Narrow selection

মহানবী সা. এর চরিত্রাবলী


মহানবী সা. এর চরিত্রাবলী, গুণাবলী ও মুজেযাসমূহ

 

চরিত্র মাধুরী

 

তিনি সবচেয়ে বেশী বীরবাহাদুর ও দানবীর ছিলেন। যখন কেউ মহানবী সা.এর কাছে কিছু চাইত তখন তিনি তৎক্ষণাৎ তাকে দিয়ে দিতেন। সবচেয়ে বেশী ধৈর্যশীল ও সহনশীল ছিলেন। এমনকি সাহাবায়ে কিরাম এক সম্প্রদায় সম্পর্কে মহানবী সা.এর কাছে আবেদন করলেন যে, তাদের জন্য বদ দু'আ করেন। মহানবী সা. বললেন,আমি রহমত হয়ে এসেছি, শাস্তি হয়ে আসিনি। তাঁর দাঁত মুবারক শহীদ করা হয়েছিল; কিন্তু তিনি সে সময়ও তাদের জন্য ক্ষমারই দু'আ করেছেন।

 

তিনি সর্বাধিক লজ্জাশীল ছিলেন। তার দৃষ্টি কারো চেহারার উপর নিবদ্ধ হত না। নিজস্ব কোন বিষয়ে কারো থেকে প্রতিশোধ নিতেন না। তিনি রাগান্বিত হতেন না। হ্যাঁ, যখন আল্লাহ তায়ালার কোন বিধানের বিরূদ্ধাচারণ করা হত তখন রাগ করতেন। যখন তিনি রাগ করতেন কেউ তাঁর সম্মুখে স্থির থাকতে পারত না। যখন দু'টি কাজের মধ্যে ইখতিয়ার দেয়া হত তখন তিনি তার মধ্যে সহজটা গ্রহণ করতেন। (যাতে উম্মতের জন্য সহজ হয়) তিনি কখনো কোন খাদ্যের দোষ ধরতেন না। তবে পছন্দ হলে খেয়ে নিতেন,অন্যথায় বিরত থাকতেন। তিনি কোন সময় টেক লাগিয়ে আহার করতেন না। কোন সময় চেয়ার-টেবিলে বসে আহার করতেন না। তাঁর জন্য পাতলা রূটি তৈরী করা হত না। খেজুরের সাথে শসা ও তরমুজ মিলিয়ে আহার করতেন। স্বভাবগতভাবে মধু ও সমস্ত মিষ্টি দ্রব্য পছন্দ করতেন।

 

সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি

 

হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, হযরত রাসূলে কারীম সা. এ অবস্থায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন যে, তিনি এবং তাঁর পরিবারবর্গ যবের রুটিও কখনো পেট পুরে আহার করেননি। রাসূলে কারীম সা.এর পরিবারে কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হত যে, দু' দু'মাস যাবত তাঁদের চুলায় আগুন জ্বলত না। শুধু শুকনা খেজুর ও পানি দ্বারা জীবন যাপন করতেন।

মহানবী সা. নিজেই স্বীয় জুতা মুবারক সেলাই করতেন এবং কাপড়ে তালি লাগাতেন। নিজের পরিবারের গৃহস্থালি কাজে অংশ নিতেন । রোগীদের সেবা-


 

শুশ্রুষা করতেন। যখন কেউ দাওয়াত দিত চাই সে ধনী হোক বা গরীব তার বাড়িতে যেতেন। কোন দরিদ্রকে তার দরিদ্রতার কারণে তুচ্ছ করতেন না। আবার কোন বড় থেকে বড় বাদশাহ দ্বারা তার রাজত্বের কারণে প্রভাবান্বিত হতেন না।

স্বীয় বাহনের পেছনে নিজ গোলাম ও অন্যান্যকে আরোহণ করাতেন। মোটা কাপড় পরিধান করতেন। সেলাইকৃত জুতা পরিধান করতেন। সাদা পোশাক তাঁর কাছে অতিপ্রিয় ছিল।

রাসূলে কারীম সা. অধিক পরিমাণে আল্লাহর যিকির করতেন। অনর্থক কথা হতে দূরে থাকতেন। নামায দীর্ঘ ও খুতবা সংক্ষিপ্ত করতেন। গোলাম ও গরীব লোকদের সাথে চলা-ফেরা করা থেকে বিরত থাকতেন না। সুঘ্রাণ পছন্দ করতেন এবং দুর্গন্ধ অপছন্দ করতেন।

 

জ্ঞানী-গুণীদের সমাদর করতেন। কারো সাথে মুখ কালো করতেন না। বৈধ খেলা-ধুলা দেখতেও নিষেধ করতেন। কখনো হাসি-মজাক ও বিনোদনমূলক কথা বলতেন। তবে সে সময়ও বাস্তবের বিপরীত কোন কথা বলতেন না।

তিনি ছিলেন সকল মানবজাতি থেকে সর্বাধিক প্রফুল্ল স্বভাবের ও উন্নত চরিত্রের। ওজরকারীর ওজর কবুল করতেন।

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. বর্ণনা করেন, পবিত্র কুরআনই ছিল আল্লাহর রাসূলে চরিত্র। অর্থাৎ, কুরআনে কারীম যা পছন্দ করত আল্লাহর নবীও তা পছন্দ করতেন। আর কুরআনে কারীম যা পছন্দ করে না আল্লাহর নবীও তা পছন্দ করতেন না। হযরত আনাস রা. বলেন,আমি আল্লাহর রাসূলের সুঘ্রাণের ন্যায় উত্তম কোন ঘ্রাণ গ্রহণ করিনি।

 

মোজেযা

 

দুনিয়ার রাজা বাদশাহগণ যখন কাউকে কোন প্রদেশের শাসক বা গর্ভনর নিযুক্ত করে পাঠান তখন তার সাথে এমন কিছু নিদর্শনাবলী প্রেরণ করা হয় যা দেখে জনগণের তার গর্ভনর বা শাসক হওয়ার বিশ্বাস হয়ে যায়। যেমন- অনুচর, চাকর-বাকর, সৈন্য-সামন্ত এবং এমন কিছু ক্ষমতা, যা সাধারণ জনগণ প্রয়োগ করতে পারে না। ঠিক তেমনিভাবে মহান আল্লাহ যখন পৃথিবীর বুকে কোন রাসূল প্রেরণ করেন তখন তাঁদের সঙ্গে সততা, বিশ্বস্ততা, চরিত্র মাধুর্যতা এবং অন্যান্য সব মানবিক গুণাবলী ছাড়াও এমন কিছু অলৌকিক শক্তি প্রদান করেন, যার সামনে শত্রুদের মাথা নত হয়ে যায়। এসব অলৌকিক শক্তি ও প্রকৃতির ঊর্ধ্বের ক্ষমতাকে মু'জেযা বলে ।

 

আমাদের রাসূলে কারীম সা. এর মু'জিযা সংখ্যা ও গুণগত মানের দিক দিয়ে পূর্বের সমস্ত নবী-রাসূলগণ থেকে অধিক ও শ্রেষ্ঠতর। পূর্বের নবী-

 

রাসূলগণের মু'জিযা তাদের সত্তা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। আর মহানবী সা. এর মু'জিযা আল- কুরআন, যা অদ্যাবধি সকল মুসলমানের হাতে হাতে। যার মোকাবেলায় বিশ্বের সব শক্তি এবং মানব-দানব সবাই ব্যর্থ। এ ছাড়া চাঁদ দ্বি-খণ্ডিত হওয়া, আঙ্গুল মুবারক হতে পানি প্রবাহিত হওয়া, প্রস্তর কণার তাসবীহ পাঠ, খর্জুর বৃক্ষের ক্রন্দন, তাঁকে লক্ষ্য করে বৃক্ষের সালাম প্রদান, বৃক্ষকে ডাকা এবং রাসূলে কারীম সা. এর ডাকে বৃক্ষের আগমন, অজস্র ভবিষ্যৎ বাণী সূর্যের ন্যায় স্পষ্টকারে প্রতিফলিত হওয়া ইত্যাদি হাজারো মু'জিযা রয়েছে।

 

সে সব শুধু কুরআনের আয়াত ও সহীহ হাদীসই নয়; বরং বহু কাফের থেকেও সে সবের স্বীকারোক্তি প্রমাণিত রয়েছে। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আলেমগণ সে সবকে বিভিন্ন গ্রন্থে সন্নিবেশিত করেছেন। আল্লামা সূতী র. রচিত খাসায়েসে কুবরা ও পরবর্তী আলেমদের মধ্য হতে উর্দূ ভাষায় লিখিত আল কালামুল মুবিন” এ বিষয়ের উপরই লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অত্র সংক্ষিপ্ত কিতাবে এর বিস্ত ারিত বর্ণনা সম্ভব নয়। বিধায় এ ব্যাপারে এতটুকুর উপর ক্ষান্ত করছি।

والحَمدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ مَولاىَ صَلِّ وَسَلَّمَ دَانِمَا اَبَداً عَلَى حَبِيكَ خَيْرِ الْخَلْقِ كُلِهِم -

পরিশেষে উপদেশ স্বরূপ মহানবী সা. এর কিছু সংখ্যক হাদীস সংযোজন করা সমীচীন মনে করছি। “ জামিউল কালিম ” নামে এর ভিন্ন একটি নামকরণ করা হল।

وَاخِرُ دَعْوَانَا إِنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ -

 

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color


We use cookies for better user experience