মাড়ি ফুলে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার
মাড়ি ফুলে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার : মাড়ি ফুলে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি দাঁতের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে এবং উপেক্ষা করলে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই মাড়ির ফোলা এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? বিস্তারিত
মাড়ি ফুলে যাওয়ার কারণ
মাড়ি ফুলে যাওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো—
-
প্লাক ও টার্টার জমা হওয়া
দাঁতের চারপাশে খাবারের অবশিষ্টাংশ জমে প্লাক তৈরি হয়। নিয়মিত পরিষ্কার না করলে এটি টার্টারে পরিণত হয়, যা মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং মাড়ি ফুলে যায়। -
জিনজিভাইটিস (Gingivitis)
এটি মাড়ির প্রদাহজনিত একটি সাধারণ সমস্যা, যা মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়। জিনজিভাইটিস হলে মাড়ি লাল হয়ে যায়, ফোলে এবং কখনও কখনও রক্তপাতও হতে পারে। -
পেরিওডন্টাইটিস (Periodontitis)
এটি জিনজিভাইটিসের একটি গুরুতর পর্যায়, যা দাঁতের মাড়ির গভীর টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মাড়ি ফুলে যায়, দাঁতের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অবশেষে দাঁত নড়বড়ে হতে পারে। -
পুষ্টির ঘাটতি
ভিটামিন সি ও কে-এর অভাব মাড়ির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে স্কার্ভি রোগ হলে মাড়ি ফুলে যায় ও রক্তপাত হয়। -
হারমোনাল পরিবর্তন
গর্ভাবস্থা, মাসিক চক্র বা মেনোপজের সময় শরীরের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাড়ি সংবেদনশীল হয়ে ফুলে যেতে পারে। -
সংক্রমণ
ভাইরাস বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণের কারণে মাড়ি ফুলে যেতে পারে। হার্পিস ভাইরাস বা ক্যানডিডা সংক্রমণ মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। -
ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য গ্রহণ
ধূমপান বা তামাক ব্যবহারের ফলে মাড়ির রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, যা মাড়ি ফুলে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।
মাড়ি ফুলে যাওয়ার প্রতিকার
মাড়ির ফোলা কমাতে কিছু কার্যকর প্রতিকার অনুসরণ করা যেতে পারে—
-
সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করা
দিনে অন্তত দুবার সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করুন। নরম ব্রিসলের টুথব্রাশ ব্যবহার করুন এবং মৃদু হাতে ব্রাশ করুন। -
মাউথওয়াশ ব্যবহার করা
ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন। -
লবণ পানির গার্গল করা
লবণ মিশ্রিত কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করলে মাড়ির ফোলা ও প্রদাহ কমতে সাহায্য করে। -
সঠিক খাদ্যাভ্যাস গঠন করা
ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান, যেমন—টক ফল, দুধ ও শাকসবজি। -
পর্যাপ্ত পানি পান করা
পর্যাপ্ত পানি পান করলে মুখের লালা উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে, যা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সহায়ক। -
ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া
যদি মাড়ির ফোলা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে দেরি না করে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন।
সুস্থ মাড়ির জন্য নিয়মিত পরিচর্যা করা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে মাড়ির ফোলা প্রতিরোধ করা সম্ভব।