Narrow selection

জিহাদী বয়ান - Jihadi Boyan


15:52:17 12/04/2023

জিহাদী বয়ান - Jihadi Boyan

نَحْمَدُهُ وَنُصَلِّي عَلَى رَسُولِهِ الْكَرِيمِ أَمَّا بَعْدُ! فَأَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ

وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمُ الخ

وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوةُ وَالسَّلَامُ إِنَّ اللَّهَ بَعَثَنِي بِالسَّيْفِ وَجَعَلَ رِزْقِى

تَحتَ ظِلُّ رُمْحِى الخ أو كَمَا قَالَ عَلَيْهِ الصَّلوةُ وَالسَّلَامُ

আজকের সেম্পুজিয়ামের স্বনামধন্য সভাপতি, বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী, সুদক্ষ পরিচালক ও আমার মুজাহিদ ভাইয়েরা

আজ এমন এক মুহূর্তে বক্তৃতা দিতে হচ্ছে, যে সময় গুজরাটের মুসলমানদের আগুনে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, যে সময় ফিলিস্তিনের মুসলমানদের বুলডোজার দিয়ে পিশে মারা হচ্ছে। যে সময় লেবাননের মুজাহিদদের বোমা মেরে তাদের ছেলেমেয়েদেরকে ইয়াতীম বানানো হচ্ছে। কাশ্মিরের ঝিলাম নদী মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত, যে সময় আরাকানের রোহিঙ্গা তরুণীরা নাসাক্কা হায়নাদের দ্বারা ধর্ষিতা, আর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলার ডাস্টবিনে কুরআন শরীফ নিক্ষিপ্ত। মুসলিম বিশ্বের এ ক্রান্তিলগ্নে মুসলমানদের মুক্তির একমাত্র উপায় (কিতাল ফী সাবিলিল্লাহ) সম্পর্কিত বিষয় নির্ধারনের জন্য আজকের সেমিনারের একজন বক্তা হিসেবে ব্যবস্থাপকদের জানাই আমার জিহাদী শুভেচ্ছা, আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় (কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ)।

সুপ্রিয় সুধীমণ্ডলী

هو الذى ارسل رسوله بالهدى ودين الحق ليظهره على الدين كله

আল্লাহ তা'আলা) এই আয়াতের মাধ্যমে নবী (সা.) কে প্রেরণ করার অন্যতম কারণ বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, দ্বীন ইসলামকে অন্যান্য সকল ধর্মের উপর বিজয়ী করার জন্যই মুহাম্মদে আরাবীকে (সা.) পাঠানো হয়েছে। প্রিয়নবী (সা.) তাই এই দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রথমত দাওয়াত ও তাবলীগের পদ্ধতিতে কাজ করেন; কিন্তু তিনি যখন আরবের কাফেরদের একত্ববাদের প্রতি আহবান করেছেন তখন বিনিময়ে তাঁর ওপর অকথ্য জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে। সুদীর্ঘ ১৩ বছরে মাত্র গুটি কয়েক মানুষকে ইসলামে দীক্ষিত করতে পেরেছেন। তাই মহান রাব্বুল আলামীন তাঁকে মদীনায় হিজরত করতে বললেন। সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে মদীনায় হিজরত করে অক্লান্ত চেষ্টা সাধনায় সেখানে ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম করার পর, আল্লাহ আয়াত নাযিল করলেন-

وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ ويَكُونَ الدِّينِ كُلُّهُ لِلَّهِ -

আর মুসলমান তোমরা লড়াই কর ঐ কাফেরদের বিরুদ্ধে এর মাধ্যমে ফেতনা নির্মূল হবে এবং দ্বীন পূর্ণাঙ্গভাবে আল্লাহর হবে। -সূরা আনফাল : ৩৯ মুহাম্মদ (সা.) কে পাঠানোর অন্যতম উদ্দেশ্য দ্বীন ইসলামকে ও সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। তাই নবীজী (সা.) দাওয়াত এর সাথে সাথে (কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ) এর পদ্ধতিকে গ্রহণ করলেন।

তাঁর ক্ষুদ্র বাহিনী নিয়ে বদর প্রান্তরে শক্তিশালী কাফের বাহিনীর উপর টর্নেডোর গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে আনলেন, উহুদের যুদ্ধে বিজয়ীর দাবীদার কাফের বাহিনীকে লেজ গুটিয়ে রণাঙ্গন ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন। খন্দকের যুদ্ধে বিজয় মুসলমানদের পদচুম্বন করেছে। খায়বারের যুদ্ধে, মুরাইসিয়ার যুদ্ধে বিজয় মুসলমানদের পদচুম্বন করেছে। ফাতহে মক্কার সময় কাফেররা ঐ অসহায় মজলুম মুসলমানদেরই লালগালিচা সম্বর্ধনা জানাতে বাধ্য হয়েছে। বিদায় হজ্জের সময় মাত্র দশ বছরের জিহাদী জীবনের বাস্তব ফলাফল হিসেবে দেড় লাখ সাহাবী (রা.) আরাফার ময়দানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রিয় সাথী ও বন্ধুগণ!

নবীজী (সা.) এর নবুওয়াতী জীবনের প্রথম ১৩ বছরে মাত্র গুটি কয়েক মানুষের ইসলাম গ্রহণ এ কথাই প্রমাণ করে যে, কিতাল ছিল নবী কারীম (সা.) এর মিশন, ইসলাম প্রতিষ্ঠার অন্যতম হাতিয়ার। কুরআনে কারীমে জেহাদ সম্পর্কে ৬৮৬ টি আয়াত অবতীর্ণ হওয়া একথারই জ্বলন্ত প্রমাণ যে, কিতাল ছিল নবী কারীম (সা.) এর জীবনের অন্যতম অধ্যায়। সে জন্য কুরআনের আয়াতে বলা হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ

অর্থাৎ, হে নবী! কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফিকদের সাথে। -সূরা তাওবা : ৭৩ অর্থাৎ, কিতাল ছিল নবী (সা.) এর জীবনের অন্যতম অধ্যায়, এর স্বীকৃতি প্রিয়নবী (সা.) স্বয়ং তাঁর পবিত্র ভাষায় ব্যক্ত করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে

১। আমি সংগ্রামের নবী ।

إِنَّ اللَّهَ بَعَثَنِي بِالسَّيْفِ وَجَعَلَ رِزْقِي تَحْتَ ظِلِّ رَمُجِي

অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আমাকে তরবারী দ্বারা পাঠিয়েছেন এবং তীর-বল্লমের ছায়ায় আমার রিযিক আছে।

নবীজী (সা.) আরো বলেছেন-

بُعثتُ بِالسَّيْفِ وَجَعَلَ رِزْقِي تَحْتَ ظِله

অর্থাৎ, আর আমি তরবারিসহ প্রেরিত হয়েছি। আমার রিযিক তরবারির ছায়ার নীচে।

ইরশাদ হচ্ছে-

لَوَدِدْتُ أَنْ أَقْتُلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ

অর্থাৎ, আহ! যদি আমার আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত নসীব হত।-বুখারী শরীফ

জিহাদ ছিল ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার অন্যতম হাতিয়ার সে জন্য নবীজী (সা.) বলেছেন-

الْجِهَادُ ذَرُوَةُ سَنَامِ الْإِسْلَامِ -

অর্থাৎ, জিহাদ ইসলামের উঁচু চূড়া। মিশকাত শরীফ ৩পৃষ্ঠা উহুদের যুদ্ধে নবী (সা.) এর দান্দান মুবারকের শাহাদাত আর খন্দকের যুদ্ধে ক্ষুধার তাড়নায় পেটে পাথর বাঁধা এ কথাই প্রমাণ করে যে, নবীজী (সা.) এর জীবনের একটি অন্যতম অধ্যায় হচ্ছে (কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ)। মাত্র দশ বছরে ২৫ টিরও অধিক গাযওয়া পরিচালনা এবং চল্লিশের অধিক

সারিয়্যা প্রেরণ এ কথাই প্রমাণ করে যে, কিতাল হচ্ছে নবীজী (সা.) এর জীবনের একটি অন্যতম অধ্যায়। সে জন্যই নবীজী (সা.) বলেছেন-

إِذَا تَرَكْتُمُ الجِهَادَ فَسَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمُ الذُّلَّةُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى

دِينِكُمْ أَى إِلَى جِهَادِكُمْ

জিহাদের মাধ্যমে আমি দ্বীন ইসলামকে অন্য ধর্মের উপরে বিজয়ী করেছি, সেই জিহাদকে তোমরা ছেড়ে দিওনা। যদি ছেড়ে দাও তবে বেইজ্জতী আর জিন্নতি হবে তোমাদের জন্য অবধারিত। সে জন্যই আয়াতে বলা হচ্ছে-

وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ -

অর্থ্যাৎ, তোমরা (জিহাদ পরিত্যাগ করে) তোমাদের জীবনকে ধ্বংসের দিকে ফেলে দিওনা। -সূরা বাকারা : ১৭৪

রাসূল পাক (সা.) এর এই হুঁশিয়ারী বাণী ও আয়াত শোনা সত্ত্বেও জেহাদকে ছেড়ে দেওয়ার কারণে আজ দেড়শ কোটি মুসলমানের উপর কুফরি শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে হিংস্র হায়েনার ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ভারতের গুজরাটে মুসলমানদের আগুনে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। কাশ্মীরের মুসলিম রমণীদের ইজ্জত হরণ করা হচ্ছে। আরাকানে এমন কোন মুসলিম বোন পাওয়া আজ দুষ্কর যে, তার সতীত্বকে বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছে। ইসরাঈলের বর্বর তাণ্ডবে অতিষ্ঠ ফিলিস্তিনের অসহায় মুসলমানদের আর্তচিৎকারে ফিলিস্তিনের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। তারা চিৎকার করে বলছে-

رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنكَ

وَلِيًّا وَاجْعَلُ لَّنَا مِنْ لَّدُنكَ نَصِيرًا -

অর্থাৎ, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জালিম অধিবাসীদের থেকে বের করে দাও এবং আমাদের জন্য তোমার পক্ষ থেকে কার্যনির্বাহী এক সাহায্যকারী বানাও। -সূরা নিসা : ৭৫

মুসলিম তরুণীদের ইজ্জতের হেফাজতের জন্য, কুরআনের হেফাজতের জন্য আমাদের ঐ রক্ত পিচ্ছিল দুর্গম পথে পাড়ি জমাতে হবে।

যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খালেদ (রা.) কে দিয়ে ইস্তাম্বুল জয় করিয়েছেন, তারিককে দিয়ে স্পেন জয় করিয়েছেন, বিন কাসিমকে দিয়ে সিন্ধু জয় করিয়েছেন; সে আল্লাহ জীবিত। সে আল্লাহ সাহায্যকারী হিসেবে আমাদের অপেক্ষায় আছেন। প্রয়োজন শুধু আমাদের আরেক বার গর্জে উঠার। সময় হয়েছে কুফরী শক্তির আঘাতের পাল্টা জবাব দেওয়ার। ইসরাঈলী দম্ভকে চূর্ণ করার। তাই আমাদেরকে কলমের ক্ষুরধার লিখনির মাধ্যমে এবং ইসলামী মিডিয়া তৈরি করে জনগণেকে সচেতন করে ইসলামবিদ্বেষীদের ষড়যন্ত্রের মুখোশ উম্মোচন করে দিতে হবে।

কথার বুলেট দিয়ে তাদের হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি করতে হবে এবং কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ এর মাধ্যমে কুফরী সালতানাতকে ভেঙ্গে খান খান করে বাইতুল মাকদিসে ইসলামের পতাকাকে আবার উড্ডীন করতে হবে। প্রিয় নবীর (সা.) রক্তে প্রতিষ্ঠিত দ্বীন ইসলামকে আবার বিজয়ীর বেশে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাহলেই হবে আমাদের এ আলোচনা সার্থক। মহান আল্লাহ আমাদের নবীজীর (সা.) পথ অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন। জীবনের চেয়ে দীপ্ত মৃত্যু তখনি জানি,

শহীদের খুনে হেসে উঠে যবে যিন্দেগানী ।

نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color