মদীনায় ইসলাম প্রচারের সূচনা
13:08:39 01/06/2025
মদীনায় ইসলাম প্রচারের সূচনা
একাধারে দশ বছর পর্যন্ত মহানবী সা. আরব গোত্রগুলোকে প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকলেন। আরবের কোন মজলিস, কোন সমাবেশ ছাড়েননি যেখানে গিয়ে মহানবী সা. তাদেরকে সত্যের দাওয়াত পৌঁছাননি। হজ্বের মৌসম, উক্কাজ বাজার এবং যিল মাজায ইত্যাদি স্থানে ঘরে ঘরে গিয়ে লোকদেরকে সত্যের দিকে আহবান করতে থাকলেন। কিন্তু তারা তার উত্তরে মহানবী সা. কে সব ধরনের কষ্ট দিতে লাগল এবং ঠাট্টা-মশকারী করতে থাকল এই বলে যে, প্রথমে নিজ গোত্রের লোকদেরকে মুসলমান বানাও তারপর আমাদের হেদায়েতের জন্য এস। এর উপর একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেল।
যখন আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলেন যে, ইসলামের প্রচার এবং উন্নতি হোক তখন মদীনা তায়্যিবা থেকে আউস গোত্রের কিছু লোকদেরকে মহানবী সা.-এর খেদমতে প্রেরণ করলেন। যাদের মধ্য থেকে ঐ বছর দুইজন আসআদ ইবনে যুরারা এবং যাকওয়ান ইবনে আব্দে কাইস ইসলামে দীক্ষিত হলেন। তারপর পরবর্তী বছর তাদের আরো কিছু লোক আসল যাদের মধ্য থেকে ছয় বা আট জন মানুষ মুসলমান হল।
সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি
নবী কারীম সা. তাদেরকে বললেন, তোমরা কি আল্লাহর নির্দেশ প্রচারে আমাকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে? তারা নিবেদন করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এখনও আমাদের আউস ও খাযরাজের মাঝে পরষ্পর গৃহ যুদ্ধ চলছে। যদি আপনি এ সময় মদীনায় আগমন করেন তাহলে আপনার বাইয়াতের উপর সকলেই ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না।
এখানো এক বছর এই ইচ্ছা স্থগিত রাখুন। সম্ভবত আমাদের পরস্পরে সন্ধি হয়ে যাবে এবং আউস ও খাযরাজ মিলে ইসলাম কবুল করবে। আগামী বছর আবার আমরা আপনার খেদমতে উপস্থিত হব। সে সময় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এসব ব্যক্তি মদীনায় ফিরে আসলেন। মদীনায় সর্বপ্রথম বনী যুরাইকের মসজিদে কুরআন পড়া হল ।
আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা ছিল যে, মদীনায় ইসলাম প্রচার হোক। সেই বছরই আউস ও খাযরাজের অধিকাংশ ঝগড়া মিটে গেল। পরবর্তী বছর হজ্বের মৌসুমে ওয়াদা মুতাবেক মক্কায় মহানবী সা.-এর খেদমতে বারজন ব্যক্তি উপস্থিত হল। যাদের মধ্যে দশজন খাযরাজ গোত্রের আর দুইজন আউস গোত্রের ছিল। এদের মধ্যে যে সমস্ত লোক গত বছর মুসলমান হয়নি তারা এ বছর মুসলমান হয়ে গেল। সকলেই মহানবী সা.এর হাতে বাইয়াত হল।
এই বাইয়াত যেহেতু সর্বপ্রথম আকাবার নিকট হয়েছিল, এজন্য এর নাম 'বাইয়াতে আকাবায়ে উলা' করে নাম রাখা হয়েছে। [সীরাতে হালবিয়া ১/৪২]
এ সমস্ত লোক মুসলামন হয়ে মদীনা তায়্যিবায় ফিরে আসলেন। তখন মদীনার ঘরে ঘরে ইসলামের আলোচনা হতে লাগল। প্রতিটি মজলিসে এই একই কথা ছিল।