জিহ্বায় ঘা হলে করণীয় কি?
জিহ্বায় ঘা হলে করণীয় কি? জিহ্বায় ঘা হওয়া একটি সাধারণ কিন্তু কষ্টদায়ক সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হতে পারে। এটি খাওয়া, কথা বলা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। সাধারণত, ছোটখাটো জিহ্বার ঘা কয়েক দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়, তবে কিছু ঘা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বা তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এই সমস্যার কারণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন থাকলে দ্রুত আরাম পাওয়া সম্ভব।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? বিস্তারিত
জিহ্বায় ঘা হওয়ার কারণ
১. আঘাত লাগা: হঠাৎ কামড়ে ফেলা, শক্ত বা গরম খাবার খাওয়ার ফলে জিহ্বায় ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
২. ভিটামিনের অভাব: ভিটামিন বি১২, আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিডের অভাব জিহ্বায় ঘা হওয়ার একটি বড় কারণ।
3. অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা: কিছু খাবারের প্রতি সংবেদনশীলতা বা অ্যালার্জি থেকে জিহ্বায় ঘা হতে পারে।
4. অ্যাসিড রিফ্লাক্স: পাকস্থলীর অ্যাসিড মুখে উঠে এলে জিহ্বার টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
5. ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণ: হার্পিস বা অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণের ফলে মুখের ভেতরে ঘা হতে পারে।
6. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত মশলাদার ও ঝাল খাবার খাওয়া, ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে জিহ্বায় ঘা দেখা দিতে পারে।
7. অটোইমিউন ডিজিজ: কিছু রোগ যেমন বেহসেট’স ডিজিজ বা লুপাসের কারণে বারবার জিহ্বায় ঘা হতে পারে।
জিহ্বার ঘা কমানোর ঘরোয়া প্রতিকার
✅ লবণ-পানি দিয়ে কুলি করা
গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে কুলি করলে ঘা দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হয়।
✅ হলুদ ও মধুর মিশ্রণ
হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক, যা জিহ্বার ঘা নিরাময়ে কার্যকরী। এক চামচ মধুর সাথে সামান্য হলুদ মিশিয়ে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা কমে।
✅ নারকেল তেল ব্যবহার
নারকেল তেল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হওয়ায় এটি জিহ্বার ঘা নিরাময়ে সাহায্য করে। দিনে কয়েকবার এটি লাগালে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
✅ গোলাপজল বা দুধের কুলি
গোলাপজল বা ঠান্ডা দুধ দিয়ে কুলি করলে জ্বালাপোড়া কমে ও ব্যথা প্রশমিত হয়।
✅ আলু বা টমেটোর রস
আলু বা টমেটোর রস জিহ্বার ঘা নিরাময়ে কার্যকরী। দিনে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
চিকিৎসা ও ওষুধ
✔ অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ: ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
✔ পেইন রিলিভার জেল: ফার্মেসিতে পাওয়া যায় এমন ব্যথানাশক জেল জিহ্বার ঘায়ে লাগালে আরাম পাওয়া যায়।
✔ ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট: যদি ভিটামিনের অভাব থেকে ঘা হয়, তবে বি১২, আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট নেওয়া দরকার।
জিহ্বায় ঘা প্রতিরোধের উপায়
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
প্রচুর পানি পান করা
ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা
অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাদার খাবার এড়ানো
যদি জিহ্বার ঘা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা খুব বেশি ব্যথা দেয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।