মাথায় ডিম নেওয়ার উপকারিতা কি?
মাথায় ডিম নেওয়ার উপকারিতা কি?
ডিম আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে পরিচিত। তবে অনেকেই জানেন না যে, কাঁচা ডিম মাথায় নেওয়ারও কিছু নির্দিষ্ট উপকারিতা রয়েছে। এটি প্রাচীনকাল থেকে চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং আজও অনেকে এটি ব্যবহার করেন। এই পদ্ধতিটি বিশেষ করে চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে, খুশকি দূর করতে এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে কার্যকরী বলে বিবেচিত হয়।
সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি
১. চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি
ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, বায়োটিন, ভিটামিন বি১২ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা চুলের জন্য অত্যন্ত দরকারী। চুলের গঠন মূলত কেরাটিন নামে এক ধরনের প্রোটিন দিয়ে তৈরি, আর ডিম এই প্রোটিনের একটি চমৎকার প্রাকৃতিক উৎস। নিয়মিত মাথায় ডিম ব্যবহার করলে চুলের শুষ্কতা কমে এবং এটি মজবুত ও স্বাস্থ্যকর হয়।
২. চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে
অনেকেই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। ডিমের মধ্যে থাকা প্রোটিন ও পুষ্টি উপাদান চুলের গোঁড়া মজবুত করে, যা চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, ডিমের সাদা অংশে থাকা এনজাইম চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় এবং চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
৩. খুশকি দূর করতে সহায়ক
খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই বাজারের রাসায়নিক শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে চুলের ক্ষতি করতে পারে। ডিমের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক প্রোটিন ও ভিটামিন মাথার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং শুষ্কতা কমিয়ে খুশকির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
৪. চুলের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা বৃদ্ধি
ডিম ব্যবহারের আরেকটি বড় উপকারিতা হলো এটি চুলকে নরম ও উজ্জ্বল করে তোলে। ডিমের কুসুমে থাকা প্রাকৃতিক চর্বি ও প্রোটিন চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে, ফলে চুল শুষ্ক হয়ে যায় না এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে পায়।
৫. মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
মাথার ত্বক সুস্থ থাকলে চুলের বৃদ্ধিও ভালো হয়। ডিমের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, ডি এবং ই মাথার ত্বকের জন্য উপকারী। এগুলো মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এবং চুল পড়ার হার কমিয়ে আনে।
৬. চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে
অনেকেই বাজারের কন্ডিশনার ব্যবহার করেন, যা রাসায়নিক পদার্থে পরিপূর্ণ এবং চুলের ক্ষতি করতে পারে। ডিম প্রাকৃতিকভাবে কন্ডিশনারের মতো কাজ করে এবং চুলের রুক্ষতা কমায়। বিশেষ করে, কুসুমের অংশটি চুলের জন্য বেশি কার্যকরী, কারণ এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
কীভাবে মাথায় ডিম ব্যবহার করবেন?
১. একটি বা দুটি ডিম (চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী) নিন।
2. ভালোভাবে ডিম ফেটিয়ে নিন।
3. এটি মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন।
4. ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
5. সাধারণ ঠান্ডা পানি ও মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সতর্কতা
- অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে চুল তেলতেলে হয়ে যেতে পারে।
- ডিম ব্যবহারের পর চুল ভালোভাবে ধোয়া না হলে দুর্গন্ধ থাকতে পারে।
- ডিম ব্যবহারের পর মাথা খুব গরম জায়গায় না রাখা ভালো, কারণ এতে ডিম চুলে শক্ত হয়ে যেতে পারে।
সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে মাথায় ডিম নেওয়া চুলের জন্য কার্যকরী হতে পারে। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়ার একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী সমাধান।