Narrow selection

মানুষের কুদৃষ্টি সম্পর্কে ইসলামিক মন্তব্য কি?


মানুষের কুদৃষ্টি সম্পর্কে ইসলামিক মন্তব্য : ইসলামে কুদৃষ্টি বা বদনজরকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে কুদৃষ্টির প্রভাব ও তা থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম বিশ্বাস করে যে, মানুষের ঈর্ষা, বিদ্বেষ ও নেতিবাচক মনোভাবের ফলে কুদৃষ্টি বা বদনজরের সৃষ্টি হতে পারে, যা কারো উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

 

আপনার কি ডলার প্রয়োজন? যোগাযোগ করুন 01303 483365

 

কুদৃষ্টির বাস্তবতা ও ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

অনেকেই কুদৃষ্টিকে কুসংস্কার বলে মনে করেন, কিন্তু ইসলাম এটিকে বাস্তব একটি বিষয় হিসেবে স্বীকার করেছে। মহান আল্লাহ বলেন:

“আর নিশ্চয়ই যারা কুফর করেছে, তারা যখন তোমাকে দেখে, তখন তারা তোমাকে তাদের দৃষ্টিতে ফেলে দেওয়ার উপক্রম করে এবং বলে, ‘সে তো এক পাগল।’” (সূরা আল-কালাম: ৫১)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, মানুষের দৃষ্টি দ্বারা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কুদৃষ্টির সত্যতা সম্পর্কে বলেন:

“বদনজর সত্য; যদি কিছুই তাকদিরের (নিয়তির) আগে ঘটতে পারত, তবে বদনজরই ঘটাত।” (মুসলিম: ২১৮৮)

এই হাদিস স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, বদনজর একটি বাস্তব ঘটনা এবং এটি মানুষের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

 

কুদৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব

ইসলামে কুদৃষ্টিকে মানুষের জন্য একটি অদৃশ্য বিপদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি বিভিন্নভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন:

  1. শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি: কুদৃষ্টির ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, দুর্বলতা অনুভব করতে পারে এবং অস্থিরতায় ভুগতে পারে।
  2. আর্থিক ও পারিবারিক সমস্যা: অনেক সময় দেখা যায়, কারো সফলতা, সম্পদ বা সুখের প্রতি অন্যের ঈর্ষাপূর্ণ দৃষ্টির কারণে তার জীবনে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  3. সম্পর্কের অবনতি: কুদৃষ্টির কারণে মানুষ একে অপরের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে পড়ে এবং পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়।

 

কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার উপায়

ইসলাম আমাদের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য কিছু দোয়া, আমল এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে।

  1. আল্লাহর উপর ভরসা রাখা: সব ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সর্বপ্রথম আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখা জরুরি।
  2. কুরআনি দোয়া ও রুকইয়াহ: কুদৃষ্টি থেকে বাঁচতে রাসুল (সা.) কিছু বিশেষ দোয়া পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যেমন:
    • সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস পড়া।
    • আয়াতুল কুরসি পড়া।
    • اللهم بارك (আল্লাহুম্মা বারিক) বলা, যখন কারো ভালো কিছু দেখা হয়।
  3. অন্যের প্রতি শুভ কামনা করা: যখন কারো ভালো কিছু দেখি, তখন আল্লাহর কাছে তার জন্য বরকতের দোয়া করা উচিত, যাতে কুদৃষ্টি না লাগে।
  4. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ও নিয়মিত ইবাদত করা: নিয়মিত অজু করা, নামাজ আদায় করা এবং আল্লাহর জিকির করা কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি উপায়।
  5. হাসাদ বা ঈর্ষা পরিহার করা: অন্যের ভালো দেখে ঈর্ষান্বিত না হয়ে, বরং তার জন্য দোয়া করা উচিত।

 

উপসংহার

ইসলামে কুদৃষ্টিকে একটি বাস্তব সত্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং এর থেকে বাঁচার জন্য কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মানুষের উচিত নিজেদের ও অন্যদের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য ইসলামি আমল করা এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুদৃষ্টি ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন, আমিন।

 

সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল

 

No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color