মুখে ব্রণ হলে করণীয় কি?
মুখে ব্রণ হলে করণীয় কি? ব্রণ (Acne) একটি সাধারণ ত্বকের সমস্যা, যা মূলত তৈলাক্ত ত্বক, হরমোনের পরিবর্তন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে দেখা দেয়। এটি মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে এবং আত্মবিশ্বাসেও প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সঠিক পরিচর্যা এবং কিছু ঘরোয়া ও চিকিৎসাগত উপায়ে ব্রণ দূর করা সম্ভব। আসুন জেনে নিই মুখে ব্রণ হলে কী করণীয়।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? বিস্তারিত
১. মুখ পরিষ্কার রাখা
প্রতিদিন অন্তত দুইবার মুখ ধোয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে ধুলাবালি এবং অতিরিক্ত তেল জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা ব্রণের মূল কারণ। তাই ব্রণ প্রতিরোধে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলা জরুরি—
- সালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইডযুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করা
- মেকআপ করলে শোবার আগে অবশ্যই তা ভালোভাবে পরিষ্কার করা
- গরম পানি দিয়ে নয়, বরং কুসুম গরম বা ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধোয়া
- মুখ ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে ঘষার পরিবর্তে হালকা চাপ দিয়ে পানি মুছে ফেলা
২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা
ব্রণ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা অপরিসীম। বেশি তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া, জাঙ্ক ফুড, দুধজাতীয় খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার ব্রণ বাড়াতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে—
- প্রচুর শাকসবজি এবং ফল
- পর্যাপ্ত পানি (প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস)
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার (যেমন: মাছ, বাদাম, অলিভ অয়েল)
- সবুজ চা ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
৩. ঘরোয়া প্রতিকার
ব্রণ কমাতে প্রাকৃতিক উপায় বেশ কার্যকর হতে পারে। নিচে কিছু সহজ ঘরোয়া প্রতিকার দেওয়া হলো—
- টক দই ও মধুর প্যাক: টক দই এবং মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক মসৃণ করে এবং ব্রণ কমায়।
- অ্যালোভেরা জেল: প্রতিদিন ঘুমানোর আগে মুখে অ্যালোভেরা জেল লাগালে ব্রণ দ্রুত শুকিয়ে যায়।
- লেবুর রস: লেবুর রস প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক এবং ত্বক পরিষ্কার রাখে। তবে সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সরাসরি ব্যবহার না করাই ভালো।
- হলুদ ও মধু: হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
৪. কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করা
অনেক ক্ষেত্রেই ব্রণের মূল কারণ আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস। তাই কিছু পরিবর্তন আনলে সমস্যা কমতে পারে
- বারবার মুখে হাত না দেওয়া
- ব্যবহৃত তোয়ালে, বালিশের কাভার এবং মোবাইল ফোন পরিষ্কার রাখা
- পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো
- অতিরিক্ত মেকআপ না করা এবং ত্বকের ধরন অনুযায়ী প্রসাধনী ব্যবহার করা
৫. চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
যদি ব্রণ খুব গুরুতর হয় এবং বাসায় যত্ন নিয়েও না কমে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী—
- অ্যান্টিবায়োটিক বা রেটিনয়েডযুক্ত ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে
- কেমিক্যাল পিলিং বা লেজার থেরাপি নেওয়া যেতে পারে
- হরমোনজনিত সমস্যার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে
শেষ কথা
ব্রণ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। তবে ধৈর্য ধরে সঠিক পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করলে ব্রণ দূর করা সম্ভব। ঘরোয়া উপায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে ব্রণের সমস্যা অনেকটাই কমানো যায়।