গলায় টনসিল হলে করণীয় কি?
গলায় টনসিল হলে করণীয় কি? টনসিল হলো গলার দুপাশে অবস্থিত ছোট দুটি গ্রন্থি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার (ইমিউন সিস্টেম) অংশ। এটি মূলত সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করে। তবে কখনো কখনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে টনসিল প্রদাহ বা টনসিলাইটিস হতে পারে। এটি সাধারণত শিশু ও কিশোরদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে বড়রাও এ সমস্যায় ভুগতে পারেন। টনসিল হলে গলা ব্যথা, গিলতে অসুবিধা, জ্বর, মুখে দুর্গন্ধ ও কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হতে পারে। এই সমস্যায় কী করণীয়, তা নিয়েই নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? বিস্তারিত
টনসিলের কারণ
টনসিলের প্রধান কারণ হলো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
- ভাইরাসজনিত সংক্রমণ: সাধারণ ঠান্ডা লাগা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এপস্টাইন-বার ভাইরাস (EBV) ইত্যাদির কারণে টনসিল হতে পারে।
- ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ: স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে টনসিল হতে পারে, যা স্ট্রেপ থ্রোটের কারণ হতে পারে।
গলায় টনসিল হলে করণীয়
১. বিশ্রাম নেওয়া
টনসিল হলে শরীরকে বিশ্রাম দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সংক্রমণ দ্রুত নিরাময়ে সহায়তা করে।
২. গরম পানির গার্গল করা
লবণ মিশ্রিত হালকা গরম পানি দিয়ে দিনে ৩-৪ বার গার্গল করলে গলার ব্যথা ও প্রদাহ কমে যায়। লবণ জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে এবং সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান করা
গলা শুষ্ক হয়ে গেলে ব্যথা ও অস্বস্তি আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই গরম বা কুসুম গরম পানি, গরম চা বা স্যুপ পান করা উপকারী।
৪. মধু ও আদা খাওয়া
মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা গলার ব্যথা কমায়। এক চামচ মধু এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে আরাম পাওয়া যায়। আদার রস ও মধু একসঙ্গে খেলে প্রদাহ কমে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।
৫. ঠান্ডা ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবার এড়ানো
ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, ধোঁয়া ও ধুলাবালি এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এগুলো টনসিলের প্রদাহ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৬. ওষুধ গ্রহণ
- প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন: গলা ব্যথা ও জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন সেবন করা যেতে পারে।
- অ্যান্টিবায়োটিক: যদি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হতে পারে।
৭. ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন
ধূমপান ও অ্যালকোহল গলার শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা টনসিলের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই এগুলো পরিহার করা উচিত।
কখন ডাক্তার দেখানো উচিত?
- যদি গলার ব্যথা তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়।
- উচ্চ মাত্রার জ্বর থাকলে।
- গিলতে প্রচণ্ড কষ্ট হলে।
- ঘন ঘন টনসিলের সমস্যা হলে।
সঠিক যত্ন ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে টনসিলের সমস্যা দ্রুত ভালো হয়ে যায়। তবে অবস্থার অবনতি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।