কাশ্মীর সমস্যা ও তার সমাধান - Kashmir problem and its solution
15:30:15 12/04/2023
কাশ্মীর সমস্যা ও তার সমাধান
الْحَمْدُ لِاهلِهِ وَالصَّلوةُ لِأَهْلِهَا أَمَّا بَعْدُ فَأَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ بِسمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا الحَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْجِهَادُ مَاضٍ إلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ أَوْ كَمَا قَالَ عَلَيْهِ الصَّلوةُ وَالسَّلَامُ .
ছাত্র ও সর্বস্তরের আপামর জনতা কর্তৃক আয়োজিত অন্যকার বর্ণাঢ্য সেমিনারের মাননীয় সভাপতি, ন্যায় নিষ্ঠার মাইলফলক বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী ও আপনারা যারা শুনছেন। নির্ধারিত আলোচ্য বিষয়টিকে সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরার প্রয়াস চালাব ইনশাল্লাহ।
প্রিয় সুধীমণ্ডলী।
বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটের এমন এক যুগ সন্ধিক্ষণ আমরা অতিক্রম করছি, যখন সমগ্র বিশ্ব মানচিত্র থেকে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার সুগভীর চক্রান্ত চলছে। মুসলমান মুসলমানদের বিরোধিতা করছে। প্রতিটি মুসলিম জনপদ থেকে ভেসে আসছে শুধু একটি চিৎকার ত হে আমাদের রব! আমাদেরকে এই জালিম জনপদ থেকে বের করে দাও। বসনিয়া, চেচনিয়া, কসোভো, ফিলিস্তীন আরাকান, ইরাক, আফগানিস্তান, লেবানন, কাশ্মীরসহ সমগ্র বিশ্বে চলছে একই তাণ্ডব লীলা ।
প্রিয় শ্রোতামণ্ডলী।
পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, সবুজ মেঘলা প্রকৃতির অপরূপ লীলাক্ষেত্র নৈসর্গিক সৌন্দর্য নিয়ে গৌরাবান্বিত এক কালের ভূ-স্বর্গ কাশ্মীর। সেই কাশ্মীরের মুসলমানদের কথা মনে করতে গেলে হৃদয় কেঁপে ওঠে। ধমনীর স্পন্দন রুদ্ধ হয়ে আসে। আঁখি যুগল অশ্রু সিক্ত হয়ে উঠে। কিছু বলতে গেলে ভাষা রুদ্ধ হয়ে আসে। প্রতিনিয়ত ভারতের মালউন সেনাবাহিনী অন্যায়ভাবে কাশ্মীরী ভাইদের গুলি করে পাখির ন্যায় হত্যা করছে। সুপ্রিয় বন্ধুরা আমার!
আমি আপনাদের সামনে কাশ্মীরের বিগত ৫০ বছরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরতে চাই। অতীত ইতিহাসের পাতায় চোখ মেললেই আমরা দেখতে পাই, এই কাশ্মীরবাসী শান্তির সাথে নিঃশ্বাস ফেলতে পারেনি। পাক ভারতের স্বাধীনতাকামী সূর্য সন্তানেরা বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়লে ইঙ্গ বৃটেন শ্বেত সন্ত্রাসীরা গাট্টি বোচকা গুটিয়ে পালিয়ে যায়। যাওয়ার আগে তারা উপমহাদেশকে দুটি ভাগে ভাগ করে যায়। (১) পাকিস্তান (২) ভারত। কিন্তু কাশ্মীর থেকে যায় রহস্যের চাদরে পুরো আবৃত।
সুধীমণ্ডলী
বৃটিশের শেষ গভর্নর লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন, কুচক্রী ও ধূর্ত হিন্দু প্রধানমন্ত্রী, পণ্ডিত জওহর লাল নেহেরু ও মিঃ মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহর যুক্ত ইশারায় এ কথা বলা হয় যে, কাশ্মীর সমস্যাটির নিরসন করবে দেশের অধিবাসীরাই। কাশ্মীরে গণভোট হবে, জনগণ চাইলে তারা থাকবে ভারতের সাথে, না হয় পাকিস্তানের সাথে। অন্যথায় স্বায়ত্ব শাসনের পক্ষে ভোট দিবে।
নিখিল ভারতসহ বিশ্ব মুসলিম সংস্থা বুঝেছিল এবার বুঝি কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু হায় সবই শুভংকারের ফাঁকি। পাক সরকার যখন ভোটের জন্য চাপ প্রয়োগ করে তখন ভারত প্রশাসন বলে যে, হ্যাঁ অচিরেই আমরা এর ব্যবস্থা করছি। কিন্তু ভারত সরকারের এই অচিরেই প্রায় ১০ বছরেও শেষ হলো না। অবশেষে ১৯৫৮ সালে কাশ্মীর ইস্যুটি জাতিসংঘে উত্থাপিত হলে লাজ শরমের মাথা খেয়ে বেহায়ার দল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভারতের পক্ষে ভোট দেয়। এরপর ১৯৬৫ সালে কাশ্মীর সমস্যা জটিল অধ্যায়ে পর্যবসিত হলে পাক ভারত যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
প্রিয় ভাইয়েরা আমার!
এই যুদ্ধে পাকিস্তান কাশ্মীরের বহুল অংশ দখল করে নেয় যা আজ আযাদ কাশ্মীর নামে খ্যাত। সারা বিশ্বের মানবতাবাদী শান্তিকামী মানুষগুলো ভারত সরকার ও জাতিসংঘকে বুঝানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাকে বুঝানো সম্ভব হয়নি। এমনিভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতের কংগ্রেস সরকার আন্তর্জাতিক সকল আইন অমান্য করে ৩/৪ লক্ষ ভারতীয় সৈন্য লেলিয়ে দিয়েছে কাশ্মীরীদের বিরুদ্ধে। সেখানে প্রতি বর্গমাইল এলাকায় ১০০ জন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অসংখ্য স্বাধীনতাকামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। বাড়ী বাড়ী তল্লাশীর নামে হাজার হাজার মা-বোনকে ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে।
বন্ধুরা আমার!
ভূস্বর্গ কাশ্মীরে আজ মুসলমানদেরকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করছে। হাজার হাজার যুবককে ঘর থেকে বের করে এনে অন্যায় ভাবে জেল খানায় আবদ্ধ করছে, যার কারণে নববধূরা বিধবা হয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। ভারত সরকার সেখানে হিন্দুদের আবাসনের ব্যবস্থা করে কাশ্মীরের স্বাধীনতা রোধ করতে চাচ্ছে।
এহেন পরিস্থিতিতে আজ আমাদের সরল মনে প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে এই সমস্যার সমাধান কী? আমি বলতে চাই আলোচনা-সমালোচনা বৈঠক ঠকবাজি আর বাটপারীর মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না। বরং এর একমাত্র সমাধান দিতে পারে আল-কুরআন। তাই তো ইরশাদ হচ্ছে-
اطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ -
অর্থাৎ, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের একমাত্র মুক্তির পথ আযাদী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া এবং আযাদীর যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। তাহলেই অবসান ঘটবে সমস্ত নির্যাতনের। ইথারের মৃদু সমীরণে আবার হিল্লোলিত হবে। মহান আল্লাহ কাশ্মীর সমস্যার আশু ও চিরস্থায়ী সমাধান করে দিন। সেখানকার জনগণ শান্তি ও নিরাপত্তাসহ জীবন যাপন করুক। এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আমার আজকের আলোচনা শেষ করছি।
واخر دعوانا ان الحمد لله رب العلمين
পরিশেষে কবিতার দুটি চরণ দ্বারা শেষ করছি-
ধ্রিম ধ্রিম বাজে ঘন দুন্দভী দামামা হাঁকে বীর দেগা শির, নেহী দেগা আমামা।