চোখ কত প্রকার ও কি কি?
চোখ কত প্রকার ও কি কি? চোখ হল দৃষ্টিশক্তির প্রধান অঙ্গ, যা আমাদের চারপাশের পৃথিবীকে দেখতে সাহায্য করে। এটি জটিল এবং সংবেদনশীল অঙ্গ, যা আলোর প্রতিফলন বিশ্লেষণ করে বস্তুর রূপ ও রঙ নির্ধারণ করে। চোখের বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগ রয়েছে, যা গঠন, কার্যকারিতা এবং প্রাণীর ধরন অনুসারে পার্থক্য করা হয়।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? যোগাযোগ করুন 01303 483365
চোখের প্রকারভেদ
চোখকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়—
১. সরল চোখ (Simple Eye)
সরল চোখ এক ধরনের সহজ গঠনের চোখ, যা সাধারণত একক লেন্সবিশিষ্ট এবং কম জটিল। এটি এক ধরনের একক অপটিক্যাল ইউনিট হিসেবে কাজ করে।
সরল চোখের ধরন:
ক. পিনহোল আই (Pinhole Eye)
- এটি খুবই মৌলিক ধরনের চোখ, যেখানে কোনো লেন্স থাকে না।
- জলজ প্রাণী যেমন নটিলাস (Nautilus) এই ধরনের চোখের উদাহরণ।
- এটি কম আলো গ্রহণ করতে পারে এবং ছবির স্পষ্টতা কম থাকে।
খ. ওসেলি (Ocelli)
- ওসেলি হলো ক্ষুদ্র চোখ যা সাধারণত পোকামাকড় ও আর্থ্রোপোডে পাওয়া যায়।
- এটি কেবল আলোর উপস্থিতি ও অনুপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে, কিন্তু বিশদ চিত্র গঠন করতে পারে না।
গ. স্টোমাটাল আই (Stomatopod Eye)
- এটি কিছু সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে পাওয়া যায়।
- আলোর দিক ও তীব্রতা নির্ণয়ে সাহায্য করে।
২. যৌগিক চোখ (Compound Eye)
যৌগিক চোখ অনেকগুলি ক্ষুদ্র লেন্স বা ফ্যাসেট দ্বারা গঠিত হয়। এটি পোকামাকড় ও আর্থ্রোপোডদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
যৌগিক চোখের ধরন:
ক. অ্যাপোজিশন আই (Apposition Eye)
- এটি পৃথক পৃথক লেন্সযুক্ত অনেকগুলো ইউনিট বা ওমাটিডিয়া দ্বারা গঠিত।
- প্রতিটি ইউনিট আলাদাভাবে আলোর সংকেত গ্রহণ করে এবং চিত্র তৈরি করে।
- মৌমাছি, প্রজাপতি ও ঘাসফড়িঙের এই ধরনের চোখ থাকে।
খ. সুপারপোজিশন আই (Superposition Eye)
- এই চোখে আলোর প্রতিসরণ হয় এবং একত্রে মিলিত হয়ে পরিষ্কার চিত্র তৈরি করে।
- রাতের প্রাণীদের (যেমন: পতঙ্গ, বিটল) মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
৩. বিশেষ ধরনের চোখ
কিছু প্রাণীর চোখ বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়ে থাকে—
ক. ক্যামেরা টাইপ আই (Camera-type Eye)
- এটি মানব চোখের মতো কাজ করে।
- এতে কর্নিয়া, লেন্স, রেটিনা ও অপটিক নার্ভ থাকে।
- স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি ও সরীসৃপদের মধ্যে এই ধরনের চোখ দেখা যায়।
খ. তাপ সংবেদনশীল চোখ (Infrared-sensitive Eye)
- কিছু সাপ, বিশেষত পিট ভাইপার (Pit Viper), তাপ শনাক্ত করতে পারে।
- এটি রাতে শিকারের জন্য কার্যকর।
উপসংহার
চোখের প্রকারভেদ প্রাণীর জীবনধারার ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতির বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রাণীর চোখের গঠন আলাদা হয়ে থাকে।