খাদীজা রা. এর ঘরে নবীজী - Khadija Ra. Prophet in its house
06:48:40 12/11/2023
খাদীজা রা. এর ঘরে নবীজী : রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দারুণ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেন। কেননা তিনি এর আগে কখনোই এমন বাণী শুনেননি কিংবা এর সঙ্গে আগে তার কখনো কোনো সম্পর্কও ছিল না। কারণ বহুদিন হলো পৃথিবীতে নবী আসার ধারাবাহিকতা বন্ধ ছিল। জাযীরাতুল আরবের সুদীর্ঘ কালের ইতিহাসেও কোনো নবীর আগমন ঘটেছিল না। আর তাই বছরের পর বছর ধরে নবী কিংবা নবুওতের সঙ্গে আরবদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তাই তিনি ভয় পেয়ে গেলেন। তার হৃদকম্পন বেড়ে গেল। তিনি দ্রুত খাদীজা রা. এর ঘরে এসে বললেন, আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও! আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও!! কেননা আমি আমার জানের ভয় করছি।
খাদীজা রা. এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে সবকিছু খুলে বললেন। মনে রাখতে হবে, খাদীজা রা. ছিলেন একজন পরম বুদ্ধিমতী আর বিচক্ষণ নারী। তিনি আগ থেকেই নবী, নবুওত আর ফিরিশতা সম্পর্কে জানতেন। তিনি তার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা বিন নওফলের কাছে যেতেন। আর ওয়ারাকা তৎকালে প্রকৃত খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তাওরাত এবং ইঞ্জিল পাঠ করতেন। তিনি হাতে গনা আরও কিছু সঠিক বিবেক- বুদ্ধির অধিকারী মানুষের মতো পৌত্তলিক মক্কাবাসীর মূর্তিপূজা ঘৃণা করতেন।
দীর্ঘদিন ধরে খাদীজা রা. রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে ঘর-সংসার করে আসছিলেন। তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ জীবনের ছোট-বড় সমস্ত ঘটনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ছিলেন। আর তাই তিনি ছিলেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আখলাক-চরিত্র সম্পর্কে সর্বাপেক্ষা বেশি অবগত। তিনি রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাঝে উত্তম চরিত্র আর আখলাকের যে কারিশমা প্রত্যক্ষ করেছিলেন, তাতে তার নিশ্চিত আস্থা জমে গিয়েছিল যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত।
তাঁর সৃষ্টির মধ্য থেকে বিশেষভাবে নির্বাচিত। আর যার মধ্যে এই সকল গুণের সমাবেশ ঘটে, শয়তানের পক্ষ থেকে তার ওপর কোনো নিন্দার ভয় করা যায় না। তার ওপর জ্বিনের আসর কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। আর তাই এটা ছিল তার জানা আল্লাহ তাআলার হিকমত ও তার কুদরতের বিপরীত। আর তাই দৃঢ় আস্থা ও ঈমান আর শক্তি ও বলে বলীয়ান হয়ে জবাব দিলেন:
কখনোই না। আল্লাহর কসম! তিনি কখনোই আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। নিঃসন্দেহে আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন। আপনি মানুষের বোঝা বহন করেন। অসহায়কে সাহায্য করেন। মেহমানকে আপ্যায়ন করেন। আর আপনি সত্যের জন্য ভোগ করা ব্যথা আর বেদনাকে দূর করেন।