কানে ঘা হলে করণীয়
কানে ঘা হলে করণীয় কি?
কানে ঘা বা কানের ভেতরে ক্ষত হলে তা বেশ ব্যথাযুক্ত ও বিরক্তিকর হতে পারে। এটি সাধারণত ইনফেকশন, আঘাত, অ্যালার্জি, বা ত্বকের সমস্যার কারণে হতে পারে। কানের সংবেদনশীলতা বেশি হওয়ার কারণে এই সমস্যাটি অবহেলা করা উচিত নয়। সঠিক যত্ন না নিলে সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে এবং জটিলতা বাড়তে পারে। তাই, কানে ঘা হলে দ্রুত ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কানে ঘা হলে কী করণীয়, তার বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কানে ঘা হওয়ার কারণ
কানে ঘা হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ হলো:
- ইনফেকশন: ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস সংক্রমণের কারণে কানে ঘা হতে পারে।
- আঘাত: খোঁচা দেওয়া, ধারালো কিছু দিয়ে কানের ভেতর খোঁচানো বা দুর্ঘটনাজনিত আঘাতের কারণে কানে ঘা হতে পারে।
- অ্যালার্জি: কিছু প্রসাধনী, কানের দুল, বা হেয়ার স্প্রে থেকে অ্যালার্জি হয়ে কানের ভেতরে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
- একজিমা বা চর্মরোগ: যাদের ত্বক সংবেদনশীল, তাদের কানে একজিমা বা অন্যান্য ত্বকের সমস্যার কারণে ঘা হতে পারে।
- ইয়ারওয়াকের (Earwax) জমাট বাঁধা: অতিরিক্ত ময়লা জমে গেলে বা শক্ত হয়ে গেলে কানে সংক্রমণ হতে পারে, যা ঘার সৃষ্টি করতে পারে।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? যোগাযোগ করুন 01303 483365
কানে ঘা হলে করণীয়
কানে ঘা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেওয়া হলো:
১. কানের ভেতরে হাত দেওয়া বা খোঁচানো বন্ধ করুন
অনেকেই কানে চুলকানি হলে হাত বা কটন বাড ব্যবহার করেন, যা আরও বেশি ক্ষতি করতে পারে। কানের ঘা হলে সেটিকে খোঁচানো বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে হাত দেওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
২. কানের ভেতর পরিষ্কার রাখুন
যদি কানে ময়লা জমে যায়, তাহলে নরম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে পারেন। তবে বেশি জোরে ঘষবেন না এবং পানি দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন, কারণ এতে ইনফেকশন ছড়াতে পারে।
৩. অ্যান্টিসেপটিক বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করুন
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিসেপটিক কানের ড্রপ বা অ্যান্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার করতে পারেন। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
৪. গরম সেঁক দিন
কানে ব্যথা হলে গরম কাপড় দিয়ে হালকা সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়। তবে খুব বেশি গরম কিছু ব্যবহার করবেন না, কারণ এতে আরও ক্ষতি হতে পারে।
৫. ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করুন
প্রচণ্ড ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন।
৬. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা জরুরি। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে।
৭. ডাক্তারের পরামর্শ নিন
যদি ঘা বেশি দিন থাকে, ব্যথা বৃদ্ধি পায় বা পুঁজ বের হয়, তাহলে দ্রুত একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
করণীয় যা এড়িয়ে চলতে হবে
- কানে নখ বা ধারালো বস্তু দিয়ে খোঁচানো যাবে না।
- নিজে নিজে কোনো ওষুধ প্রয়োগ না করে প্রথমে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- কানের ভেতরে পানি ঢোকানো এড়িয়ে চলুন, বিশেষত গোসল বা সাঁতারের সময়।
- বেশি সময় ধরে হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
শেষ কথা
কানে ঘা হলে দ্রুত যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, যাতে এটি মারাত্মক সমস্যার কারণ না হয়। ঘা হলে প্রাথমিকভাবে ঘরোয়া পরিচর্যা করা যেতে পারে, তবে যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো ব্যবস্থা নিলে কানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।