Narrow selection

রোজা অবস্থায় রক্তের স্যালাইন নিলে কি রোজা ভঙ্গ হবে?


রোজা অবস্থায় রক্তের স্যালাইন নিলে কি রোজা ভঙ্গ হবে?

 

রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধুমাত্র উপবাস থাকার নাম নয়, বরং আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তবে রোজা অবস্থায় কী কী করলে রোজা ভঙ্গ হবে এবং কী করলে হবে না, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকতে পারে। বিশেষ করে চিকিৎসার কারণে যদি কোনো ব্যক্তি রক্তের স্যালাইন নেন, তাহলে তার রোজার কী হবে—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

 

সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি

 

রোজার মৌলিক বিধান
ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী, রোজার মূল শর্ত হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা। এছাড়াও, শরীরের স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ করার জন্য যদি কোনো উপাদান গ্রহণ করা হয়, যা পুষ্টি জোগায় বা শক্তি দেয়, তাহলে তা রোজা ভঙ্গের কারণ হতে পারে।

 

রক্তের স্যালাইন কী?
রক্তের স্যালাইন হলো এক ধরনের তরল দ্রবণ, যা শিরায় (IV) প্রবেশ করানো হয়। এটি সাধারণত সল্ট ওয়াটার (লবণ পানি) এবং কিছু অন্যান্য উপাদানে তৈরি হয়, যা দেহের পানিশূন্যতা পূরণ করতে সাহায্য করে। অনেক সময় এতে গ্লুকোজ বা অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানও মিশ্রিত থাকে। এটি মূলত চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে যখন রোগীর শরীর পানিশূন্য হয়ে যায় বা কোনো কারণে রক্তচাপ কমে যায়।

 

রোজা অবস্থায় স্যালাইন নেওয়ার বিধান
রোজা অবস্থায় কোনো কিছু গ্রহণ করলে তা যদি খাদ্য বা পানীয়ের বিকল্প হয় এবং শরীরে শক্তি বা পুষ্টি জোগায়, তাহলে তা রোজা ভঙ্গ করে। ইমাম ইবনে তায়মিয়া (রহ.) এবং আধুনিক যুগের অনেক ইসলামিক স্কলারদের মতে, রক্তের স্যালাইনের মধ্যে যদি গ্লুকোজ বা পুষ্টিকর উপাদান থাকে, তাহলে তা খাবারের বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং রোজা ভঙ্গ করবে। তবে শুধুমাত্র সাধারণ স্যালাইন (যেখানে পুষ্টিকর কোনো উপাদান নেই) গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হবে না বলে অনেক ফকিহ মত প্রকাশ করেছেন।

 

উলামাদের ভিন্নমত
বিভিন্ন মাজহাবের আলেমদের মধ্যে এই বিষয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে।
১. যারা বলেন যে স্যালাইন রোজা ভঙ্গ করবে:

যদি স্যালাইনের মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহ করা হয়, তাহলে এটি রোজা ভঙ্গ করবে।
কারণ এটি খাবারের বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং শরীরে শক্তি প্রদান করে।
২. যারা বলেন যে স্যালাইন রোজা ভঙ্গ করবে না:

যদি স্যালাইনের মধ্যে কোনো পুষ্টি না থাকে এবং এটি শুধুমাত্র পানিশূন্যতা পূরণের জন্য দেওয়া হয়, তাহলে এটি রোজা ভঙ্গ করবে না। কারণ এটি সরাসরি খাবার বা পানীয় হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে না।


সর্বোত্তম সমাধান
যেহেতু এই বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে, তাই উত্তম হলো—যদি কারো শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে স্যালাইন নেওয়া জরুরি হয়, তাহলে তিনি স্যালাইন নিতে পারেন এবং পরবর্তীতে সেই রোজার কাযা করে নিতে পারেন। যদি স্যালাইনে পুষ্টি উপাদান থাকে, তাহলে রোজা ভঙ্গ হবে নিশ্চিতভাবেই। তাই নিশ্চিত হতে হলে অভিজ্ঞ আলেম বা মুফতির পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

 

উপসংহার
রোজা অবস্থায় রক্তের স্যালাইন নেওয়া রোজা ভঙ্গ করবে কি না, তা নির্ভর করে স্যালাইনের উপাদানের ওপর। যদি এতে পুষ্টি বা শক্তি সরবরাহকারী উপাদান থাকে, তাহলে এটি রোজা ভঙ্গ করবে। তবে শুধুমাত্র সাধারণ স্যালাইন হলে, অনেক আলেমের মতে, এটি রোজা ভঙ্গ করবে না। তবে সন্দেহ থাকলে সর্বোত্তম উপায় হলো স্যালাইন গ্রহণ না করা এবং যদি গ্রহণ করা হয়, তাহলে পরে রোজার কাযা করে নেওয়া।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color