Narrow selection

ঘুম না আসলে কোন ঔষধ খেতে হয়?


ঘুম না আসলে কোন ঔষধ খেতে হয়? ঘুম মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীর ও মস্তিষ্ককে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং সার্বিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। তবে অনেক সময় মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, অনিয়মিত জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, বা শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া (Insomnia) রয়েছে, তারা অনেক সময় ঘুম আনতে ঔষধের সাহায্য নিয়ে থাকেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খাওয়া কখনই নিরাপদ নয়। এই প্রবন্ধে আমরা ঘুম না আসলে কোন ঔষধ খেতে হয়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

 

ঘুমের সমস্যা ও এর কারণ

ঘুম না আসার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন—

  • মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ঘুমে বিঘ্ন ঘটায়।
  • অনিয়মিত জীবনধারা: ঘুমানোর সময় নির্দিষ্ট না থাকলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
  • খারাপ খাদ্যাভ্যাস: চা, কফি, অ্যালকোহল বা বেশি ঝাল-মসলাযুক্ত খাবার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
  • শারীরিক সমস্যা: ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদির কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার: স্মার্টফোন, টিভি, ল্যাপটপ ইত্যাদি ঘুমের আগে ব্যবহার করলে মস্তিষ্ক উত্তেজিত থাকে, ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়।

 

ঘুমের ওষুধ ও এর প্রকারভেদ

যদি প্রাকৃতিকভাবে বা সাধারণ পদ্ধতিতে ঘুম না আসে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ ঘুমের ওষুধের নাম ও তাদের কার্যকারিতা উল্লেখ করা হলো—

১. বেঞ্জোডায়াজেপিন (Benzodiazepines)

  • যেমন: ডায়াজেপাম (Diazepam), লরাজেপাম (Lorazepam), ক্লোনাজেপাম (Clonazepam)
  • এটি ঘুম আনার পাশাপাশি উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
  • দীর্ঘদিন ব্যবহারে আসক্তির ঝুঁকি থাকে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।

২. নন-বেঞ্জোডায়াজেপিন (Non-Benzodiazepines)

  • যেমন: জোলপিডেম (Zolpidem), জালেপ্লোন (Zaleplon), এসজোপিক্লোন (Eszopiclone)
  • তুলনামূলক কম আসক্তিদায়ক এবং শুধুমাত্র ঘুমের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস ইত্যাদি থাকতে পারে।

৩. অ্যান্টিহিস্টামিন (Antihistamines)

  • যেমন: ডিপেনহাইড্রামিন (Diphenhydramine), ডক্সিলামিন (Doxylamine)
  • এটি সাধারণত অ্যালার্জির ওষুধ, তবে ঘুম আনতে সাহায্য করে।
  • পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, শুষ্ক মুখ ইত্যাদি থাকতে পারে।

৪. মেলাটোনিন (Melatonin) সাপ্লিমেন্ট

  • এটি শরীরের প্রাকৃতিক ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন।
  • স্বল্পমাত্রায় ব্যবহারে তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
  • দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।

৫. অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট (Antidepressants)

  • যেমন: ট্রাজোডোন (Trazodone), অ্যামিট্রিপটিলিন (Amitriptyline)
  • যারা ডিপ্রেশন বা উদ্বেগের কারণে ঘুমাতে পারেন না, তাদের জন্য কার্যকর।
  • পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে মাথা ঘোরা, ওজন বৃদ্ধি ইত্যাদি থাকতে পারে।

 

আপনার কি ডলার প্রয়োজন? যোগাযোগ করুন 01303 483365

 

ঘুমের সমস্যা সমাধানে বিকল্প পদ্ধতি

ওষুধের পরিবর্তে কিছু ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ঘুমের সমস্যা কমানো যেতে পারে, যেমন—

  • নিয়মিত ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা
  • ঘুমের আগে মোবাইল, ল্যাপটপ ও টিভি কম ব্যবহার করা
  • প্রাকৃতিক উপায়ে মানসিক চাপ কমানো (যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, ব্যায়াম ইত্যাদি)
  • চা-কফি ও অ্যালকোহল কমিয়ে দেওয়া
  • গরম দুধ বা হার্বাল চা পান করা

 

উপসংহার

ঘুমের সমস্যা হলে আগে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। যদি তাতেও কাজ না হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে উপযুক্ত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। তবে কখনই নিজে নিজে ঘুমের ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ এতে আসক্তির ঝুঁকি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক অভ্যাসের মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘুমের সমস্যা সমাধান সম্ভব।

 

সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color