibne Masuder Jiboni
14:20:50 06/01/2024
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) Abdullah Ibne Masuder Jiboni
নাম: আব্দুল্লাহ।
উপনাম : আবু আব্দুর রহমান।
পিতার নাম :মাসউদ
মাতা : উম্মে আব্দ।
জন্ম : তিনি হিজরতের প্রায় ২৮ বছর পূর্বে জন্মহগ্রহণ করেছেন।
ইসলাম গ্রহণ : রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দারুল আরকামে প্রবেশের পূর্বেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করে ধন্য হন। ঐতিহাসিক মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক তাঁকে ৩৩ তম এবং ‘সিয়ারে আলামুন নুবালা’ গ্রন্থে তাঁকে ১৭তম মুসলিম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাসুলের সান্নিধ্য : রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারের সাথে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের এতো বেশী ঘনিষ্টতা ছিল যে, নতুন কোন লোক আসলে তাঁকে নবী পরিবারেরই একজন মনে করত। তিনি ছিলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশেষ খাদেম। রাসুলের একান্ত গোপন বিষয় সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিফহাল ছিলেন। সফরে তিনি সর্বদা তাঁর সাথে থাকতেন এবং রাসুলের মিসওয়াক, জুতা, বিছানা ও অযুর পানি তিনি বহন করতেন । এ জন্য তিনি ‘সাহিবু সিররুর রাসুল, সাহিবুন না‘লাইন ও সাহিবুল বিসাদা (প্রিয় নবীর একান্ত বিষয়ে জ্ঞাত, রাসুলের জুতা ও বালিশ বহনকারী) উপাধিতে পরিচিতি লাভ করেন।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন : দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে কূফার শিক্ষক নিযুক্ত করেন এবং ওযীর হিসাবে মনোনীত করেন । খলিফা কূফাবাসীর প্রতি যে পত্র লিখেছিলেন তাতে একথাও বলেছিলেন যে, ‘আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদকে আমার নিজের উপর তোমাদের জন্য প্রাধান্য দিয়েছি।
বৈশিষ্টাবলী : তিনি আচার-আচরণে এবং চাল-চলনে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাদৃশ ছিলেন । রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছিলেন। একবার তিনি বলেছিলেন- ‘উম্মে আদের পুত্র (ইবনে মাসউদ) আমার উম্মতের জন্য যা পছন্দ করে আমিও তা পছন্দ করি । আর যা সে অপছন্দ করে আমিও তা অপছন্দ করি। তিনি ছিলেন বড় মাপের মুহাদ্দিস, ফক্বীহ ও মুফাসসির। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জ্ঞানের সাক্ষ্য দিয়েছেন এই বলে- ‘তোমরা চারজন থেকে কুরআন শিক্ষা কর। যথা- আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, সালেম, মুয়ায ও উবাই ইবনে কাআব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম । বিশেষ করে ফিকহ শাস্ত্রে তিনি অদ্বিতীয় ছিলেন। আর হানাফী মাযহাবের উৎস হলো আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু।
তাঁর বর্ণিত হাদীস সংখ্যা : হাদীস শাস্ত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি সর্বমোট ৮৪৮ টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি একত্রে ৬৪ টি, এককভাবে বুখারী শরীফে ২১ টি এবং মুসলিম শরীফে ৩৫ টি হাদীস উল্লেখ রয়েছে।
মৃত্যু : তিনি ৩২ হিজরীতে মদীনা মুনাওয়ারায়, কারো মতে কুফায় ইন্তিকাল করেছেন । মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ৬০ এর অধিক। হযরত ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মতান্তরে আম্মার ইবনে ইয়াসির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁর জানাযায় ইমামতি করেন । জান্নাতুল বাকিতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তথ্যসূত্র- ১. সিয়ার ৩/২৭৯, ২. উসদুল গাবা ৩/৭৪, ৩. আলইসাবা ২/৩৬৮, ৪. তাযকিরা ১/১৬, ৫. হিলইয়া ১/১৮১।