নবুয়তের শুরুতে কয়জন মুসলমান হয়? - How many Muslims are there at the beginning of Prophethood?
01:12:55 12/04/2023
নবুয়তের শুরুতে কয়জন মুসলমান হয়? এবং কিভাবে ক্রমবিকাশ ঘটে
মহানবী (সা:) মক্কায় ৬১০ খ্রিস্টাব্দে তাবলীগ শুরু করেন । মক্কী, মাদানী, এমন কি ইন্তেকাল পর্যন্ত তাঁর ২৩টা বছর গোটা নবূয়াতী জিন্দেগীর প্রথম ও প্রধান কাজ ছিল তাবলীগ । তাবারী (র) বলেন যে, শেষ সময় তাঁর সবচেয়ে বেশী ভাবনার বিষয় ছিল 'মানবজীতীর কাছে তাবলীগের জামায়াত প্রেরণ করা। খুসুসী গাস্ত : হযরত আবু বকর, আলী ও রাসূল (সা:) স্বয়ং হজ্জের মৌসুমে ওকাজ, মুজন্না ও জুল মাযারের হাটে কালেমার দাওয়াত দিয়েছেন ।
ক্লান্ত, শ্রান্ত, লাঞ্ছিত ও তৃষ্ণিত হয়ে তাওহীদের সুরমাচ্ছন্ন দৃষ্টিতে
আকাবার ৬ জন -
১. হযরত আসয়াদ
২. হযরত আওফ বিন হারিস
৩. হযরত রাফি বিন মালিক
৪. হযরত কুত্তাহ বিন আমির
৫. হযরত উকবাহ বিন আমীর
৬. হযরত জাবির বিন আবদিল্লাহ।
শাশ্বত বাণীর তাবলীগ বুঝালেন তাঁদের। তাওহীদ-নূরে পাল্টে গেল তৎক্ষনাৎ তাঁদের হৃদয়। কবুল করলেন ইসলাম। সময় যায় সময়ের গতীতে । তাঁরাও ভাবেন স্রষ্টার এ বাণীকে সবার কাছে পৌঁছাতে হবে । নিদ্রিতের জাগাবার দায়িত্ব জাগ্রতের। মানুষকে মানুষের জন্যেই করা হয়েছে নির্বাচিত ।
রাসূল (সাঃ) এসব সাহাবাদের নিজ এলাকায় (মদীনায়) তাওহীদের তাবলীগ করার আদেশ দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। দাওয়াত দিয়ে 'দাঈ' বানালেন। সুচীত হলো চাষ । অন্যান্য সকল নবীর (আ) বৈশিষ্ট্যই আবেদ বানানো, আর এ নবী ও উম্মতের বৈশিষ্ট্য দাঈ বানানো। এ ৬ জন সাহাবার (রা) দাওয়াতের ফসল হচ্ছে আরো ৬ জনকে পরবর্তী বছর আকাবায় নিয়ে এলেন। তাঁরাও কবুল করলেন, চুক্তি হলো, যদিও আলো থেকে আলো ছড়ায়, তবুও। এ চুক্তি সার্বিক সহযোগিতার চুক্তি; শুধু প্রতিরক্ষার নয়। -এ চুক্তি মদীনার ক্ষেত্রে প্রস্তুতি ।
জীবন যৌবন সর্বস্থ্যের বিনিময়। দল নেতা আসয়াদের আবেদনে মুছায়াব (রা:)-কে পাঠালেন মদীনায় । উঠলেন তাঁরই বাড়িতে। মদীনায় এ ব্যক্তিই প্রথম করেন নুসরাত । তৃতীয় বছরে আবার ৭২ জন মক্কায় । চুড়ান্ত চুক্তি করে আকাবায় (আকাবার ২য় শপথ) হুজুর (সা:)-এর হেদায়েত নিয়ে তাঁরা মদীনায় ফিরে দাওয়াতে তাবলীগের কাজে গভীর ভাবে আত্মনিয়োগ করেন । জান মাল দিয়ে মেহনত করতে থাকেন । আল্লহপাক মদীনায় প্রায় অর্ধেককে ইসলামের সু- শীতল ছায়ায় দিলেন আশ্রয় ।
এ কৃতিত্বের দাবীদার হযরত মুসয়াব (রা) তিনি ছিলেন রাসূল কর্তৃক মক্কা থেকে মদীনায় ৬২২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে তাবলীগের উদ্দেশ্যে প্রেরিত প্রথম ব্যক্তি । সুতরাং প্রথম মদীনা আবাদের মূল কৃতিত্ব তাঁর । মদীনার প্রসাশন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় মদীনাকেই ইসলাম প্রতিষ্ঠার উৎস মনে করা হয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তা নয়। মূলতঃ মক্কার তাবলীগই তার উৎসস্থল; মদীনা বিকাশ স্থল ।
তাহলে মক্কী জীবনকে ব্যর্থ বলা যায় কী? স্বরনার্থ যে, তাঁর কোন জীবনই ব্যর্থ নয় । হুজুর (সা:) মক্কায় হজ্ব ও বাণিজ্যোপলক্ষে দূর-দূরান্তের আগুন্তকদের দাওয়াত দিয়ে কালেমার শাশ্বত বাণী আরবের সকল দেশে পৌঁছে দিয়েছিলেন। প্রথমে মদীনায়, অতঃপর আরবের পশ্চিমাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল সর্বত্রই।