Narrow selection

তাবলীগের ছয় উসূল না মানলে মুমিন না কাফির? - Six principles of Tabligh


01:37:17 12/04/2023

তাবলীগের ছয় উসূল না মানলে মুমিন না কাফির?

তাবলীগের উপর আরেক প্রশ্ন আসে, আচ্ছা বুঝলাম ঈমানদারদেরকে ঈমানের দাওয়াত দেওয়ার জন্য তাবলীগের দরকার আছে। কিন্তু ছয় উসূল পেলেন কোথায়? কয়েক বছর আগে নরসিংদী জেলার সাপমারা' বাজারে আরেকটা বহুস হয়েছিল। সেই বহসে উপস্থিত ছিলেন- বর্তমানে এদেশের সকল বাতিলের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙ্গা জবাব দাতা, বিশেষতঃ রেজভী ফেৎনার মূলোৎপাটনকারী, তরজমানে আহলে হক আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী সাহেব । ঐ বহসে তিনি তাবলীগ বিরোধীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে তাদেরকে ভণ্ড ও নবীর দুশমন প্রমাণ করেছেন। কিন্তু এই বেহায়াদের লজ্জা বলতেই নেই। বহুবার বহস-মুনাযারায় হার মেনে নাকে- মুখে চুন-কালি লাগার পরও মুনাযারায় ডাক দেয় গ্রাম-গঞ্জের সরল লোকদের সামনে ।

 

প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে খাঁটি আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর লোকদের ওহাবী প্রমাণ করতে চায় । এই ভণ্ডদের সেহেতু কোন ই'লেম, কলাম ও আমল নেই। আছে শুধু মুখের বুলি ও চাপাবাজি। এই চাপাবাজী করেই দেদারছে পেট পূজারীর ব্যবসা করছে। যাই হোক আল্লামা ওলীপুরীর সেই বহসের একটা বিষয় ছিল এই । আল্লামা বলেন- তাবলীগ বিরোধীদের পক্ষ থেকে আমাদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, “তাবলীগের ছয় উসূল যারা মানেন না, তাদের ব্যাপারে আপনি কী বলতে চান?”

আমি যদি বলি যারা ছয় উসূল মানে না তারাও ঈমানদার তখন তারা বলবে, “তাহলে তাবলীগের ছয় উসূল মানা আমদের কোন দরকার নেই। কেননা আমরা তো এমনিতেই ঈমানদার।” আর যদি বলি, তাবলীগের ছয় উসূল যারা মানবে না তাদের ঈমান থাকবে না। তাহলে তারা বলবে, “ছয় উসূল তো ইলিয়াছ বলেছে । তাহলে তার পূর্বে যারা অতিবাহিত হয়েছে তারা তো ছয় উসূল পাননি । তবে কি তারা ঈমানদার নন?”

কাজেই যে দিকেই আমি জবাব দেব তারা সে দিকেই আপত্তি উঠাবে । এজন্যই চিন্তা করে প্রশ্নটা করেছে । তাই আমি উত্তরে বললাম, ছয় উসূলের প্রথমটি হল- কালিমা |

لا اله الاالله محمدرسول الله

ছয়টা উসূলের সবগুলো না মানলে কি হবে, তা পরে বলব। এর আগে আপনারা বলুন তো, কোন ব্যক্তি যদি এই প্রথম উসূলটি অর্থাৎ 'কালিমা' না মানে তাহলে সে কি হবে? মুমিন থকবে না কাফির হবে? কাফির হবে। তাহলে এবার বলুন, ছয়টার একটা না মানলেই যদি কাফির হয় তবে ছয়টার সবগুলি না মানলে কি হবে?

গাট্টিওয়ালাদের ছয় কথায় রোযা-হজ্ব আছে কি না? 

এখন আমরা দেখব যে, গাট্টিওয়ালা তাবলীগীদের কথায় রমযানের রোযা আর হজ্ব আছে কি না? তারা যে ছয় উসূল বলেন, তার তিন নাম্বার উসূল ছিল 'ইলম'। আর ইলম বলা হয় : কুরআন-হাদীসের জ্ঞানকে । আর কুরআন-হাদীস গ্রহণ করলে, হজ্ব গ্রহণ করল না বাদ দিল? কুরআন-হাদীস গ্রহণ করলে রোযা গ্রহণ করল না বাদ দিল?

তোমাদের চোখ থাকলে পবিত্র কুরআন খুলে দেখ! সুস্থ বিবেক থাকলে একবার ভেবে দেখ তো! তাবলীগের ছয় কথায় রোযা-হজ্ব আছ কিনা? আছে । কিন্তু প্রশ্ন হল কালিমার নাম বলতে পারল, নামাযের নাম বলতে পারল, ইকরামুল মুসলিমীনের নাম বলতে পারল, সহীহ নিয়তের কথা বলতে পারল, তাবলীগের কথা বলতে পারল, রমযানের কথা বলল না কেন? হজ্বের কথা বলল না কেন? আরেকটার ব্যাখ্যার ভিতরে রেখে দিল কেন? পরিষ্কার করে বললেই তো হতো । এরও রহস্য আছে। রহস্য হল, তাবলীগ জামাতে চিল্লা হয় ৪০ দিনে। এই ৪০ দিনের চিল্লা রমযান মাসেও হয় এবং রমযান ছাড়া অন্য সময়েও হয়। তাই যদি তাবলীগের উসূলের মধ্যে রমযানের রোযাকেও সরাসরি শামিল করে দেয়া হয় 

তাহলে এর অর্থ হবে যে, চিল্লায়। গেলেই রোযা রাখতে হবে। রমযান ছাড়া অন্য সময়েও যদি চিল্লায় যায় তাহলে তখনও রোযা রাখতে হবে। অথচ রমযান ছাড়া অন্য সময়ে বাধ্যতামূলকভাবে রোযা রাখাটা ইসলামের কথা নয়। হজ্বের ক্ষেত্রেও একই কথা । তাই রোযার মত হজ্বকেও তাবলীগের উসূল সাব্যস্ত করা হয়নি। তার অর্থ কিন্তু এই নয় যে, তাবলীগের লোকেরা রোযা ও হজ্বকে অস্বীকার করেছে । রোযা ও হজ্ব ছাড়া অন্য বিষয়গুলো বৎসরের যে কোন সময় চিল্লায় গেলেই করতে হয় । 

কালিমার বিশ্বাস স্থাপন, পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করা যেহেতু প্রতিটি মুমিনের ঈমানের অন্তর্ভুত অন্যতম বিষয় তাই এটা ঈমানের পরই আবশ্যকীয় বিষয়। এজন্য এগুলোকে সরাসরি নাম উল্লেখের মাধ্যমে উসূল নির্ধারণ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে ঈলম, যিকির, ইকরামুল মুসলিমীন, সহীহ নিয়ত ও দ্বীনের কাজে সময় দেয়া ছাড়া চিল্লা সফল হতে পারে না। তাই এগুলোকে ছয় উসূলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ।


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color