হার্ট অ্যাটাক কীভাবে প্রতিরোধ করবেন - How to prevent heart attack
06:17:33 12/11/2023
হার্ট অ্যাটাক কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
- নিয়মিত খোলা বাতাসে ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত তিনবার ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ব্যায়াম ।
- ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
- প্রাণিজ চর্বি পরিহার করতে হবে। এর পরিবর্তে শাকসবজি, ফলমূল প্রচুর খেতে হবে। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে ।
- কিছু চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- ডায়াবেটিস কিংবা উচ্চরক্তচাপে ভুগলে তার সুব্যবস্থা নিতে হবে।
- এমন সব লোকের সঙ্গে কাজ করবেন যারা সব সময় আপনার ব্যাপারে বেশ সতর্ক থাকে।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীরা বাসায় কীভাবে সুস্থ থাকবেন
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হার্ট অ্যাটাকের পরবর্তী তিনদিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেবেন । তারপর থেকে প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। ২-৩ সপ্তাহ তাকে বাসার বাইরে যাওয়া যাবে না। তবে তৃতীয় সপ্তাহ থেকে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। ১২ সপ্তাহ থেকে অফিসের কাজ শুরু করতে পারবেন। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
- বুকে ব্যথা হলে জিহ্বার নিচে এনজিসড ট্যাবলেট অথবা নাইট্রোমিন্ট স্প্রে দিতে হবে। যেসব কাজ করতে গেলে গেলে বুকে ব্যথা হয় সেসব কাজ পরিহার করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে যেতে হবে।
- আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে।
- মানসিক দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।
হার্ট অ্যাটাকের সুচিকিৎসা পেতে আপনার যা করণীয়
আপনি জানেন না কখন আপনার হার্ট অ্যাটাক হবে। প্রয়োজনের সময় ঠিকমতো চিকিৎসা পাবেন কিনা সে নিশ্চয়তা নেই। তাই প্রয়োজনের সময় অন্তত সঠিক চিকিৎসার নিশ্চয়তা যাতে পেতে পারেন এমন একটি পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রাখুন। অবশ্য আপনি যদি হার্ট অ্যাটাকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হন। কীভাবে তা করবেন সে ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হলো :
১. একজন চিকিৎসককে ডাকুন : আপনি মাঝে মাঝেই নির্দিষ্ট একজন চিকিৎসক দিয়ে আপনাকে পরীক্ষা করান। আপনি যদি হার্ট অ্যাটাকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হন তাহলে তার কাছ থেকে জেনে নিন রক্তের জমাটবদ্ধতা বিচূর্ণকারী ওষুধের ব্যবহারের কথা। মনে রাখবেন চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র ওষুধটি প্রয়োগ করতে হবে। একটি জরিপে দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে রক্তের জমাট বিচূর্ণকারী ওষুধ প্রয়োগ করলে তা শতকরা ৪৭ ভাগ মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। আর তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োগ করলে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে শতকরা ১৭ ভাগ।
২. ভালো হাসপাতালটি বেছে নিন : আপনার এলাকায় একাধিক হাসপাতাল থাকতে পারে, কিন্তু সব হাসপাতালেই হার্ট অ্যাটাকের রোগীর সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত নেই। আপনার চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করে আগে থেকেই জেনে নিন কোন হাসপাতাল হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসার জন্য উত্তম ।
৩. ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষাটি করান : মাঝে মাঝে এ পরীক্ষাটি করানো দোষের কিছু নয়। আপনার বুকের ব্যথাটা হার্ট অ্যাটাকের জন্য হচ্ছে নাকি অন্য কোনো কারণে, তা খুঁজে দেখার জন্য ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪. তালিকা সংরক্ষণ করুন : প্রেসক্রিপশন কিংবা প্রেসক্রিপশন ছাড়া আপনি যেসব ওষুধ ব্যবহার করছেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। কখন কবে কোন চিকিৎসককে দেখিয়েছেন তারও তালিকা থাকা চাই। কোন কোন ওষুধে আপনার সংবেদনশীলতা এবং অ্যালার্জি রয়েছে তা নিখুঁতভাবে লিখে রাখতে হবে। বিগত বছরগুলোতে আপনার শারীরিক অবস্থা, কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকলে তার বিবরণ, পারিবারিক ইতিহাস; যেমন- বাবা-মা'র কোনো গুরুত্বপূর্ণ অসুখ থাকলে তা লিপিবদ্ধ করে রাখবেন। মনে রাখবেন বেশি পরিমাণ তথ্য আপনার চিকিৎসাক্ষেে চিকিৎসককে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
৫. আপনার পরিবারকে সজাগ করুন : আপনার যদি হার্ট অ্যাটাক হয়, স্বভাবতই আপনি অক্ষম হয়ে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী অথবা পরিবারের অন্যান্য সদস্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো সম্পর্কে তাদের জ্ঞাত করুন। নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দিলে তারা যেন বুঝতে পারে আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। লক্ষণগুলো হলো বুকে, বাহুতে, কাঁধে, ঘাড়ে কিংবা চোয়ালে ব্যথা বা চাপ, ক্লান্তি অনুভব করা, অজীর্ণ, বমি বমি ভাব, স্বল্প মাথাব্যথা, অজ্ঞান হওয়া ও ঘেমে যাওয়া, সীমাহীন অস্বস্তি বোধ হওয়া, ছোট ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস হওয়া। এরকম যদি কিছু ঘটে দেরি না করে মুহূর্তেই আপনাকে অথবা আপনার পরিবারকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সন্ধান করতে হবে।