সর্দি লেগে মাথা ব্যথা করলে করনীয় কি
সর্দি লেগে মাথা ব্যথা করলে করণীয় কি?
সর্দি-কাশি হলে অনেক সময় মাথা ব্যথাও হয়। এটি সাধারণত ঠান্ডা লাগা, সংক্রমণ, সাইনাসের সমস্যা বা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে হতে পারে। মাথা ব্যথা ও সর্দি একসঙ্গে হলে এটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। তবে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার ও ওষুধের মাধ্যমে এটি সহজেই উপশম করা যায়।
আপনার কি ডলার প্রয়োজন? বিস্তারিত
সর্দি ও মাথা ব্যথার কারণ
সর্দি-কাশির কারণে মাথা ব্যথা হওয়ার কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে—
- সাইনাসের সংক্রমণ: নাক বন্ধ হয়ে গেলে বা সাইনাসে সংক্রমণ হলে মাথা ভারী লাগে এবং ব্যথা অনুভূত হয়।
- জ্বর বা ভাইরাস সংক্রমণ: ফ্লু বা সাধারণ ঠান্ডা লাগলে শরীরে ইনফেকশন হয়, যা মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
- ডিহাইড্রেশন: শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকলে মাথা ব্যথা হতে পারে।
- চাপ ও ক্লান্তি: সর্দি থাকলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ক্লান্তির কারণে মাথা ব্যথা অনুভূত হয়।
- অতিরিক্ত কফ জমে যাওয়া: সর্দির কারণে নাকে ও গলায় কফ জমলে তা মাথার ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং ব্যথা বাড়িয়ে দেয়।
সর্দি ও মাথা ব্যথা কমানোর উপায়
মাথা ব্যথা ও সর্দির সমস্যা কমানোর জন্য কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় এবং চিকিৎসা গ্রহণ করা যেতে পারে—
১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
সর্দি-কাশি ও মাথা ব্যথা হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ভালোভাবে ঘুমানো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সহায়ক।
২. গরম পানীয় পান করুন
গরম পানি, চা, আদা চা বা লেবু মিশ্রিত গরম পানি পান করলে সর্দি দ্রুত সেরে যায় এবং মাথা ব্যথা উপশম হয়। বিশেষ করে মধু ও আদা মিশ্রিত চা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী।
৩. গরম পানির ভাপ নিন
গরম পানির ভাপ নেওয়া সাইনাস পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং নাক বন্ধ থাকলে তা খুলে দেয়। এটি মাথা ব্যথা কমাতেও সহায়ক।
৪. পানি ও তরল খাবার বেশি খান
ডিহাইড্রেশন হলে মাথা ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি, স্যুপ, ডাবের পানি ইত্যাদি পান করা উচিত।
৫. নরমাল স্যালাইন নাকের জন্য ব্যবহার করুন
নাক বন্ধ থাকলে স্যালাইন স্প্রে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। এটি নাক পরিষ্কার করে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করে তোলে।
৬. ওষুধ সেবন করুন (প্রয়োজনে)
প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত নয়।
৭. ব্যায়াম ও হালকা স্ট্রেচিং করুন
হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মাথা ব্যথা উপশম হয়।
৮. ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করুন
- গরম লবণ পানি দিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা ও সর্দি কমে যায়।
- লবঙ্গ ও মধুর মিশ্রণ কাশি ও সর্দি কমায়।
- তুলসি পাতা ও মধু একসঙ্গে খেলে ঠান্ডা দূর হয়।
কখন ডাক্তার দেখানো উচিত?
সাধারণত সর্দি ও মাথা ব্যথা কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে নিম্নলিখিত পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি—
- যদি ৭-১০ দিন পরেও সর্দি ও মাথা ব্যথা না কমে।
- প্রচণ্ড জ্বর থাকে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
- মাথা ব্যথা খুব বেশি হয় এবং ওষুধেও কমে না।
- কানে ব্যথা বা চোখের চারপাশে ব্যথা অনুভূত হয়।
উপসংহার
সর্দি ও মাথা ব্যথা হলে আতঙ্কিত না হয়ে প্রাকৃতিক প্রতিকার ও বিশ্রাম নেওয়া উচিত। পর্যাপ্ত তরল পান করা, গরম পানির ভাপ নেওয়া ও বিশ্রাম করলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।