Narrow selection

​​​​​​​তিন দিন সাত দিন ৩চিল্লার দলিল - Three days seven days 3 days document


01:18:22 12/04/2023

তিন দিন সাত দিন ৩চিল্লার দলিল

হযরত বারা (রা) বলেন যে, রাসূল (সা:) ইয়ামান প্রদেশে তাবলীগের উদ্দেশ্যে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-কে পাঠান। আমিও তাঁদের সাথে ছিলাম । আমরা দীর্ঘ ৬ মাস যাবত সেখানে দাওয়াতে তাবলীগের কাজ অনবরত করে চলেছি। এরপর হযরত আলী (রা)-কে আমীরের দায়িত্ব দিয়ে খালিদ (রা)-কে ফিরে যেতে বলেন এবং তাঁর সাথে যারা ফিরতে চায় তারা ফিরতে পারে, আর যারা যেতে চায় তারা যেতে পারে । আমি হযরত আলী (রা)-এর সাথে আরো সময় বাড়িয়ে দিলাম ।

আমরা ইয়ামানের হামদান গোত্রের দ্বারে দ্বারে বারে বারে গমন করে সকলকেই হাজির করলাম। হযরত আলী (রা) নবী (সাঃ)-এর পত্র পড়ে তাঁদেরকে দাওয়াত দিলেন। তখন সবাই একই সাথে ইসলাম কবুল করে নিলেন। ফিরে এলেন ৪ মাস পর, বিদায় হজ্জের পরে । উভয়ের আমীরত্ব প্রায় ১ বছর হচ্ছে। এ হাদীসের সারাংশের দ্বারা খালেদের ছয় মাস, বারার ৪ মাস ও তার চেয়ে বেশি সময় তাবলীগী সফর করার প্রমাণ মিলেছে।

সাহাবাগণের ৩ দিন, ১০ দিন, ১৫ দিন, ৪০ দিন, ৬০ দিন, ৪ মাস, ৬ মাস, ২/৫ বছর, ২৭ বছর, এমনকি গোটা জীবনটাই পৃথিবীর প্রান্তর থেকে প্রান্তরে তাবলীগে কাটাবার প্রমাণ অসংখ্য ইতিহাস গ্রন্থ স্বর্ণাক্ষরে লিখে রেখেছে। তার কয়েকটা মাত্ৰ নমুনা দেয়া হলো-

প্রাচীণ ও প্রসিদ্ধ আরবী ইতিহাস : ১. ইবনে সায়াদ' রচিত 'তাবাক্বাত’ গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৫১-৫৪ পৃষ্ঠায় ৭ দিন ও ১৫ দিনের জামাতের কথা লেখা আছে। আমীর : স্বয়ং রাসূলে আকরাম (সা:)। ৪র্থ হিজরীর সফর মাসে/ ৬২৫ খ্রি. জুলাই থেকে ৬২৭ খ্রি. সেপ্টেম্বর মাসে এ জামাত রওনা দেয়। রোকঃ সুলায়ম গোত্র, মদিনা শরীফ ।

২. 'ওয়াকীদী ও ইবনে ইসহাক (রা) যথাক্রমে ৭ ও ৩ দিনের কথা উল্লেখ করেছেন। ৩. “ইবনে সায়াদের’ ২য় খণ্ডের ৩৫) ৩৬ পৃষ্ঠায় ৬০ দিনের তাবলীগী জামাতের কথা অবশ্যই পাওয়া যাবে ।

৪. 'তাবারী'/'আখবারূর রুসুল ওয়াল মুলুক' গ্রন্থকার ইমাম আবু জাফর (রা) ৬০ দিনের জামাতের কথা লিখেছেন ।

৫. “ইবনে ইসহাক' নামক ইতিহাসেও তা উদ্ধৃত হয়েছে । আমীর স্বয়ং আল্লাহর রাসুল (সা:)। ৩য় হিজরীর জামাদিউল আউয়াল মাসে অর্থাৎ ৬২৪ খ্রি. অক্টোবর/ নভেম্বর মাসে এ জামাত রওয়ানা হয় ।

-

রোক : আলকুর থেকে বাহরাইন পর্যন্ত এ বিস্তীর্ণ এলাকা তাবলীগের কাজ করতে করতে এগিয়ে যেতেন, ঠিক এ যুগের সালের বা পয়দাল জামাতের মতই । ৬০ দিনের ব্যাপারে সকল ইতিহাসবেত্তাই সম্মত ব্যক্ত করেছেন । কিন্তু মতভেদ স্বয়ং রাসূলের (সা:) উপস্থিতি নিয়ে । কেউ বলেন ৬০ দিন, কেউ ১০ দিন ।

“তাবারী” ও “ইবনে ইসহাকের মতে ৬০ দিন ছিলেন। আর বারাজুরী, ওয়াকিদী ও ইবনে সায়াদের মতে ১০দিন। বড় কথা সময় নয়; দায়িত্বোবোধ! এহৃদয় আকাশে নবী (সা:)-এর দেয়া দায়িত্ববোধ কতটুকু উদয় হয়েছে? তাঁর ফিকিরে ফিকিরমান্দ হতে পেরেছি কি? আমি ডাক্তার হয়েছি, আমি ব্যবসায়ী হয়েছি, আমি আলেম হয়েছি, আমি মুফতী হয়েছি, আমি মুহাদ্দিস হয়েছি, আমি শাইখুল হাদীস হয়েছি, আমি ইঞ্জিনিয়ার হয়েছি, আমি সমাজ সেবক হয়েছি, আমি লিডার হয়েছি; কিন্তু আমি মুসলমান হয়ে নবীর কাজে জুড়তে প্ররেছি কি? সুন্নাত প্রচার করতে পেরেছি কি? উম্মতের ফিকিরে ব্যথিত হতে পেরছি কি? যা হোক, আল্লাহর রাসূল (সা:) স্বয়ং ষাট দিনের তাবলীগী জামাতে বের হয়েছিলেন এ ব্যাপারে সকল ইতিহাসবেত্তা একমত পোষণ করেছেন ।

স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও সংসার রেখে তাবলীগে যাওয়া জায়েজ কী? তাদের হক আদায় করা ও হেফাজতের দায়িত্বও তো আছে ।

আহ! আমার স্ত্রীর হক চিনেছি, ছেলে-মেয়ের হক চিনেছি, আমার আল্লাহর হক চিনেছি কি? আমার ছেলে-মেয়ের দায়িত্ববোধ হয়েছে, আমার নবীর (সাঃ) দাঁত ভাঙ্গা দ্বীনের দায়িত্ববোধ হয়েছে কি? নিজের ছেলে-মেয়েকে রক্ষার জন্যে সদ্য প্রস্তুত, নিজেকে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি হত রক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি কি?

এ প্রস্তুতির ও দায়িত্বানুভূতির জন্যেই স্ত্রী ছেলে-মেয়ে সব রেখে দেশ থেকে দেশান্তরে হিজরত/সফর করার আদেশ স্বয়ং আল্লহ তাআলার রাস্তায় তাবলীগে বের হতে পারেন না, হিজরত করতে পারেন না অথবা শরীয়ত সম্মত জিহাদে শরীক হতে পারেন না তারেদকে আল্লাহপাক ভীষণ আজাবের হুমকী দিয়ে বলেছেন, তোমরা একটু দাঁড়াও, এক্ষুনি আজাব পাঠাচ্ছি। স্ত্রী, ছেলে-মেয়েও সংসারের দরদ কি নবীজী বুঝেননি? নবীজীর চেয়ে কি আমরা সংসারর দায়িত্ব বেশি বুঝি? নবীজীর গোটা জীবনইতো তাবলগি আর জেহাদে কেটেছে । তাহলে নবীওয়ালা এই কাজে কোন মুখে প্রশ্ন উঠাই । মূলতঃ এসব প্রশ্ন শয়তানী প্রশ্ন । যা নবীওয়ালা কাজে বাধাগ্রস্থ করে।


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color