Narrow selection

জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া কি জায়েজ?


05:58:01 06/16/2024

জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া কি জায়েজ?

অধুনা জ্যোতিঃশাস্ত্রের চর্চা বেশ ব্যাপকতা লাভ করেছে। ভাগ্য বিড়ম্বিত মানুষ সর্বশেষ পন্থা হিসেবে জ্যোতিষীদের দারস্থ হচ্ছেন এবং তাদের দেয়া পাথর বা অন্য কোন পরামর্শকে ভাগ্য ফেরানোর নিয়ামক ভেবে শেষ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।

অনেকে বিবাহ-শাদি ,ব্যবসা-বাণিজ্য, লেখা পড়া ,বিদেশগমন ,ঘর-বাড়িনির্মাণ ইত্যাদি জীবনের অনেক ক্ষেত্রের ভবিষ্যত শুভ অশুভ জানার জন্য জ্যোতিষীদের আগাম ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছেন এবং সাফল্য লাভ করবেন বলে আত্নাস্থ থাকছেন।

 

এভাবে জ্যোতিষীদের ভবিষ্যদ্বাণীকে তারা জীবন পরিচালনার গাইড বানিয়ে চলছেন। জ্যোতিষীদের ব্যবসাও ভাল চলছে। জ্যোতিঃশাস্ত্র চর্চায় ব্যবসা ভাল দেখে এ বিদ্যা শিক্ষার হারও তাই বেড়ে চলেছে। কিন্তু এ শাস্ত্রের হিসাব-নিকাশ ও তার ঈমান-আকীদা সংরক্ষণে প্রয়াসী এবং জীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলতে আগ্রহী একজন সচেতন মুসলমানকে অবশ্যই জানতে হবে।

জ্যোতিঃশাস্ত্র বলতে দুটো শাস্ত্রকে বোঝানো হয়।

 

(এক) নক্ষত্রবিদ্যা অর্থাৎ, চন্দ্র সূর্য ইত্যাদি গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান,আকৃতি ও গতি সম্পর্কে যে শাস্ত্রে আলোচনা করা হয় । এ শাস্ত্রকে ইংরেজীতে বলা হয় Astronomy।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন

 

(দুই) গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে যে শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়। এ শাস্ত্রে নক্ষত্রের গতি,স্থিতি অনুসারে ভবিষ্যত শুভ-অশুভ বিচার করা হয়। ভবিষ্যত শুভ অশুভ নিরুপন বিষয়ক এ শাস্ত্রকে ফলিত জ্যোতিষ বলা হয়।

আরবীতে ইলমুন্নুজূম বলতে বিশেষ ভাবে এই ফলিত জ্যোতিষ কেই বোঝানো হয়।আরবীতে বিশেষভাবে এটাকে ইলমু আহকামিন্নুজম বলা হয়। তবে সূর্যের বিভিন্ন ডিগ্রীতে অবস্থানের তারতম্যে আবহাওয়া  এবং শীত গ্রীষ্মের অর্থাৎ মৌসুমের যে পরিবর্তন ,চন্দ্রের প্রভাবে জোয়ার ভাটা ইত্যাদির যে,প্রাকৃতিক পরিবর্তন ,এটাকেও সাধারণ ভাবে ইলমুন্নুজূম-এর অন্তর্ভূক্ত ধরা হয়।এটাকে বিশেষভাবে ইলমুন্নুজূম তাবিয়ী বলা হয়।

 

বাংলা ইংরেজীতে এ শাস্ত্রের বিষয়গুলো ভূগোল শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়। চন্দ্র সূর্য় ইত্যাদিগ্রহ নক্ষত্রের গতি ও চলাচল সম্পকিত বিদ্যা যা সাধারণঃAstronomy-তে আলোচিত হয়ে থাকে , আরবীতে এটাকেও ইলমুন্নুজূম এর অন্তর্ভূক্ত ধরা হয়।এটাকে বিশেষভাবে ইলমুন্নুজূম হিছাবী বলা হয়।

 

Astronomy (নক্ষত্র বিদ্যা) শিক্ষা করা অর্থাৎ গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান আকৃতি ও গতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা ইসলামে নিষিদ্ধ নয়।নিষিদ্ধ হল ভাগ্যের ক্ষেত্রে গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষা করা বা তাতে বিশ্বাস করা। আল্লামা ইবনে রজব বলেনঃগহ্র নক্ষত্রের গতি ও চলাচল সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করার অনুমতি রয়েছে তবে (ভাগ্যের শুভ অশুভের ক্ষেত্রে) তার প্রভাব সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা (অল্প হোক বা বিস্তার) নিষিদ্ধ এবং হারাম।

 

যাহোকAstronomyশিক্ষা করা নিষিদ্ধ নয় বরং এর কিছু কিছু অনেক ক্ষেত্রে ধমীয় বিষয়ে উপকারে আসে। অজানা স্থানে রাতের বেলায় কেবলা নির্ধারণের জন্য উওর আকাশের ধ্রুবতারা (North Star) চেনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে । আর ধ্রুবতারা চিনতে হলে প্রয়োজন হয় সপ্তষি মন্ডল (Ursa major / Great Bear) চেনার এবং সন্ধার আকাশে,মধ্যরাতের আকাশে এবং শেষ রাতের আকাশে সপ্তর্ষিমন্ডলের অবস্থান কেমন থাকে তা জানার ।

 

দক্ষিণ আকাশেও এমন কিছু নক্ষত্র আছে যা দ্বারা দিক চেনা যায়। আর রাত কতটা গভীর হল তা বোঝা যায় কাল পুরুষ নামক তারকা মন্ডলের অবস্থান দেখে। কুরআনে কারীমে বাণিজ্যিক সফরের আলোচনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, তারকারাজি দ্বারাও তারা পথের (দিকের) পরিচয় লাভ করে থাকে। (সূরা নাহলঃ১৬) এ বক্তব্য দ্বারা এদিকে ইংগিত পাওয়া যায় যে, তারকারাজি সৃষ্টি করার আসল উদ্দেশ্য অন্য কিছু হলেও পথের (দিকের) পরিচয় লাভ এবং দিক নির্ণয় করতে পারাও অন্যতম উপকারিতা।

 

সহীহ বোখারীতে হযরত কাতাদাহ কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে যে, এই নক্ষত্রগুলি তিন উদ্দেশ্যে আল্লাহ এগুলিকে আকাশের সৌন্দর্য, শয়তানদের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রবৎ এবং পথ লাভ করার নিদর্শন বানিয়েছেন।এই তিনটি বিষয় ব্যতীত অন্য কোন রকম ব্যাখ্যা যে প্রদান করবে সে ভূল করবে,নিজের সময় ও লিপ্ততাকে নষ্ট করবে এবং যে বিষয়ে জানা নেই এমন বিষয় চর্চায় অযথা কষ্ট করবে।(বোখারী)

 

গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থানের দূরত্ব এবং ঈমান বৃদ্ধির কারণ ঘটে। হাজার হাজার কোটি আলোক বর্ষ দূরে থাকা জান্নাতের পরিধির বিশালতায় বিশ্বাস স্থাপন করা সহজ লাগে ,আর তখন সর্বনিম্ন জান্নাতী র জন্য জান্নাতে কমপক্ষে দশ দুনিয়া পরিমাণ স্থান থাকার কথা আর মোল্লাদের অন্ধবিশ্বাস বলে মনে হয় না এই যুক্তিতে যে, জান্নাতেএত স্থান আসবে কোথেকে?

 

আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে যে চিন্তা করার নির্দেশ হাদীছে এসেছে ,Astronomy- এর বিদ্যা সে চিন্তাকে বিকশিত করতে সহায়ক হয়ে থাকে। এ দৃষ্টিভংগীতে এ শাস্ত্র শিক্ষা করা গর্হিত হবে না বরং প্রশংসিত হবে। হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,তোমরা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা কর, আল্লাহর সওা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা কর না।(হিলয়া)

 

ইলমুন্নুজূম তবীয়ী সূর্যের বিভিন্ন ডিগ্রীতে অবস্থানের তারতম্যে আবহাওয়া ও মৌসুমের পরিবর্তন এবং শীত গ্রীষ্মের আবর্তন সম্পর্কিত বিদ্যাও ইসলামে নিষিদ্ধ নয়। এ বিদ্যা শিক্ষার জন্য ইসলামে নিষেধাজ্ঞাও নেই আবার তেমন ধর্মীয় উপকারিতাও নেই শুধু এতটুকু যে, এর ‍দ্বারা আল্লাহর কুদরত অনুধাবিত হয়ে থাকে।

 

এক মৌসুমে দিন ছোট রাত বড়,আবার অন্য মৌসুমে দিন বড় রাত ছোট হয়ে থাকে, এটাকে আল্লাহ তাআলা তাঁর কুদরতের আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন । করআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,তুমি রাতকে দিনের ভিতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভিতরে প্রবেশ করাও।

 

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে ,নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও ‍দিনের আবর্তনে (কুদরতের) নির্দশন রয়েছে বোধ সস্পন্ন লোকদের জন্য। (সূরাঃ ৩-আলু ইমরানঃ১৯০)

 

এখানে রাত ও দিনের আবর্তন বলতে যেমন একের গমন ও অপরের আগমন অর্থ বোঝায়, তেমনী কম-বেশী হওয়ার অর্থও বোঝায় । যেমন শীত কালে রাত ও দীর্ঘ এবং দিন খাটো হয় ,গরম কালে তার বিপরীত । অনুরুপ এক দেশ থেকে অন্য দেশে রাত দিনের দৈর্ঘে তারতম্য হয়ে থাকে।

 

যেমন উওর মেরুর নিকটবর্তী দেশগুলোতে দিবাভাগ উওরমেরু থেকে দূরবর্তী দেশের তুলনায় দীর্ঘ হয়। এসব কিছুই আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন। ইলমুন্নুজূম হিছাবী অর্থাৎ চন্দ্র সূর্য ইত্যাদির গতি,কক্ষপথ ও চলাচল সম্পর্কিত হিসাব নিকাশের বিদ্যা । জ্যোতিঃশাস্ত্র (Astronomy,Astrology) ও ভূগোল সবটাতেই এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে। ইসলাম এরুপ একটা হিসাব নিকাশের তথ্য মৌলিক ভাবে স্বীকার করেছে তবে তার বিস্তারিত বিবরণ এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ প্রদান থেকে বিরত রয়েছে। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,

সূর্য ও চন্দ্র হিসাব মত চলে।

 

এ আয়াতের উদ্দেশ্য হল- সূর্য ও চন্দ্রের গতি এবং কক্ষ পথে বিচরণের অটল ব্যবস্থা একটি বিশেষ হিসাব ও পরিমাণ অনুযায়ী চালু রয়েছে । সূর্য ও চন্দ্র পত্যেকের পরিক্রমের আলাদা আলাদা হিসাব রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের হিসাবের উপর সৌর ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এসব হিসাবও এমন অটল ও অনড় যে, লাখো বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও এতে এক মিনিট বা এক সেকেন্ডের পার্থক্য হয়নি।

 

এক আয়াতের বলা হয়েছে,

তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি সূর্যকে বানিয়েছেন উজ্জল আলোকময় আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলোকময়। অতৎপর নির্ধারিত করেছেন তার জন্য মনযিলসমূহ যাতে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব ।

 

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা চন্দ্র সূর্যের চলাচলের জন্য বিশেষ সীমানা নির্ধারণ করার তার নিজস্ব কক্ষপথে পরিক্রমণ সমাপ্ত করে ফেলে ,সেহেতু তার মনযিল হল ত্রিশ অথবা উনত্রিশটি । তবে যেহেতু চাঁদ প্রতিমাসে একদিন লকায়িত থাকে, তাই সাধারণতঃ চাঁদের মনযিল আঠাশটি বলা হয়। আরবের প্রাচীন জাহেলিয়াত যদগে এবং জ্যোতির্বিদদের মতেও এই মনযিগুলির নাম সেসব নক্ষত্রের সাথে মিলিয়ে রাখা হয়েছে যেগুলো সেসব মনযিলের নিকটবতী স্থানে অবস্থিত ।

 

কুরআল হাদীছে এ সম্পর্কে বিসন্তারিত কিছু বলা হয়নি। কেননা এগুলোর খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ অস্কশাস্ত্রর হিসাবাদির উপর নির্বরশীল। আর ইসলাম তার বিধি-বিধানের ভিত্তি অস্কশাত্রের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণের উপর রাখেনি। যেমন চাঁদের হিসাবে বছর,মাস ওদিন তারিখ নির্ধারিত হয় এবং এর সাথে ইসলামের অনেক বিধি বিধানের সম্পর্ক রয়েছে,বিন্তু চাঁদ হল কি হর না তার ভিত্তি গণিতিক হিসাবের উপর নয় বরং কেবল চাঁদ দেখা ও প্রত্যক্ষ করার উপর রাখা হয়েছে।

 

যেহেতু এসব খুটিনাটি হিসাবের সাথে ইসলামী কোন বিধানের সম্পর্ক রাখা হয়নি। তাই এগুলি সম্পর্কে বিদ্যার্জন ইসলামের দৃষ্টিতে অনর্থক । চাঁদ কেন বাড়ে কমে, এরকম বৃদ্ধি আন্তগোপন ও উদয়ের রহস্য কি? এ সম্পর্কে কতিপয় সাহাবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করলে তার জওয়াবে নাযিল হয়।

 

তুমি বলে দাও ,এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্জের সময় ঠিক করার মাধ্যম-

মুফতী শফী সাহেব (রহঃ) লিখেছেন,যে, এ জওয়াব ব্যক্ত করেছে যে তোমাদের প্রশ্ন অনর্থক । এ রহস্য জানার উপর তোমাদের কোন ইহলৌকিক ও পারলৌকিক বিষয় নির্ভরশীল নয়। তাই তোমাদের দর্মীয় ও পার্থিব প্রয়োজনের সাথে সম্পর্ক রাখে এমন প্রশ্নই করা দরকার।

 

ফলিত জ্যোতিঃশাস্ত্র (Astrology) যাতে গ্রহ নক্ষত্রের গতি ,স্থিতি, সন্চার অনসারে ভবিষ্যত শুভ-অশুভ নিরুপণ করা হয়, ভবিষ্যত শুভ-অশুভ বিচার করা হয়। এ শাস্ত্র সম্পর্কে ইসলাম কঠোর নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে। ইসলামী আকীদা অনুসারে গ্রহ নক্ষত্রের নিজস্ব কোন প্রভাব বা ক্ষমতা নেই। সূতরাং ভাগ্য তথা শুভ অশুভ গ্রহ নক্ষত্রের নিজস্ব প্রভাব ঘটে-এরুপ বিশ্বাস রাখা শিরক ও কুফর। গ্রহ নক্ষত্রের মধ্যে আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত কোন প্রভাব থাকলে থাকতেও পারে।

 

কিন্তু তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। যা কিছু বলা হয় তা সবই কাল্পনিক। যদি প্রকৃতই এরুপ কোন প্রভাব থাকেও,তবু ও তা আল্লাহ কর্তৃক-গ্রহ নক্ষত্রের নিজস্ব ক্ষমতা নয়। অতএব শুভ-অশুভ মৌলিকভাবে আল্লাহরই ইচ্ছাধীনও তাঁরই নিয়ন্ত্রণে।

যে ব্যক্তি জ্যোতিঃশাস্ত্রের একটা অধ্যায় শিক্ষা করল,সে কুফরের একটা অধ্যায় শিক্ষা করল।

এ হাদীছে জ্যোতিঃশাস্ত্র শিক্ষা করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং জ্যোতিঃশাস্ত্রকে কুফর বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অন্য এক হাদীছে জ্যোতিঃশাস্ত্রে বিশ্বাস করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে ইরশাদ হয়েছে,

আমার পরে আমার উম্মতের ব্যাপারে আমি দুটি বিষয়ের আশংকা করছি-তাকদীরে অবিশ্বাস ও গ্রহ নক্ষত্রের বিশ্বাস।

অন্য এক হাদীছে গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে নিষেধ করা হয়েছে।ইরশাদ হয়েছেঃ

তোমরা গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইবে না।

অন্য এক হাদীছে গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কিত আলোচনা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

 

তাকদীর সম্পর্কে চুলচেরা আলোচনা উঠলে তা থেকে বিরত থাকবে। গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা উঠলে তা থেকে বিরত থাকব। আমার সাহাবীদের সমালোচনা উঠলে তা থেকে বিরত থাকবে। উপরোক্ত চারটি হাদীছ থেকে বোঝা গেল গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বাস করা, এ সম্পর্কিত বিদ্যা শিক্ষা করা,এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া এবং এ সবের আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া সবই নিষিদ্ধ।

 

গ্রহ নক্ষত্রের নিজস্ব প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করা কুফরী তবে ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেছেন,যদি কেউ আল্লাহকেই মূল নিয়ন্ত্রা বলে বিশ্বাস করে, তবে আসবাব বা উপকরণের মাধ্যমে সবকিছু সংঘটিত করছেন বলে মনে করলে তাতে কোন ক্ষতি নেই। সে ক্ষেত্রে হাদীছের নিষেধাজ্ঞা ঐ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য হবে যে গ্রহ নক্ষত্রের নিজস্ব প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করে।

 

তবে বিশ্বাস যাই থাকুক কোন অবন্থাতেই কোন প্রভাবকে কোন গ্রহ নক্ষত্রের প্রতি সম্পৃক্ত করার অনুমতি নেই।তা ছাড়া যে ব্যাখ্যায় ইমাম শাফিঈ (মহঃ) গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাস করার অনুমতি দিয়েছেন সাধারণ ভাবে উলামায়ে কেরাম অনুরুপ ব্যাখ্যা সহকারেও তা বিশ্বাস করাকে হারাম বলেছেন। আর বিনা ব্যাখ্যায় গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাস করাকে কুফর বলে আখ্যায়িত করেছেন ।গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাবের পশ্চাতে আল্লাহকে মূল নিয়ন্ত্রা মেনে নেয়ার পরও জ্যোতিঃশাস্ত্র (Astrology) চর্চার ব্যাপারে পূর্বোক্ত কঠোর নেতিবাচক মনোভাব অব্যাহত থাকবে। ইমাম গাযালী (রহঃ) এহয়াউ উলূমিদ্দীন গ্রন্থে তার তিনটি কারন উল্লেখ করেছেন

 

  1. গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাবের আলোচনা শুনতে শুনতে ক্রমান্বয়ে অন্তরে তার নিজস্ব প্রভাব থাকার ধারণা জন্ম নিবে, এভাবে ঈমান বিনষ্ট হবে।
  2. এ বিদ্যায় কোন উপকারিতা নিহিত নেই। অতএব এটা একটা অনর্থক বিষয়ে মূল্যবান সময় অপচয় করার নামান্তর।
  3. এ শাস্ত্র কোন কিছু যুক্তি ,চাক্ষুস প্রমাণ বা কুরআন হাদীছের দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয় ,বরং এ শাস্ত্রের সবকিছুই আনুমানিকও কাল্পনিক।
  4. এ শাস্ত্রের সবকিছুই যে কাল্পনিক ,যুক্তি বা বিজ্ঞান নির্ভর নয় ও দলীল প্রমাণ বিতীন,তার কিন্চিত ব্যাখ্যা নিম্নে প্রদান করা হল।

 

প্রথমতঃধরা যাক রাশির কথা । জ্যোতিষ শাস্ত্র ততে রাশি হল বারটি যথাঃ মেষ,বৃষ,মিথুন,কর্কট,সিংহ ,কন্যা,তুলা, বৃশ্চিক ধনু,মকর ,কুম্ভ ও মীন। সূর্য বার মাসে বারটা রাশিতে অবস্থান করে বিধায় রাশির সংখ্যা বারটা। আর সূর্যের যে রাশিতে অবস্থান কালে কারও জন্ম হয় তাকে সেই রাশির জাতক/ জাতিকা বলা হয়। কিন্তু রাশি সূর্যের অবস্থানের প্রেক্ষিতে কেন হবে চন্দ্র বা অন্য কোন গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থানের প্রেক্ষিতে কেন হবে না তার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা দলীল সাপেক্ষ ব্যাখ্যা নেই। এই রাশির নামগুলিও কাল্পনিক ,এসব রাশির যে প্রতিক সাব্যস্ত করা হয়েছে তাও কাল্পনিক। এক এক  রাশির যে নম্বর এবং তার যে মূল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধরে নেয়া হয়েছে তাও কাল্পনিক । এসব সম্পর্কে কুরআন হাদীছে কোন দলীল তো নেই ই কোন ল্যাবরেটরিতে বৈজ্ঞানিক ভাবেও এগুলো প্রমানিত নয়।

 

দ্বিতীয়তঃধরা যাক সংখ্যা তত্ত্বের কথা। জ্যোতিষীগণ নিউমারোলজি বা সংখ্যা তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যত শুভ অশুভ নির্ণয় তথা ভাগ্য বিচার করে থাকেন। সংখ্যা জ্যোতিষের মূল কথা হল-১ থেকে৯-এই নয়টি সংখ্যা হল মৌলিক এবং এক এক সংখ্যার এক এক ধরনের প্রভাব রয়েছে। সেমতে প্রত্যেক মানুষ নয় সংখ্যার যে কোন এক সংখ্যার জাতক /জাতিকার হবেন এবং যিনি যে সংখ্যার জাতক/জাতিকা হবেন তার জীবনে ঐ সংখ্যার প্রভাব এবং ঐ সংখ্যার চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকবে।

 

যেমন বলা হয় ১ সংখ্যার জাতক/জাতিকারা অগ্রপথিক এবং অভিযাত্রিক হবেন,তাদের মধ্যে একটা সহজাত সৃজনশীলতা প্রচ্ছন্ন থাকবে ইত্যাদি। ২ সংখ্যার জাতক /জাতিকারা ভদ্র ও বিনয়ী তারা কল্পনা প্রবণ,রোমান্টিক ও শিল্পানুরাগী হবেন ইত্যাদি। এখন কথা হল এই যে এক এক সংখ্যার একএক ধরনের বৈশিষ্ট্য সাব্যস্ত করা হল এটা কাল্পনিক ছাড়া আর কি? আর মানুষের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যকে এই নয়-এর গন্ডিতে সীমাবদ্ধ করার কোন যুক্তি বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি শুধু কল্পনার অন্ধ অনসরণ ছাড়া?

 

তৃতীয়তঃ আলোচনা করা যাক জাতক /জাতিকা তা নির্ধারণের পদ্ধতি প্রসঙ্গে। জ্যোতিঃশাস্ত্র মতে কে কোন সংখ্যার জাতক/জাতিকা তা নির্ধারণ করা হয় তার জন্ম তারিখ (ইংরেজি তারিখ) দেখে। জন্ম তারিখ ১ থেকে ৯ পর্যন্ত যেটা হবে সেটাই হল তার জন্ম সংখ্যা। আর ৯-এর উপরের যৌগিক সংখ্যা হলে সেই যৌগিক সংখ্যাকে পারস্পরিক যোগ দিতে দিতে যে মৌলিক সংখ্যা বের হবে সেটাই হবে জন্ম সংখ্যা এবং সে হবে ঐ সংখ্যার জাতক/জাতিকা ।

 

যেমন ১৮ তারিখে কারও জন্ম হলে সে হবে (১+৮=৯) ৯ সংখ্যার জাতক/জাতিকা। ২১ তারিখে জন্ম হলে সে হবে (২+১=৩) ৩ সংখ্যার জাতক/জাতিকা। ২৯ তারিখে জন্ম হলে সে হবে (২+৯=১১-১+১=২) ২সংখ্যার জাতক /জাতিকা।

 

জ্যোতিঃশাস্ত্র মতে জাতক/জাতিকাদের আরও দুই ধরনের সংখ্যা আছে। তাহল কর্ম সংখ্যা ও নাম সংখ্যা। জন্ম সংখ্যা হচ্ছে জন্ম তারিখ /তারিখের যোফল,আর কর্ম সংখ্যা হচ্ছে জন্ম বছর ,জন্ম মাস ও জন্ম তারিখ এই সব কয়টার যোগফল। যেমন কেউ জন্ম গ্রহণ করল ১লা নভেম্বর ১৯৪৮ সালে তাহলে নভেম্বর যেহেতু ১তম মাস তাই কর্ম সংখ্যা বের হবে এভাবে১+১+১+১+৯+৪+৮=২৫

আবার ২+৫=৭

অকএব ১-১১-১৯৪৮ সালে জন্ম গ্রহণ কারীর জন্ম সংখ্যা ১ আর কর্ম সংখ্যা হল ৭। জ্যোতিষীদের ধারণা হল জন্ম সংখ্যা নির্দেশ করে জাতক/জাতিকার সহজাত চরিত্র-বৈশিষ্ট্য। আর কর্ম সংখ্যা থেকে জানা যায় জাতক /জাতিকার জীবনে কোন কর্শ পস্থা অবলম্বন করা উচিত,কোন পেশায় তার অগ্রগতি নিহিত।কোন পথে অগ্রসর হয়ে সে সাফল্য লাভ করতে পারবে ইত্যাদি। জন্ম সংখ্যার ন্যায় কর্ম সংখ্যারও ১ থেকে ৯ পর্যন্ত মোট ৯ টি।

 

এখন কথা হল জন্ম সংখ্যা দ্বারা যে জাতা/জাতিকা নির্ধারণ হবে তার কি প্রমাণ? আর কর্ম সংখ্যার জন্য জন্মের তারিখ দেখা হবে সন মাস যোগ করা হবে এবং জন্ম সংখ্যার জন্য শুধু জন্মের তারিখ দেখা হবে সন মাস যোগ করা হবে না- এসবের ভিত্তি কি? স্পষ্টতঃই এখানে কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকা সম্ভব নয়। কারণ এটা কোন পদার্থগত বিষয় নয় । থাকলে কোন ঐশী দলীল থাকতে পারত, তাও অনুপস্থিত। তাহলে কল্পনা ব্যতীত আর কি ভিত্তি রয়ে গেল? আর একটা কথা চিন্তা করা যায়।

 

তাহল জন্ম সংখ্যা কর্ম সংখ্যা এসবই বের করা হয় ইংরেজী তারিখ ও ইংরেজী সন মাস থেকে। ইংরেজী সন গণনা করা হয় ঈসা (আঃ) এর জন্মের ভিত্তিতে শুরু করা হিসাবের সাথে সারা পৃথিবীর মানুষের জন্ম সংখ্যা ,কর্ম সংখ্যা তথা চরিএ ভাগ্য সব কিছুর সম্পর্ক-এরই বা কি প্রমাণ?পৃথিবীর আদি থেকে যে আরবী মাস ও সন গণনা শুরু তার সাথে সম্পর্কিত হলেও না হয় ক্ষণিকের জন্য কিছুটা মেনে নেয়ার চিন্তা করা যেত।জ্যোতিষীদের ধারণা মতে জন্ম সংখ্যা ও কর্ম সংখ্যার ন্যায় মানুষের রয়েছে একটি নাম সংখ্যা। প্রত্যেকের নামের ইংরেজী  হরফগুলোর মান সংখ্যা থেকে বের করা হয় নাম সংখ্যা । ইংরেজীতে হরফের মান সংখ্যা নিুরুপঃ

1          2          3           4           5           6           7             8

A         B          C          D          E           U           O           F

i          K           L           M         H           V           Z           P

J          R            S          T           N           W

Q                       G                        X

y

 

জ্যোতিষীদের ধারণা- প্রত্যেকের নামের মধ্যে তার জীবনের লক্ষ্য ও মিশন সম্পর্কে নির্দেশনা লুকিয়ে থাকে। কি কি গুণাবলী অর্জন করতে হবে কি কি কর্জন করতে হবে,কোন কোন ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে নামের সংখ্যার মধ্যে এসব কিছুরই দিক নির্দেশনা থাকে।এ ক্ষেত্রেও জ্যোতিষীগণ ১ থেকে ৯ মোট ৯ টি সংখ্যা নির্ধানণ করে প্রত্যেক সংখ্যার জন্য এক এক ধরনের দিক নির্দেশনা করে রেখেছেন।

 

জ্যোতিষীগণ কি এর কোন জবাব দিতে পারবেন যে ইংরেজী এক এক হরফের এক এক মান দেয়া হয়েছে-এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কি? কিংবা এর স্বপক্ষে কোন ঐশী প্রমাণ আছে কি? আর নাম সংখ্যার মধ্যে যদি কোন জীবনের দিক নির্দেশনা লুকিয়ে থাকতও তবে তা বের করতে ইংরেজী হরফের আশ্রয় নেয়া হবে কেন?অন্য কোন ভাষার হরফ গ্রহণ করা যাবে না তার কি প্রমান? অন্য ভাষার হরফে গেলে যে নাম সংখ্যায় পার্থক্য দেখা দিবে তার সমাধান কি?

 

কেউ কেউ কুরআন হাদীছের ভাষা এবং প্রথম মানব আদম (আঃ)-এর ভাষা ও জান্নাতের ভাষা আরবী এর হিসাবে আরবী হরফের মান দেখে নাম সংখ্যা বের করে থাকেন। কিন্তু মনে রাখা দরকার আরবী হরফের যে মান ধরা হয় তাও কুরআন-হাদীছ বা বৈজ্ঞানিক তথ্যে প্রমাণিত নয় তাছাড়া আরবী হরফ অনুযায়ী নাম সংখ্যা বের করার পর ঐ সংখ্যার যে প্রভাব বা দিক নির্দেশনা সাব্যস্ত করা হচ্ছে তাতো জ্যোতিষীদেরই সাব্যস্ত করা কাল্পনিক ব্যাপার।

 

এমনি ভাবে জ্যোতিঃশাস্ত্রের প্রত্যেকটা উপাত্ত সম্পর্কে সামান্য চিন্তা করলেই প্রতিভাত হবে যে,তা একান্তই কল্পনা প্রসূত এবং দলীলহীন  আন্দাজ মাত্র।

 

মুফতী শফী সাহেব (রহঃ) জওয়াহেরুল ফেকাহ ৩য় খন্ডে লিখেছেন যে আল্লামা মাহমূদ আলূছী তাফসীরে রুহুল মাআনীতে ঐতিহসিক এমন বহু ঘটনার উল্লেখ করেছেন যেসব ক্ষেত্রে জ্যোতিঃশাস্ত্রের স্বীকৃত নীতি অনযায়ী ঘটনা যা ঘটান ছিল বাস্তবে সম্পূর্ণ তার বিপরীত ঘটেছে । বস্তুতঃ এ শাস্ত্রের বহু বড় বড় ব্যক্তিত্ব শেষ পর্যন্ত অকপটে একথা কলতে বাধ্য হয়েছেন যে, এ শাস্তের পরিণাম অনুমানের উর্ধ্বে নয়। প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ কুশিয়ার দায়লামী তার রচিত জ্যোতিঃশাস্ত্র বিষয়ক গ্রস্থ-আল মুজমাল ফিল আহকাম য়ে লিখেছেন যে,জ্যোতি:বিদ্যা হল একটা দলীলহীন বিদ্যা ,এতে মানুষের কল্পনা ও অনুমানের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

 

দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখেই প্রবন্ধ শেষ করছি। একটা প্রশ্ন হল জ্যোতি:বিদদের সব ভবিষ্যদ্বাণী না হলেও কিছু কিছু তো বাস্তবে সত্যে পরিণত হয়। এতে করে বোঝা গেল এ শাস্ত্রের ভিত্তি রয়েছে, সবটাই অনুমান ভিত্তিক নয়। এ প্রশ্নের একটা উত্তর হল যে কোন বিষয়ে দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা অর্জন হলে মানুষ হাবভাব ও লক্ষণ দেখে সে সম্বন্ধে কিছু ভবিষ্যত-বানী করতেও পারে ,যার কিছুটা খেটেও যায়।

 

তাই বলে সেটা কোন প্রতিষ্ঠিত শাস্ত্র বলে স্বীকৃতি পেতে পারে না । এ প্রশ্নের দ্বিতীয় উত্তর হল যা একটি প্রসিদ্ধ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, আসমানে যখন পৃথিবীর ফয়সালা ঘোষিত হয় তখন গুপ্তসারে জিন শয়তানরা তার কিছুটা শুনে নিতে সক্ষম হয় । তারা সেই শ্রুত তথ্যের সাথে আরও শতটা মিথ্যা যোগ করে গণক ও জ্যোতিষীদের অন্তরে তা প্রক্ষিপ্ত করে, আর জ্যোতিষী-ও গণকরা তা মানুষদেরকে শোনায়। পরে দেখা যায় কিছুটা সত্যে পরিণত হয়। এটা হল সেই অংশ যা আসমান থেকে জিন শয়তানরা উদ্ধার করেছিল। হাদীছটি বোখারী,মুসলিম ,ইবনে মাজা ও মুসনাদের আহমদে বর্ণিত হয়েছে।

 

দ্বিতীয় প্রশ্ন হল ভবিষ্যত শুভ অশুভের ক্ষেত্রে গ্রহ-নক্ষত্রের কি আদৌ কোন প্রভাব নেই? জড়জগতের অনেক কিছুর ক্ষেত্রে উর্ধ্ব জগতের অনেক কিছুর যেমন প্রভাব রয়েছে ,তেমনি মানুষের ভাগ্য তথা শুভ-অশুভ এর ক্ষেত্রে গ্রহ-নক্ষত্রের কিছু প্রভাব থাকবে তাতে অসম্ভবতা কি? এরকম প্রশ্নের উত্তর হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহঃ) হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা গ্রন্থে প্রদান করেছেন যে ,শরীআত গ্রহ-নক্ষত্রের এরুপ প্রভাবের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেনি, তবে তা চর্চা করতে নিষেধ করেছে।

 

এই চর্চা করতে কেন নিষেধ করা হয়েছে তার কারণ সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। সারকথা শুভ অশুভ ক্ষেত্রে গ্রহ নক্ষত্রের কোন প্রভাব থাকলে থাকতেও পারে ,তবে তা কোন দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়; না কুরআন হাদীছের দলীল প্রমাণ ,না চাক্ষুস কোন দলীল প্রমাণ ,না বৈজ্ঞানিক কোন দলীল প্রমাণ। যা কিছু এ শাস্ত্রের উপাত্ত ও মূলনীতি ,তা সবই কাল্পনিক এবং যা কিছু বলা হয় তা সেই কল্পনা প্রসূত উপাত্ত নির্ভর বা কিছুটা অভিজ্ঞতার সংমিশ্রনযুক্ত,প্রকৃত দলীল সাপেক্ষ নয়।

 

এ বিষয়ে সর্বশেষ আর একটা বিষয় জানার হলঃ কোন পাথর (Stone) ভাগ্য বদলাতে পারে ,কোন গ্রহকে খুশী করে তার অনুকূলে আনতে পারে এরুপ বিশ্বাস করা শিরক এর পর্যায়ভুক্ত । তবে পাথরের কোন বিবিনণ ক্ষমতা (Rediative activity) যদি বৈজ্ঞানিক ভাবে শারীরিক উপকারে আসে বলে প্রমাণিত হয়, তবে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করায় কোন অসুবিধা নেই।

 

এ প্রবন্ধে উল্লেখিত তথ্যসূত্র

আকাশ ভরা সূর্য তারা,এ এম হারুন অর রশীদ

তারামন্ডল পরিচয় ও বিশ্বের বিশালতা,কামিনী কুমার দে নিউমারোলজী সংখ্যা / সৌভাগ্যের চাবিকাঠি, মহাজাতক শহীদ আল-বোখারী।

 

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color