মসজিদে রাতে ঘুমানো কি ঠিক? - Is it right to sleep in the mosque at night?
02:05:48 12/04/2023
মসজিদে রাতে ঘুমানো কি ঠিক? তাবলীগ জামাত মসজিদে থাকা
বর্তমানে যে তাবলীগ জামাতের নামে সারা পৃথিবীতে ঈমানের মেহনত চলছে তা একটি নিরব বিপ্লব । যাদের ঈমান ও আমল নিয়ে কোন ফিকির ছিলনা, সুন্নাতের কোন খবর ছিল না, কুরআন শরীফ সহীহ করে পড়ার কোন ফিকিরই অন্তরে পয়দা হয়নি, যারা কখনো নামায তো দূরে কথা ঈমান কাকে বলে? কালেমা কি? কালেমার লাভই বা কি? কিছুই জানতো না, কিন্তু এক তাবলীগের ওসিলায় সকল অন্ধকার দূর হয়ে আলোর মুখ দেখতে পাচ্ছে। নবী ওয়ালা কাজকে নিজের জীবনের বাড়ী গাড়ী ও মাকসাদ বানাচ্ছে ।
যে সকল মসজিদগুলোতে মুসল্লি নেই, তালীম নেই, গাশত নেই, দাওয়াত নেই সে সকল মসজিদগুলোতে নামাযীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে, তালীম চালু করছে, গাশত ও দাওয়াতের কাজ পুরোদমে চলছে, সেই মেহনতী ও বরকতময় সাথী ভাইদের সহযোগীতা না করে উল্টো শক্তি ও প্রভাব খাটিয়ে মসজিদে তাবলীগের কাজ নিষিদ্ধ করতে চাচ্ছে তাদের ব্যাপারে রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে বলেন-
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ مَنَعَ مَسَاجِدَ اللهِ أَنْ يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ وَسَعَى فِي خَرَابِهَا .
তাবলীগের ভিত্ত সহীহ আক্বীদা-বিশ্বাস
যারা তাবলীগ করেন তারা সম্পূর্ণ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতেরই আকীদা- বিশ্বাসের অনুসারী। তারা এমন কোন আক্বীদা-বিশ্বাস পোষণ করেন না যা কুরআন হাদীস ও শরীয়ত বিরোধী। তারা সম্পূর্ণ কোরআন-হাদীসে ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে সহীহ আক্বীদা পোষণ করে স্বীয় ঈমানকে বেদাত ও কুফর শিরক মুক্ত রেখে খাটি করেন। কুরআন-হাদীস ও শরীয়ত বিরোধী কোন আক্বীদাই পোষণ করে না। তাদের বিরুদ্ধে তাবলীগ বিরোধী ইহুদী নাসারাদের দোসর ও কুফর শেরেক এবং এক শ্রেণীর মাজার পূজারীরা জঘন্য অপবাদ ছড়িয়ে মুসলমানদের ঈমান বিনষ্ট করছে। কারণ তারা ভাল করেই জানে যে, মুসলমান জাগলে এবং সুন্নাত মুখী হলে তাদের পেটনীতি ও জমজমাট মাজার ব্যবসা, সুন্দরী নারীদের দিয়ে পুরো শরীর টিপিয়ে মনের অবৈধ বাসনা পূরণ করা যাবে না।
সরলমনা লোকদেরকে যাদু-টোনার মাধ্যমে মারেফাতের নাম ভাঙ্গিয়ে অঢেল ধন-সম্পদের মালিক হওয়া যাবে না। দিন রাত সুন্দরী নারীদের জমা করে তরীকত ও মারেফাতের নাম ভাঙ্গিয়ে যিনা করা যাবে না। তাই এসব তাবলীগ বিরোধীরা সত্য বুঝেও প্রবৃত্তির তাড়নার তাগিদে অন্ধ সেজে তাবলীগের বিরোধীতা করছে । এখন আমার প্রশ্ন হলো— এদেশে কবর পূজারী, মাজার পূজাকারী, আটরশির দেওয়ানবাগী, রেজভী, চন্দ্রপুরী, কুতুববাগী, রাজার বাগী, মাইজভাণ্ডারী নামে যত অসামাজিকতা, বেহায়পানা হচ্ছে, যত অশ্লীলতা হচ্ছে, সুন্দরী নারীদের একত্রিত করে রাতের আধারে বাতি বন্ধ করে ইজ্জত হানীর মাধ্যমে যৌন সুরসুরীর অবৈধ যিনাখানা চালু করছে এর ফলে লক্ষ্য- কোটি মুসলমানের ঈমান, আমল ও চরিত্র নষ্ট করছে। শুধু মারেফাত ও ইশকের নামে নামাযী লোকদের বেনামাযী বানাচ্ছে।
গোটা সমাজকে পাপ পঙ্কিলতার মাধ্যমে অশ্লীলতার বেল্লাপনা বানাচ্ছে তাতে আল্লাহর নবী অবশ্যই মদীনা হতে আওয়াজ দিয়ে বলছেন হে আমার প্রিয় উম্মত ও সৈনিকেরা! এসব ভণ্ড ও ঈমান বিরোধী বাটপার- ছিটারদের খপ্পর ও ধ্বংসাত্যক ছোবল হতে আমার উম্মতদের মুক্তির জন্য দাওয়াত ও তাবলীগের কাজকে বেগবান করার লক্ষ্যে বেরিয়ে পড়ো আল্লাহর পথে । এই ভণ্ড, বেনামাযী, ঈমান বিরোধী কুফরী শক্তির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান নামধারী “আহলুস সুন্নাত ওয়ালা জামাত” এর লোকেরা হকপন্থী? না বাস্তবে ও খাঁটি আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী যারা ঈমান ও আমল দুরস্ত করার জন্য দাওয়াত ও তাবলীগকে নিজের মাকসাদ বানিয়ে মেহনত করছে তারা সত্যপন্থী ও হকপন্থী। মূলতঃ তাবলীগ বিরোধীরা নকল সুন্নী, আর তাবলীগীরা খাটি সুন্নী । তাবলীগ ভাইয়েরাতো আল্লাহর হাবীব পেয়ারা নবী মুহাম্মদ (সা:)-এর ভালবাসায় তার তরীকাকে সঠিকভাবে সত্যভাবে আকড়ে ধরে আছে ।
কুফর শিরিক ও বেদাতকে জানের শত্রু মনে করে তারা । যারা এই হক পন্থি লোকদের সহীহ ঈমান-আক্বীদা নিয়ে প্রশ্ন তোলে অথচ তাদের ঈমান এর খবর নেই বরং কুফর শিরকে ভরপুর; তারা কত নাম্বার বাটপার ও ছিটার? সত্য সন্ধানী ও জ্ঞানী লোকদের বুঝতে বাকী নেই যে, একমাত্র সহীহ ও বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ কারী ঈমানী আন্দোলনের ধারক-বাহক, সাহাবাদের আদর্শে অটল আল্লাহর নবীর বীর সৈনিক তাবলীগ জামাত ও দেওবন্দী উলামারাই সঠিক ও সত্যপথের সৈনিক। তাদের সামনে গোটা দুনিয়াকে একটি সুন্নাতকে বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে লোভ ও আকাঙ্খা হিসেবে পেশ করা হলেও কখনো তারা সুন্নাতকে বিসর্জন দিতে পারে না ।
গোটা দুনিয়া না বরং নিজের জানকে বিলিন করতে প্রস্তুত তবে সুন্নাতের ও নবীর ইজ্জতের উপর আঘাত সহ্য করবেনা। তাহলে এই খাটি জামাত বা দলকে তারাই দেখতে পারে না যারা আল্লাহর হাবীবের একটি দুটি সুন্নত নয়; বরং সবগুলো সুন্নাত কে বিদায় দিয়ে কুফর শেরেক ও বিদাতকে জীবন চলার মাধ্যমরূপে গ্রহণ করে । সত্য-পন্থি লোকেরাই স্বীয় জ্ঞান-বুদ্ধির আলোকে বলবেন এই ভণ্ড ও তাবলীগ বিরোধীরা কেন তাবলীগের নাম শুনতে পারে না। কেন মসজিদে ও মহল্লায় তাবলীগ ঢুকতে দেয় না ।
তাবলীগ বিরোধীদের গোমর ফাঁক
যারা তাবলীগে যায় তাদের অনেকে দাড়ি ছাড়া তাবলীগের জামাতে বের হয় । কিন্তু যখন জামাত থেকে ফিরে আসে তখন নবীজীর সুন্নাতের গুরুত্ব অনুধাবন করে আল্লাহর রাসূলের সুন্নাতের ভলবাসায় মুখে দাড়ি নিয়ে ফিরে আসে । পক্ষান্তরে মাইজভান্ডার, আটরশী, দেওয়ানবাগ, কুতুববাগ, চন্দ্রপুরসহ নামধারী সুন্নী, নবীর আশেক দাবীদার বেদাতীরা দাড়ি তো দূরের কথা দাড়িকে ছাটাই করে বক্তব্য প্রদান করে। আটরশীর গদিনশীন পীর মোস্তফা আমীর ফয়সালকে সকলেইতো পোষ্টারে দেখেন, দাড়ি-গোফ বিহিন টাইপরা সম্পূর্ণ এক কাটটা ফাসেক।
কিন্তু সে হলো পীর! এই ভণ্ড তাবলীগের বিরোধীতা করে, আবার নিজেকে মুজাদ্দিদে যমান বলে দাবী করে । আচ্ছা, নবীজীর সুন্নাতের অনুসরণ-অনুকরণ ছাড়া কি কেউ নবী প্রেমিক হতে পারে? কেউ দাড়িতে ক্ষুর লাগালে মূলতঃ সে নবীজীর কলিজাতে ক্ষুর লাগাল । এখন যে ভণ্ড ও পীর দাবীদার নবীর কলিজাতে ক্ষুর লাগায় সেকি নবী প্রেমিক? না নবীর দুশমন? আর নবীর দুশম হলে কি কেউ পীর হতে পারে? তাহলে বুঝতে বাকী কি? এই আটরশি বলুন আর দেওয়ানবাগী বলুন, যারাই তাবলীগের বিরোধীতা করে, তারা সকলেই ভণ্ড ও ভ্রান্ত । তাদের ত্যাগ করা ঈমানী দায়িত্ব ।
দেওয়ান বাগীর পুরো আক্কীদা- বিশ্বাসই আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে । তাদের কাউকেই সুন্নাতের উপর দেখা যায় না এবং কাউকে সুন্নাতের উপর উঠানের ফিকিরও নেই। এখন প্রশ্ন হলো— যে সকল তাবলীগের ভাইয়েরা সহীহ আক্বীদা পোষণ করে দাড়ি রাখেন আল্লাহর রাসূলের ভালবাসায় দাড়ি কাটেন না তারা হকপন্থি? না যে সকল বেদাতীরা শুধু নামে সুন্নী কাজে কর্মে বেদাতী, তারা হক পন্থী? আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুরলাম- তাবলীগ বিরোধীরা কুরআন হাদীস ও উসূলের ভিত্তিতে গোমরাহ, বাতিল । নবীজীর (স.) শত্রু ও ইহুদী নাসারাদের দোসর।
আল্লাহর রাসূল (স.) সর্বদা মাথায় পাগড়ী পড়তেন । এটা নবীজীর পোষাকের সুন্নাত। তাবলীগ জামাতের লোকেরা নবীর সুন্নতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে মাথায় পাগড়ী পরে সুন্নত ধারণ করে আর নামধারী সুন্নীরা ও কথিত আশেকে রাসূলেরা পাগড়ী তো দূরের কথা মাথায় টুপিও পরে না; তাহলে তাবলীগ জামাত নবীর প্রেমিক না সুন্নী নামের বিদআতীরা নবী প্রেমিক?
নামায হল ইসলামের অন্যতম একটি স্তম্ভ। মুমিন আর কাফেরের মধ্যে পার্থক্য হল নামায । যার মধ্যে নামায নেই সেতো নামধারী মুসলমান মাত্র । রাব্বুল আলামীন কোরআনে অসংখ্য বার নামাজের কথা বলেছেন । নবীজী (সাঃ) নামায ত্যাগকারীদের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী আরোপ করেছেন । বর্তমানে তাবলীগ জামাতের লোকদের মূল মেহনতই হলো নিজে সঠিকভাবে নামায পড়া আর অপর সকল বেনামাযী লোকদের নামাযী বানানো। কিন্তু নিতান্ত পরিতাপের বিষয় হলো, তাবলীগের বিরোধীতা যারা করে তারা নামাজের ক্ষেত্রে খুবই উদাসীন।
তারা নামায তো পড়েই না উল্টো বলে বেড়ায় যে এই কপাল ঠেকিয়ে নামায পড়লে কী লাভ? তারা কলবে নামায পড়ে । তাদের কলব নাকি জারী। আমি এসব তাবলীগ বিরোধী শয়তানের প্রেতাত্মা ও জ্ঞান পাপী মূর্খ, ভণ্ড ও ধোকাবাজদের এটুকুই বলব যে, পৃথিবীর মধ্যে আল্লাহর রাসূলের চেয়ে বড় পরহেযগার, নবীর চেয়ে বড় আল্লাহ ওয়ালা, নবীর চেয়ে বেশী কলবজারীর অধিকারী আর কেউ ছিলেন না ও নাই ।
এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকীদা-বিশ্বাস । কিন্তু আল্লাহর রাসূল তো সর্বদা জামাতে নামায পড়ছেন। সাহাবাদেরকে জামাতে নামায পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। জামাতে শরীক না হলে তাদের বাড়ী-ঘর আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হলো- যেই তাবলীগীরা নামায কায়েম করেন সুন্নাত মতো জীবন পরিচালনা করেন, তারা হক পন্থি? না যেই তাবলীগ বিরোধীরা নামায কায়েমতা দূরের কথা নামায পড়তেই জানেনা । দুআ-মাসআলা ও কুরআন কিছুই সহীহ নেই তারা হকপন্থী?