Narrow selection

তাজিমি সেজদা কাকে বলে?


04:19:01 06/16/2024

তাজেমী সিজদার দলিল ও তার খন্ডন

 যে সকল মুসলমান নামধারী পীরকে সিজদা করে এবং যে সকল ভন্ডপীর মুরিদদের থেকে সিজদা গ্রহণ করে তাদের দলিল হল-

 

১)   হযরত আদম (আ:) কে ফেরেশতাগণ সিজদা করেছিলেন। এই জন্যে পীর একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাকে সিজদা করা বৈধ। (নাউযুবিল্লাহ্)

 

২)   হযরত ইউসুফ (আ:) কে তার ভাইরা সিজদা করেছিল এই জন্য মানুষ হয়ে মানুষকে তাজেমী সিজদা বৈধ। বিধায় পীরকে সিজদা করা জায়েজ। নাউযুবিল্লাহ্

 

১ নং খন্ডন : ১ম দলিলের দ্বারা পীরকে সিজদা করার বৈধতা প্রমাণ করা গাধামী ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ ফেরেস্তা কর্তৃক আদম (আ:) কে সিজদা করা এটা ছিল আল্লাহ্ পাকের পক্ষ হতে ফেরেস্তাদের প্রতি সরাসরি নির্দেশ। যা কোন মানুষকে অন্য কোন মানুষের জন্য আল্লাহ্ পাক হুকুম করে নাই। কোন নবী-রাসূলগণের জন্য তার উম্মতের পক্ষ থেকে সেজদার হুকুম নাযিল হয় নাই।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন

তাফসীরকারকগণ আদম (আ:) কে সিজদার ব্যাপারে বহু ব্যাখ্যা দিয়েছেন- যেমন-

১) জালালাইন শরীফে উল্লেখ আছে ফেরেস্তাগণ আল্লাহ্র হুকুমে মাথা ঝুকিয়ে আদম (আ:) কে সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন।

২)   কাবা শরীফকে যেমন কেবলা বানিয়ে আল্লাহ্ পাক সকল মানব জাতিকে সে দিকে ইবাদতের জন্য হুকুম করেছেন তেমনি ভাবে হযরত আদম (আ:) কে আসমানি জগতে কেবলা বানিয়ে তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য ফেরেস্তাদের সেজদা করার হুকুম করেছিলেন। সুতরাং প্রকৃত পক্ষে ফেরেস্তাদের সিজদা ছিল আদম (আ:) এর দিকে আল্লাহ্ পাকের জন্যে। যেমন আমরা নামায পড়ি কেবলার দিকে। কিন্তু নামাজের সকল ক্রিয়া কলাপ তথা দাঁড়ান, রুকু, সিজদা ও তাছবীহ তাহলিল সব কিছুই আল্লাহর জন্য।

 

তেমনি ভাবে আদম (আ:) কে সৃষ্টি করার পর আল্লাহ্ পাক তাকে সকল ফেরেস্তা ও সৃষ্টির সেরা হিসাবে প্রমাণ করার জন্য তাকে কেবলা বানিয়ে ফেরেস্তাদেরকে নিজের জন্য সিজদা করার হুকুম করেছিলেন, যা ছিল ফেরেস্তাগণ ও ইবলিস শয়তানের জন্য মহা পরীক্ষা। উক্ত পরীক্ষায় ফেরেস্তাগণ গোল্ডেন প্লাস পেয়ে পাশ করেছিলেন এবং ইবলিস শয়তান অপমানিত ভাবে ফেল করেছিল।

 

৩।    ফেরেস্তাগণ কর্তৃক আদম (আ:) কে সিজদা করা এটাছিল আসমানি জগতের আমল। সুতরাং আসমানি জগতের আমল দ্বারা দুনিয়ার জগতের মানুষ হয়ে মানুষকে সিজদা করার দলিল পেশ করা কোন ভাবেই সঠিক হতে পারে না।

 

৪।    ফেরেস্তাগণ শরীয়তের মুকাল্লাফ তথা শরীয়তের অনুসারী ছিলেন না। এমন কি আসমানি জগতে ঐ সময় শরীয়তের অস্তিত্ব ছিল না। অতএব শরীয়তহীন ফেরেস্তাদের আমল শরীয়তের অনুসারী মানুষের জন্য দলিল হতে পারে না।

 

৫।    ফেরেস্তাগণ নূরের তৈরী। মানুষ মাটির তৈরী। বিধায় ফেরেস্তাদের কোন আমল মাটির তৈরী মানুষের জন্য দলিল হতে পারে না।

 

২ নং দলিলের খন্ডন :  পীর সেজদা জায়েজ বা বৈধতার জন্য হযরত ইউসুফ (আ:) এর ঘটনা দলিল হিসাবে পেশ করা মোটেও ঠিকা নয়। কেননা হযরত ইউসুফ (আ:) এর শরীয়তে সালামের পরিবর্তে সেজদা করে সম্মান প্রদর্শন করা বৈধ ছিল যা শরীয়তে মুহাম্মদী (সা:) এর বিধান হতে সম্পূর্ণ নিষেধ এবং হারাম সাব্যস্ত হয়েছে।

 

পূর্বের নবীগণের উম্মতের অবস্থার উপর ব্যবস্থা পত্র নাজিল হয়েছিল। যেমন- বনী ইস্রাইলের জন্য নিসাবের হাজার ভাগের এক ভাগ যাকাত ফরজ ছিল, অথচ উম্মতি মুহাম্মদী (সা:) এর শরীয়তে ৪০ ভাগের এক ভাগ ফরজ করা হয়েছে। হযরত আদম (আ:)-এর সন্তানদের মধ্যে পরস্পর ভাই-বোনের মধ্যে বিবাহ বৈধ ছিল। যাহা উম্মতে মুহাম্মদী (সা:) এর শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম করা হয়েছে। তদরূপ হযরত ইউসুফ (আ:) এর যুগে তার উম্মতের জন্য সেজদায়ে তাজেমী তথা সালামের পরিবর্তে সিজদা করা জায়েজ ছিল। যাহা উম্মতে মুহাম্মদীর শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম ও শিরকে জলি সাব্যস্ত করা হয়েছে।

 

সিজদায়ে তাজেমীর পরিবর্তে সালামকে তাজিম ও সম্মানের স্থানে রাখা হয়েছে। সালামের নিয়ম ও প্রথা কিয়ামত পর্যন্ত চালু থাকবে এবং মানুষ হয়ে মানুষকে সিজদা করা তথা পীরকে সিজদা করা, মাজার বা কবরকে সিজদা করা, কোন বৃক্ষকে সিজদা করা, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র, মূর্তি মোট কথা আল্লাহ্ পাক ব্যতিত অন্য কারো বা অন্য কিছুকে সিজদা করা কিয়ামত পর্যন্ত রহিত এবং প্রকাশ্য শিরক ফিল ইবাদত হিসাবে গণ্য থাকবে। যারা এ ধরনের শিরক করবে তারা মুশরিক হিসাবে গণ্য হয়ে ক্ষমার অযোগ্য হিসাবে সাব্যস্ত হবে।

 

কোন পীরকে মুশকীল কুশা, গায়েবের খবর রাখে, হাজির নাজির মনে করা, দূরের খানকা থেকে মুরীদের সকল খবর রাখে মনে করা, মৃত্যুর পর কবরে মুনকার নকিরের প্রশ্নের উত্তর পীর সাহেব দিয়ে দিবেন মনে করা, হাশরের ময়দানে পীর সাহেব পার করবে বিশ্বাস করা, পীর সাহেবের ওজু গোসলে ব্যবহৃত পানির পবিত্র মনে করা, পীরের বাড়ীর দিকে মূখ করে  মোনাজাত করা, পীরের সামনে জোড় হাত করে দাঁড়িয়ে থাকা, জোড় হাত করে পিছপা হওয়া, পীরের নজরেই মুিক্তর আশা করা, পীরকে রুহানী পিতা মনে করে পর্দা ছাড়া দেখা সাক্ষাত ও কথা বার্তা বলা

 

এবং তার মন খুশির জন্য নিজেকে হাওয়ালা করা, নিজের পিতা-মাতা থেকে পীরকে বেশী ভক্তি করা ও হাদিয়া দেওয়া, জীবিত পীরের যে কোন প্রকার সিজদা, মৃত্যু পীরের কবরকে যে কোন প্রকার সিজদা, পীরের ব্যবহৃত চেয়ার, জুব্বা, লেবাস, আসন, খাট-পালঙ্গ ইত্যাদিকে সিজদা করা, পীরের কবরকে মাজারে পরিণত করা, কবরের উপর চাঁদর বা গেলাফ দেওয়া, ফুল দেওয়া, ওরশ করা, মাজারকে গোসল দেওয়া, মাজারে মান্নত করা, পীরের নামে কসম করা, মান্নত করা ইত্যাদি সব কিছুই শিরক হিসাবে গণ্য। যা থেকে মুসলমানদেরকে দূরে থাকা খুবই প্রয়োজন।

 

কুফর ও শিরকের মধ্যে পার্থক্য

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কর্তৃক আনিত দ্বীনের কোন বিষয় অস্বীকার করাকে কুফর বলে। আর আল্লাহ্ পাকের সত্তা, গুণাবলী অথবা তার কার্যাবলীর সাথে কাউকে অংশীদার স্থাপন করাকে শিরক বলে। কুফর ও শিরক দুইটাই মারাত্বক গুনাহ্ এবং অমার্জনীয়। আততাওবা, আয়াত- ২৮

 

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color