সহজে পড়া মনে রাখার কৌশল
সহজে পড়া মনে রাখার কৌশল
অনেক সময় আমরা পড়া শেষ করার পর দ্রুত ভুলে যাই। এটি সাধারণ একটি সমস্যা, তবে কিছু নির্দিষ্ট কৌশল অনুসরণ করলে সহজেই পড়া মনে রাখা সম্ভব। নিচে কয়েকটি কার্যকর কৌশল আলোচনা করা হলো।
১. বুঝে পড়া
কেবল মুখস্থ করার পরিবর্তে, বিষয়টি ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। যখন আমরা কোনো বিষয় বুঝে পড়ি, তখন তা দীর্ঘ সময় স্মৃতিতে সংরক্ষিত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞানের কোনো সূত্র মুখস্থ না করে যদি আমরা সেটার কার্যপ্রণালী বুঝতে পারি, তাহলে তা সহজেই মনে থাকবে।
সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি
২. বারবার পুনরাবৃত্তি করা
একটি বিষয় পড়ার পর সেটি বারবার রিভিশন করলে তা সহজে মনে থাকে। গবেষণা বলছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পড়া পুনরায় ঝালিয়ে নিলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই নতুন কিছু শেখার পর সেটি নিয়মিত পুনরাবৃত্তি করা উচিত।
৩. সংক্ষেপে নোট নেওয়া
যখন কোনো কিছু পড়ি, তখন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংক্ষেপে নোট করে রাখা উচিত। নোট তৈরি করলে পড়ার সময় মূল পয়েন্টগুলো স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে মনে রাখতে সাহায্য করে।
৪. চিত্র ও গ্রাফ ব্যবহার করা
চিত্র, চার্ট, ও গ্রাফিক্স মস্তিষ্কের জন্য সহজবোধ্য হয়। যখন কোনো কঠিন বিষয় শিখতে হয়, তখন সেটিকে চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে তা দ্রুত এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য মনে থাকে।
৫. গল্প বা উদাহরণ তৈরি করা
কোনো তথ্য মনে রাখার জন্য সেটিকে গল্প বা উদাহরণের সঙ্গে সংযুক্ত করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সৌরজগতের গ্রহগুলোর নাম মনে রাখার জন্য একটি বাক্য তৈরি করা যেতে পারে—“মা খুব তুমি নাচো, যেন সব উপায় শেষ” (মঙ্গল, শুক্র, পৃথিবী, তৃতীয় গ্রহ, বৃহস্পতি, শনির উপগ্রহ ইত্যাদি)।
৬. শব্দসংক্ষেপ ও অ্যাক্রোনিম ব্যবহার
অনেক সময় বড় বড় তথ্য মনে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে শব্দসংক্ষেপ বা অ্যাক্রোনিম (acronym) ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, রংধনুর সাতটি রঙ মনে রাখার জন্য "বিবগতনী" (বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল) শব্দটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭. অন্যকে শেখানো
যখন আমরা অন্য কাউকে কোনো কিছু শিখাই, তখন সেটি আমাদের মস্তিষ্কে আরও ভালোভাবে গেঁথে যায়। তাই পড়া মনে রাখতে চাইলে বন্ধু বা পরিবারের কাউকে তা শেখানোর চেষ্টা করা যেতে পারে।
৮. স্মৃতি চাঙ্গা রাখার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম
পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম না পেলে মস্তিষ্ক ভালোভাবে তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে না। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের সময় মস্তিষ্ক তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ।
৯. মনোযোগ ধরে রাখা ও ধ্যান করা
যদি মনোযোগ ভালোভাবে কেন্দ্রীভূত করা না যায়, তাহলে পড়া সহজে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট ধ্যান করলে মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়, যা পড়া মনে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়।
উপরের কৌশলগুলো অনুসরণ করলে পড়া সহজে মনে রাখা সম্ভব এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।