চোখ কেন ট্যারা হয় - Why do eyes get watery?
চোখ কেন ট্যারা হয় :ট্যারা চোখ (Strabismus) হলো এক ধরনের চোখের সমস্যা যেখানে দুটি চোখ একই দিকে না তাকিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দিকে তাকায়। এটি শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা গেলেও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও হতে পারে। ট্যারা চোখের কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলে এই সমস্যাটি বুঝতে এবং প্রতিকার করতে সুবিধা হয়।
চোখ ট্যারা হওয়ার কারণ
জন্মগত বা জেনেটিক কারণ
অনেক শিশুর জন্ম থেকেই চোখ ট্যারা হতে পারে। এটি সাধারণত জিনগতভাবে পরিবারের মধ্যে থেকে যায়। যদি পরিবারের কারও এই সমস্যা থাকে, তাহলে শিশুরও হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
স্নায়বিক সমস্যা
আমাদের চোখের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে কিছু নির্দিষ্ট স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের অংশ। যদি কোনো কারণে এই স্নায়ু বা মস্তিষ্কের অংশ ঠিকমতো কাজ না করে, তাহলে চোখ ট্যারা হয়ে যেতে পারে।
চোখের পেশির দুর্বলতা
চোখের চারপাশে ছয়টি পেশি থাকে, যা চোখের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে। যদি কোনো পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে বা সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে চোখের অবস্থান সঠিক না থাকায় ট্যারা দেখা দিতে পারে।
প্রিম্যাচিওর জন্ম বা কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশু
যেসব শিশু অপরিপক্ক অবস্থায় (Premature) জন্ম নেয়, তাদের মধ্যে চোখের সমস্যার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ তাদের স্নায়ুগুলো পুরোপুরি বিকশিত হয় না।
মস্তিষ্কে আঘাত বা স্ট্রোক
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, মাথায় আঘাত বা স্ট্রোকের ফলে চোখের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে ট্যারা হয়ে যেতে পারে।
অপটিক নার্ভ বা রেটিনার সমস্যা
চোখের রেটিনা বা অপটিক নার্ভের বিকাশজনিত ত্রুটি থাকলে চোখের দৃষ্টি সঠিকভাবে কেন্দ্রীভূত হয় না, যার ফলে চোখ ট্যারা হতে পারে।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? যোগাযোগ করুন 01303 483365
লক্ষণ ও চিহ্ন
- এক বা উভয় চোখ ভিন্ন ভিন্ন দিকে তাকায়।
- সূক্ষ্ম বস্তুতে তাকানোর সময় সমস্যা হয়।
- গভীরতা উপলব্ধি (Depth Perception) কমে যায়।
- দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনা বা স্ক্রিন দেখলে চোখ ব্যথা হয়।
- শিশুদের ক্ষেত্রে এক চোখ বন্ধ রেখে দেখা বা মাথা ঘুরিয়ে দেখার প্রবণতা দেখা যায়।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
চশমা ব্যবহার
কিছু ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট পাওয়ারের চশমা পরলে ট্যারা চোখের সমস্যা কমে যায়।
চোখের ব্যায়াম
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের নির্দিষ্ট ব্যায়াম করলে চোখের পেশি শক্তিশালী হয় এবং ট্যারা সমস্যার উন্নতি হতে পারে।
প্রিজম লেন্স
কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ ধরনের প্রিজম লেন্স ব্যবহার করে চোখের দৃষ্টি সোজা করা সম্ভব হয়।
বোটক্স থেরাপি
চোখের পেশির ভারসাম্য ঠিক রাখতে বোটক্স ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষ করে সাময়িক সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে কার্যকর।
সার্জারি
যখন অন্য কোনো চিকিৎসা কার্যকর হয় না, তখন অস্ত্রোপচার (Strabismus Surgery) করে চোখের পেশির ভারসাম্য ঠিক করা হয়।
চোখ ট্যারা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ অল্প বয়সেই চিকিৎসা নিলে এটি সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব।