ব্রণ হলে যে পাঁচটি ওষুধ ব্যবহার করবেন
ব্রণ হলে যে পাঁচটি ওষুধ ব্যবহার করবেন : ব্রণ (Acne) একটি সাধারণ ত্বকের সমস্যা, যা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এটি মূলত অতিরিক্ত তেল উৎপাদন, মৃত কোষ জমে থাকা এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। যদিও ব্রণ স্বাভাবিকভাবেই সেরে যেতে পারে, তবে কখনো কখনো এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ব্রণের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়, তবে সবচেয়ে কার্যকর পাঁচটি ওষুধ সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? বিস্তারিত
১. বেনজয়েল পারঅক্সাইড (Benzoyl Peroxide)
বেনজয়েল পারঅক্সাইড একটি জনপ্রিয় ব্রণ নিরাময়ের ওষুধ, যা মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং মৃত কোষ অপসারণে সাহায্য করে। সাধারণত ২.৫% থেকে ১০% পর্যন্ত শক্তির বেনজয়েল পারঅক্সাইড জেল বা ক্রিম হিসেবে পাওয়া যায়। এটি সকালে ও রাতে ব্যবহার করা যায়, তবে প্রথমে স্বল্প মাত্রার ব্যবহার শুরু করা উচিত, কারণ এটি ত্বকে শুষ্কতা ও লালচে ভাব আনতে পারে।
২. স্যালিসিলিক অ্যাসিড (Salicylic Acid)
স্যালিসিলিক অ্যাসিড একটি বিটা-হাইড্রক্সি অ্যাসিড (BHA), যা ত্বকের ছিদ্র পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। এটি মৃত কোষ সরিয়ে দেয় এবং ব্রণের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত এটি ফেসওয়াশ, টোনার বা ক্রিমের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। যাদের ব্রণ থেকে ব্ল্যাকহেড বা হোয়াইটহেড হওয়ার প্রবণতা আছে, তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই দিনে একবার বা দুবার ব্যবহার করাই ভালো।
৩. রেটিনয়েড (Retinoids)
রেটিনয়েড হল ভিটামিন এ-এর একটি যৌগ, যা ত্বকের কোষের পুনর্জন্মে সহায়তা করে এবং ব্রণের সৃষ্টি রোধ করে। এটি মূলত ত্বকের ছিদ্র খুলে দেয়, নতুন কোষ তৈরিতে সহায়তা করে এবং দাগ দূর করতে সাহায্য করে। সাধারণত রেটিনয়েড হিসেবে Tretinoin, Adapalene, Isotretinoin ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। প্রথমদিকে এটি ত্বকে একটু জ্বালাপোড়া অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে, তবে নিয়মিত ব্যবহারে তা কমে যায়। এটি সাধারণত রাতে ব্যবহার করা হয়, কারণ এটি সূর্যের আলোতে সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারে।
৪. অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম (Antibiotic Cream)
ব্রণের পিছনে ব্যাকটেরিয়া একটি বড় কারণ। তাই কখনো কখনো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করতে হয়। Clindamycin এবং Erythromycin হল দুটি সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক, যা ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। এগুলো ত্বকের সংক্রমণ কমিয়ে ব্রণের প্রদাহ হ্রাস করে। তবে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী হয়ে যেতে পারে, তাই নির্দিষ্ট সময় পর এগুলোর ব্যবহার বন্ধ করতে হয়।
৫. আজেলেইক অ্যাসিড (Azelaic Acid)
আজেলেইক অ্যাসিড একটি প্রাকৃতিক অ্যাসিড, যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকর। এটি সাধারণত ১০% থেকে ২০% শক্তির ক্রিম বা জেল হিসেবে পাওয়া যায়। এটি ত্বকের লালচে ভাব কমায় এবং হাইপারপিগমেন্টেশন হ্রাস করতে সাহায্য করে। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এটি তুলনামূলকভাবে নিরাপদ একটি ওষুধ।
উপসংহার
ব্রণ একটি বিরক্তিকর সমস্যা হলেও সঠিক ওষুধ ও যত্নের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে, কোনো ওষুধ ব্যবহারের আগে ত্বকের ধরন বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওষুধ ব্যবহার করলে ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, তাই ধৈর্য ধরে ধাপে ধাপে চিকিৎসা গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।