Narrow selection

খন্দকের যুদ্ধের ইতিহাস


খন্দকের যুদ্ধের ইতিহাস

 

কুরাইশ ও ইয়াহুদীদের ঐক্যবদ্ধ চক্রান্ত ও খন্দক যুদ্ধঃ

কুরাইশ ও ইয়াহুদীদের ঐক্যমত: যখন নবী কারীম সা. মদীনায় তাশরীফ আনেন তখন তিনি এখানকার ইয়াহুদীদের সাথে সন্ধি চুক্তি করলেন। নবী কারীম সা. সর্বদা তা পালন করতে থাকেন। কিন্তু যেহেতু ইয়াহুদীদেরকে মদীনা তায়্যিবার নেতা এবং মাতব্বর মানা হত, মহানবী সা. এর আগমনের পর ইসলামের শক্তি দৈনন্দিন বৃদ্ধি হতে দেখে তাদের অত্যাধিক রাগ হত। এজন্য তারা মহানবী সা. ও মুসলমানদেরকে কষ্ট দেওয়ার পিছনে লেগে থাকত। 

 

সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি

 

বদর যুদ্ধে যখন মুসলমানদের বিস্ময়কর বিজয় হল, তখন তাদের বিদ্বেষ আর ক্রোধের কোন সীমা থাকল না। অবশেষে তারা প্রকাশ্যে অঙ্গীকার ভঙ্গ করা শুরু করল। সুতরাং, ২য় হিজরীতে তাদের গোত্র বনী কাইনুকা যুদ্ধের ঘোষণা করল । অতঃরপ বনী নযীর বিদ্রোহ করল । এটা দেখে মহানবী সা. যুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেন। মোকবেলা হলে তারা সকলেই দুর্গে আবদ্ধ হল। কিছু দিন এভাবেই অবরূদ্ধ থাকার পর দেশান্তরিত হয়ে বনু কাইনুকা সিরিয়া এবং বনী নযীর খাইবার ইত্যাদি এলাকায় চলে গেল। 

 

এদিকে মক্কার কুরাইশরা প্রথম থেকেই মদীনার ইয়াহুদী এবং মুনাফিকদের নিকট পত্র লিখে তাদেরকে শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করেনি; বরং তাদেরকে হুমকিও দিয়েছে যে, তোমরা যদি মুহাম্মদ সা. কে সেখান থেকে বের করে না দাও তাহলে তোমাদের

সাথেও আমরা যুদ্ধ করব।-আবু দাউদ

 

সে সময় এসব কারণ তাদের পরস্পর সম্পর্ক ও ঐক্য হওয়ার জন্য বাহানা হয়ে গেল । এখন মক্কার কুরাইশ, মদীনার ইয়াহুদী ও মুনাফিক সকলের ঐক্যবদ্ধ শক্তি ইসলামের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গেল। মক্কা থেকে মদীনা পর্যন্ত সকল গোত্রের মধ্যে এক আগুন লেগে গেল। সুতরাং, ৫ম হিজরীর ১০ই মুহাররম যাতুররিকা যুদ্ধ সেই চক্রান্তের ফসল। অতঃপর দাওমাতুল জন্দল ৫ম হিজরীর রবীউল আওয়ালে অনুষ্ঠিত হয়। সেটাও এই ধারার এক গুটি ছিল। ৫ম হিজরীর ২রা শাবানে বনী মুস্তালিক যুদ্ধের কারণও এই ঐক্যবদ্ধ চক্রান্তের প্রতিফলন। এই চক্রান্ত এক দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিভিন্নভাবে বিভিন্ন আকৃতিতে উন্নতি পেতে থাকল।

 

 

আহযাব যুদ্ধ ও খন্দকের ঘটনা

 

অবশেষে ৫ম হিজরীর যিল কাআদা মাসে সকলেই পূর্ণ শক্তি একত্রিত করে মদীনার উপর সম্মিলিত আক্রমণ করে বসল। এভাবে দশ হাজার লোকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য মদীনার দিকে অগ্রসর হল। নবী কারীম সা. এর কাছে যখন খবর পৌঁছল তখন তিনি সাহাবীদের জমা করে পরামর্শ করলেন। হযরত সালমান ফার্সী মত দিলেন, খোলা ময়দানে গিয়ে যুদ্ধ করা উচিত হবে না; বরং যেদিক দিয়ে তাদের মদীনায় প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে সেদিকে পরীখা খনন করা উচিত। সুতরাং মহানবী সা. তিন হাজার সাহাবীকে সাথে নিয়ে পরীখা খননের জন্য নিজেও প্রস্তুতি নিলেন। ছয় দিনে পাঁচ হাত গভীর পরিখা এমনভাবে প্রস্তুত হয়ে গেল যে, তা খননকাজে মহানবী সা. এর বরকতময় হাতের এক বড় অংশ ছিল। মুগলতাঈ পৃ ৫৬

 

একবার খননের সময় এক বিরাট শীলা খণ্ড বের হয়ে আসল । ভাঙ্গার জন্য সকলেই অপারগ হয়ে গেল। নবী কারীম সা. নিজ পবিত্র হাতে কোদাল দিয়ে আঘাত করলে অমনি তা খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায়। মোটকথা, পরীখা খনন সম্পন্ন হয়ে গেল। এদিকে কাফের বাহিনী এসে পৌছল এবং মদীনা ঘেরাও করে ফেলল। প্রায় পনের দিন পর্যন্ত মুসলমান অবরু দ্ধ থাকল। সে সময় ইয়াহুদীদের অবশিষ্ট গোত্র বনু কুরাইযাও অঙ্গীকার ভঙ্গ করে কাফেরদের সেনাবাহিনী আরো বাড়িয়ে দেয়।

 

অবরোধের কারণে মদীনায় চরম অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ল। রসদ স্বল্পতার দরুন সাহাবীগণ তিন দিন উপবাস অতিবাহিত করেছেন। একদিন বাধ্য হয়ে সাহাবায়ে কিরাম পেট খুলে মহানবী সা.কে দেখালেন যে, সকলেই পেটে পাথর বেঁধে আছেন। মহানবী সা. নিজ পেট মুবারক খুলে দেখালেন, তাতে দুটি পাথর বাঁধা ছিল। এদিকে অবরোধকারীরা যখন পার হতে পারল না। তখন সেখান থেকেই তারা তীর এবং পাথর বর্ষণ করতে লাগল। উভয় পক্ষ থেকে একাধারে তীর নিক্ষেপ করা হল। এর ধারাবাহিকতায় নবীজী সা. এর চার ওয়াক্ত নামাজ কাযা হয়ে যায় ।

 

কাফেরদের উপর ঝড়, বৃষ্টি ও আল্লাহর সাহায্য

 

অবশেষে আল্লাহ তায়ালা এই নিরস্ত্র বাহিনীকে সাহায্য করলেন। কাফের বাহিনীর উপর এমন এক ঝড় চাপিয়ে দিলেন যে, তাঁবুর খুটি উপড়ে গেল। চুলা থেকে ডেগচি উল্টে গেল। যা তাদের বাহিনীর বোধশক্তিকে অকেজো করে দিল এবং তাদের রসদপত্রও শেষ হয়ে গেল। এদিকে নাঈম ইবনে মাসউদ রা. এমন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন যে, যার ফলে কাফের বাহিনীর মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি হল। মোটকথা, সব উপকরণ এমন তৈরী হল যে, এখন কাফেরদের পা উপড়ে গেল এবং অল্প সময়ে ময়দান পরিস্কার হয়ে গেল ।

 

অন্যান্য ঘটনা: এ বছরে হজ ফরয হয়। এর দিন-তারিখের ব্যাপারে আরো বিভিন্ন উক্তি রয়েছে। এ বছরই মহানবী সা. এর নাতী আব্দুল্লাহ ইবনে উসমান অর্থাৎ হযরত রুকাইয়্যা রা. এর পুত্র মারা যান এবং শাওয়ালের শেষে হযরত আয়েশা রা. এর মাতা মৃত্যুবরণ করলেন। যি কাদা মাসে যয়নাব বিনতে জাহাশ রা. মহানবী সা এর বিবাহ বন্ধনে আসলেন। এ বছরই মদীনায় ভূমি কম্পন হয় এবং চন্দ্ৰ গ্রহণ লাগে। মুগলতাঈ পৃ ৫

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color