জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মানা - Jonogon Khomotar Malik
14:18:31 06/13/2024
জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মানা
জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মানা, জনগণকে আইনের উৎস মানা ঈমান পরিপন্থী। কেননা ইসলামী আকীদা বিশ্বাসে আল্লাহকেই সর্বময় ক্ষমতার উৎস স্বীকার করা হয় এবং বিধান দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর।
প্রচলিত গণতন্ত্রের জনগণকেই সকল ক্ষমতার উৎস এবং জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে আইন বা বিধানর অথরিটি বলে স্বীকার করা হয়, তাই প্রচলিত গনতন্ত্র এ ধারণা ঈমান আকীদার পরিপন্থী।
গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি তন্ত্রমন্ত্রকে মুক্তির পথ মনে করা এবং একথা বলা যে ইসলাম সেকেলে মতবাদ, এর দ্বারা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের এই যুগে উন্নতি অগ্রগতি সম্ভব নয় এটা কুফরী।
ধর্ম নিরপেক্ষতা –এর অর্থ যদি হয় কোন ধর্মে না থাকা ,কোন ধর্মের পক্ষ অবলম্বন না করা।কোন ধর্মকে সমর্থন দিতে না পারা,তাহলে এটা কুফরী মতবাদ। কেননা ইসলাম ধর্মে থাকতেই হবে ইসলামের পক্ষ অবলম্বন করতেই হবে ইসলামী কার্যক্রমকে সমর্থন দিতেই হবে। আর যদি ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত না করা, তাহলে সে ধারণাও ইসলামী আকীদা বিশ্বাসের পরিপন্থী।
কেননা ,ইসলামী আকিদা বিশ্বাসে ক্ষমতা ও সামর্থ্য থাকলে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা ফরয। আর কোন ফরযকে অস্বীকার করা কুফরী। যদি ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ শুধু এতটুকু হয় যে,সকল ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ ধর্ম কর্ম পালন করতে পারবে,জোর জবরদস্তী কাউকে অন্য ধম্যে প্রবেশ করানো যাবে না , তাহলে এতটুকু ধারণা ইসলাম পরিপন্থী হবে না।
ডারউইন-এর বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করা কুফরী অর্থাৎ ,একথা বিশ্বাস করা যে,বিবর্তন অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে পরিবর্তন হতে হতে এক পর্যায়ে বানর থেকে মানষ সৃষ্টি হয়েছে। এরুপ বিশ্বাস ইসলাম ও ঈমান পরিপন্থী। ইসলামী আকীদা বিশ্বাসে আল্লাহ তা‘আলা নিজ হাতে সর্ব প্রথম হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকেই মানব জাতির বিস্তৃতি ঘটেছে। বিবর্তনবাদ সম্পর্কে ২য় খন্ডে সপ্তম অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ইসলাম মসজিদের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকবে, ইসলাম ব্যক্তিগত ব্যাপার, ব্যক্তিগত জীবনে এটাকে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, সমাজ বা রাষ্ট্রীয় জীবনে এটাকে টেনে আনা যাবে না- এরুপ বিশ্বাস করা কুফরী। কেননা, এভাবে ইসলামের ব্যাপকতাকে অস্বীকার করা হয়। ইসলামী আকীদা –বিশ্বাস অনুযায়ী কুরআন-হাদীছে তথা ইসলামের মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় যাবতীয় ক্ষেত্রে সকল বিষয়ে শাশ্বত সুন্দর দিক নির্দেশনা রয়েছে।
নামায রোযা,হজ্জ ,যাকাত, পর্দা করা ইত্যাদি ফরয সমূহকে ফরয তথা অত্যাবশ্যকীয় জরুরী মনে না করা এবং গান, বাদ্য, সূদ, ঘুষ ইত্যাদি হারাম সমূকে হারাম মনে না করা এবং এগুলোকে মৌলভীদের বাড়াবাড়ি বলে আখ্যায়িত করা কুফরী। কেননা কোন ফরযকে বলে স্বীকার না করা বা কোন হারামকে জায়েয মনে করা কুফরী।
টুপী, দাড়ি,পাগড়ী মসজিদ, মাদ্রাসা, আলেম মৌলভী ইত্যাদিকে তুচ্ছ জ্ঞান করা,এগুলোকে হেয় দৃষ্টিতে দেখা, এগুলো নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্দ্রুপ করা মারাত্নক গোমরাহীন। ইসলামের কোন বিষয় তা যত সামান্যই হোক তা-নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্দ্রুপ করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়।
আধুনিক কালের নব্য শিক্ষিতদের কেউ কেউ মনে করেন যে,কেবল মাত্র ইসলামই নয়, হিন্দু, ইয়াহূদী, বৌদ্ধ নির্বিশেষে যে কোন ধর্মে থেকে মানবতা, মানব সেবা পরোপকার প্রভৃতি ভাল কাজ করলে পরকালে মুক্তি হবে। এরুপ বিশ্বাস করা মুফরী। একমাত্র ইসলাম ধর্ম অনুসরণের মধ্যেই পরকালীন মুক্তি নিহিত-একথায় বিশ্বাস রাখা ঈমানের জন্য জরুরী। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম হল ইসলাম। (সূরাঃ ৩-আলে ইমরানঃ১৯)
অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছে,
অর্থাৎ, কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম সন্ধান করলে কস্মিনকালেও তার থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। এমন ব্যক্তি পরকালে চির হতভাগাদের দলে থাকবে। (সূরাঃ ৩-আলে ইমরানঃ)
হাদীছে এসেছে- রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, অর্থাৎ ,হযরত মূসা নবীও যদি জীবিত থাকতেন,তবে আমার অনুসরণ না করে তাঁর ও কোন উপায় থাকত না।
বিঃ দ্রঃ অত্র গ্রন্থে যেসব বিষয়কে কুফরী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে ,কারও মধ্যে তা পরিলক্ষিত হলেই তাকে কাফের বলে ফতওয়া দিয়ে দেয়া যাবে না। কেননা কুফরের মধ্যে বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যদিও সব স্তরের কুফরী গোমরাহী এবং যার মধ্যে তা পাওয়া যাবে সে পথভ্রষ্ট ,গোমরাহ এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত বহির্ভূত ,তবে কুফরের কোন স্তর পাওয়া গেলে কাউকে কাফের বলে ফতওয়া দেয়া যায় তা বিজ্ঞ উলামা ও মুফতীগণই নির্ণয় করতে পারেন। এ ব্যাপারে সাধারণ মানষের পক্ষে বিজ্ঞ উলামা ও মুফতীগণের শরণাপন্ন হওয়া ব্যতীত নিজেদের থেকে কোন ফতওয়া বা সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা সমীচীন হবে না । কাউকে কাফের আখ্যায়িত করার জরুরী কয়েকটি মূলনীতি অত্র গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্জের শুরুতে বর্ণনা করা হয়েছে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের উপায়