সর্দির কারণে ঘা হলে করণীয়
সর্দির কারণে ঘা হলে করণীয়
সর্দি-কাশি আমাদের শরীরে সাধারণ সমস্যা হলেও কখনো কখনো এটি ত্বকে বা নাকের ভেতরে ঘা তৈরি করতে পারে। সাধারণত নাক ঘন ঘন মুছার কারণে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় শুষ্ক ত্বকের কারণে, কিংবা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে এই ঘা দেখা দেয়। এটি বেশ অস্বস্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় ও চিকিৎসা অনুসরণ করলে এই সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? যোগাযোগ করুন 01303 483365
সর্দির কারণে ঘা হওয়ার কারণ
১. নাক ঘন ঘন মুছা: সর্দি হলে আমরা বারবার নাক পরিষ্কার করি, যা নাকের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বকে চাপে সৃষ্টি করে এবং ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।
২. ভাইরাস সংক্রমণ: সাধারণ সর্দি বা ফ্লু-জনিত ভাইরাস নাকের ভেতরের ত্বককে সংক্রমিত করতে পারে, যার ফলে সেখানে ছোট ছোট ঘা হতে পারে।
3. শুষ্ক আবহাওয়া: শীতকালে বা শুষ্ক বাতাসের সংস্পর্শে নাকের ভেতরের ঝিল্লি শুকিয়ে যায়, যা ফেটে গিয়ে ঘা তৈরি করতে পারে।
4. অ্যালার্জি: ধুলাবালি, ফুলের রেণু, কিংবা কিছু খাবারের অ্যালার্জির কারণে নাক চুলকায় এবং অতিরিক্ত ঘষাঘষি করলে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
সর্দির কারণে হওয়া ঘার উপশমে করণীয়
১. গরম পানির ভাপ নেওয়া
নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিলে নাকের ভেতরের শুষ্কতা কমে এবং শ্লেষ্মা সহজে বের হয়ে আসে। এতে নাকের ভেতরের সংবেদনশীল ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ক্ষত দ্রুত ভালো হয়।
২. ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা
নাকের আশেপাশে বা ভেতরে ঘা হলে সেখানে হালকা করে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভ্যাসলিন লাগানো যেতে পারে। এটি ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করবে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে।
৩. অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং দ্রুত ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই নাকের ঘায়ে অ্যালোভেরা জেল লাগানো একটি কার্যকরী পদ্ধতি হতে পারে।
৪. অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করা
যদি ঘা বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয় বা সংক্রমণ হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিসেপটিক বা অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান করা
শরীর হাইড্রেটেড থাকলে ত্বকও আর্দ্র থাকে। ফলে নাকের ভেতরের শুষ্কতা কমে এবং ঘা দ্রুত ভালো হয়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
৬. লবণ-পানি দিয়ে কুলকুচি ও নাক পরিষ্কার করা
লবণ-পানি দিয়ে গার্গল করলে গলায় সংক্রমণ কমে এবং লবণ-পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে শুষ্কতা কমে যায়। এটি নাকের ভেতরের ঘা সারাতেও সাহায্য করে।
৭. ভিটামিন সি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা
ভিটামিন সি এবং দস্তা (Zinc) সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ক্ষত দ্রুত সারতে সাহায্য করে। তাই বেশি পরিমাণে ফল, শাকসবজি, ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
কখন ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন?
যদি নাকের ভেতরের ঘা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, রক্তপাত হয়, বা অতিরিক্ত ব্যথা অনুভূত হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এটি কোনো গুরুতর সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
উপসংহার
সর্দির কারণে হওয়া ঘা সাধারণত স্বল্প সময়ের মধ্যে ভালো হয়ে যায়, তবে যত্ন না নিলে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়, তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।