Narrow selection

ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কি কি? - Imaner Moulik Bisoy Koyti?


13:54:36 06/15/2024

ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কি কি?

ইমানের পরিচয়: ইমান শব্দটি আমনুন (امن) মূল ধাতু থেকে নির্গত। যার অর্থ বিশ্বাস করা, আস্থা স্থাপন, স্বীকৃতি দেয়া, নির্ভর করা, মেনে নেয়া ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় শরীয়তের বিধি-বিধান অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং তদনুযায়ী আমল করাকে ইমান বলে। ইমানের পরিচয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন –

ان تؤمن بالله وملائكته وكتبه ورسله واليوم الاخر وتؤمن بالقدر خيره وشره

অর্থ:  আল্লাহ, তার ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, পরকাল এবং ভালো-মন্দের (ভাল আল্লাহ রব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকেই হয়) এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। (মুসলিম)

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন

 

প্রকৃতপক্ষে ইসলামের মূল বিষয়গুলোর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাসকেই বলা হয় ইমান। ইমানের মৌলিক বিষয়গুলো আল্লাহ তায়া’লার বানী আল-কোরআন ও রসূলুল্লাহ (স.) এর পবিত্র হাদীসে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ঈমানে মুফাসসাল (কালিমা) এ ইমানের মৌলিক বিষয় গুলো একত্রে বর্ণিত হয়েছে।

 

যেমন:

আমি ঈমান আনলাম আল্লাহর প্রতি

তাঁর ফেরেশতাগণ এর প্রতি

তার কিতাব গুলোর প্রতি

তাঁর রাসুলগণের প্রতি

আখিরাতের প্রতি

তকদিরের প্রতি (ভালো-মন্দ আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকেই হয়)

মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের প্রতি।

 

বর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস ব্যতীত ইমানদার হওয়া যায় না। যিনি এগুলোতে পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করেন তাকে বলা হয় মমিন।

ইমানের সাতটি মূল বিষয়
একজন মুসলিমকে ঈমানের কতগুলো মৌলিক বিষয়ের দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে হয় এগুলো আল কুরআন ও হাদিস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। এগুলোতে বিশ্বাস ব্যতীত কোন ব্যক্তি প্রকৃত মু‘মিন বা মুসলিম হতে পারে না। এরূপ বিষয় মোট ৭টি এগুলো হলো-
 

১. আল্লাহ তায়া’লার প্রতি বিশ্বাস
ইমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় হলো আল্লাহ তা’য়ালার প্রতি বিশ্বাস।আল্লাহ তা’আলা এক ও অদ্বিতীয়। তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই বিধানদাতা নেই তিনি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতাও রক্ষা কর্তা।
তিনি সকল গুণের আধার। তার সত্তা ও গুণাবলী তুলনাহীন সমস্ত প্রশংসা ও ইবাদত একমাত্র তাঁরই জন্য নির্ধারিত আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ইমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

 

২. ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বস
ফেরেশতাগণে মহান আল্লাহর এক বিশেষ সৃষ্টি। তাঁরা নুরের তৈরি। তাঁরা সবসময় আল্ল্াহ তায়ালার ইবাদত ও হুকুম পালনে নিয়োজিত। তাঁদের সংখ্যা অগণিত। তাঁরা নারীও নন, পরুষও নন। তাঁরা পানাহার জৈবিক চাহিদা থেকে মুক্ত। তাঁদের প্রতি এরূপ বিশ্বস রাখা ইমানের অন্তর্ভুক্ত।

 

৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
আসমানী কিতাবসমূহ আল্লাহ তা’য়ালার বাণী। এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা মানুষকে নিজ পরিচয় প্রদান করেছেন। নানা বিধি-বিধান আদেশ-নিষেধ সুসংবাদ সতর্কবাণী ইত্যাদিও এগুলোর মাধ্যমে এসেছে। আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর রাসুলগণের নিকট এ কিতাব পাঠিয়েছেন। দুনিয়াতে সর্ব মোট ১০৪ খানা আসমানি কিতাব নাযিল করা হয়েছে। এ সমস্ত কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ফরজ।

 

৪. নবী ও রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস
মানব জাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামীন যুগে যুগে বহু নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন। নবী ও রাসূলগণ ছিলেন আল্লাহতালার মনোনীত ও অনির্বাচিত বান্দা। সকল সৃষ্টির মধ্যে তারাই সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। তারা ছিলেন নিষ্পাপ। আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশে তারা মানবজাতিকে আল্লাহর পথে ডেকেছেন। সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখিয়েছেন। ইহকালীন ও পরকালীন শান্তি ও মুক্তির দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। নবী ও রাসূলগণের প্রতি এরূপ বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা ফরজ।

 

৫. আখিরাতে বিশ্বাস
আখিরাত হলো পরকাল। আখিরাতের জীবন চিরস্থায়ী এ জীবনের শুরু আছে শেষ নেই। সেখানে সকল মানুষকে দুনিয়ার জীবনের সকল কাজ কর্মের হিসাব দিতে হবে। কবর, হাশর, মিজান, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি আখেরাত জীবনের এক একটি পর্যায়। দুনিয়াতে সৎ কাজ করলে মানুষ জান্নাত লাভ করবে। আর ঈমান না আনলে, অসৎ কাজ করলে মানুষের স্থান হবে ভীষণ আজাবের স্থান জাহান্নাম।

 

৬. তকদিরে বিশ্বাস
তকদির অর্থ হলো নির্ধারিত পরিমাণ। ভাগ্যবান ইয়তি। আল্লাহ তা’য়ালা মানুষের তকদিরের নিয়ন্ত্রক। তিনি তকদিরের ভালো মন্দ নির্ধারণকারী।মানুষ যা চায় তাই সে করতে পারবে না। বরং মানুষ শুধু তার কাজের জন্য চেষ্টা-সাধনা করবে। অতঃপর ফলাফলের জন্য আল্লাহ তা’য়ালার উপর ভরসা করবে। যদি চেষ্টা করার পরও কোন কিছু না পায় তবে হতাশ হবে না। আর যদি পেয়ে যায় তবু খুশিতে আত্মহারা হবে না। বরং ধৈর্য ধারণ করবে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। আর তকদিরের ভালো-মন্দ একমাত্র আল্লাহ তায়ালার হাতে মনে প্রাণে এরূপ বিশ্বাস স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

 

৭. মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস
মৃত্যুর সাথে সাথেই মানুষের জীবন শেষ হয়ে যায় না। বরং মানবজীবন দুই ভাগে বিভক্ত। ইহকাল ও পরকাল। ইহকাল হল দুনিয়ার জীবন আর পরকাল হলো মৃত্যুর পরবর্তী জীবন। আল্লাহ তা‘য়ালা মানুষকে মৃত্যুর পর আবার জীবিত করবেন। সেই সময় সকল মানুষ হাশরের ময়দানে একত্রিত হবে। আল্লাহ তা’য়ালা সেদিন বিচারক হিসেবে মানুষের সকল কাজের হিসাব নিবেন। অতঃপর মানুষকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কার স্বরূপ জান্নাতে ও মন্দ কাজের শাস্তি স্বরূপ জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। সুতরাং মৃত্যুর পর আমরা সবাই পুনরায় জীবিত হব এ বিশ্বাস রাখা ঈমানের অপরিহার্য বিষয়।

 

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color