Narrow selection

বাবার চেয়ে মায়ের মর্যাদা ও অধিকার বেশী - Mother's dignity


03:02:02 12/04/2023

বাবার চেয়ে মায়ের মর্যাদা ও অধিকার বেশী

আমার কাছে আমার বাবা পানি চাইল, আমার কাছে একই সময়ে আমার মাও পানি চাইল । শরীয়ত অনুযায়ী আমি কার হাতে আগে পানি তুলে দেব? ইসলাম আমাকে বলেছে, তোমার মায়ের হাতে আগে তুমি পানি তুলে দাও । তাহলে দেখা যায়, বাবার তুলনায় ইসলাম মায়ের অধিকার অধিক ঘোষণা করেছেন। আর মা মানে হল একজন নারী । আল্লাহর রাসূলকে জিজ্ঞেস করা হল-

من احق الناس بصحبتي يارسول الله ؟

আমি সুন্দর ব্যবহার সবচেয়ে বেশী কার সাথে করব? আল্লাহর নবীর স্পষ্ট ঘোষণা তোমার মায়ের সাথে করবে। আমার মায়ের পরে আমি কার সাথে সবচেয়ে সুন্দর আচরণ করব? আল্লাহর নবী তাকিদ দেয়ার জন্য বললেন তোমার মায়ের পরেও তোমার মায়ের অধিকার পালন করতে হবে। তার সাথে সুন্দর আচরণ তোমাকে করতে হবে ।

ثم من يا رسول الله ؟

তার পরে কার অধিকার আমি পালন করব? তোমার মার। তিনবার আল্লাহর নবী মায়ের কথা ঘোষণা করেছেন। মুসলিম শরীফের বর্ণনায় আছে, একজন সাহাবী এসে জিজ্ঞেস করল ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করতে চাই। আল্লাহর নবী তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন- তোমার মা কি জীবিত আছেন? লোকটি বলল, হ্যাঁ, আমার মা জীবিত আছেন। তখন তিনি স্পষ্ট ঘোষণা দিলেন তোমার এখনি জেহাদ করার জন্য ময়দানে যাওয়ার দরকার নেই। তুমি তোমার মার সেবা করার মাধ্যমে জিহাদ কর। জেনে রাখ

فان الجنة تحت قدم الامهات

মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের জান্নাত। পিতা অনেক বড় অলী, অনেক বড় বিজ্ঞানী, আল্লাহর নবী সার্টিফিকেট দান করেননি যে, সে পিতার পায়ের নীচে জান্নাত আছে। কিন্তু মহিলাদের পায়ের নীচে জান্নাত আছে এটা আল্লাহর নবী ঘোষণা করেছেন। মা মানে একজন নারী, মা মানে একজন মহিলা ।

আপনি যত শিক্ষিতই হউন, বিজ্ঞানী হউন, মা অশিক্ষিতা হলেও মায়ের পায়ের নীচেই আপনার জান্নাত। নবীর জন্যও তার মায়ের পায়ের নীচে জান্নাত । হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্ম পিতা ছাড়া হয়েছে। লোকজন তার বিরুদ্ধে ক্ষেপে গেল । মরিয়মকে যখন জিজ্ঞেস করা হল কি করে তুমি এ সন্তান প্রসব করলে? উত্তরে হযরত ঈসা (আঃ) দোলনাতে বসে তার পরিচয় বর্ণনা করেছেন, তার কি দায়িত্ব সে বিষয়ে তিনি বললেন-

وبرا بو الدتى

আমাকে আল্লাহ পাক দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করেছেন আমার মায়ের সাথে সদাচরণ করার জন্য ।" ছেলে নবী হলেও মায়ের সাথে সদাচরণ করতে হবে। মায়ের সাথে সদাচরণ করা ছাড়া নবীর জন্যও রেহাই নেই ।

জাতিসংঘের বহু পূর্বে কোরআন নারীর অধিকারের সনদ ঘোষণা করেছে:

সঙ্কলনের ধারাবাহিকতানুসারে চতুর্থ সূরা, নাযিল হওয়ার দিক থেকে বায়ান্ন সূরায়ে নিসার মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাতিসংঘের চৌদ্দশ' বছর আগে পৃথিবীর বুকে নারীর অধিকার ও মর্যাদার সনদ ঘোষণা করেছেন। দেড় পারার মত একটি সূরা নারীর নামে নাযিল করেছেন। যারা ইসলামকে নারী বিদ্বেষী চিত্রায়ন করতে চায় তারা এসব তথ্যের ব্যাপারে হয়ত অজ্ঞ, নতুবা তারা স্বার্থন্বেষী । ইসলামের উপর কলংক লেপন করা হীন উদ্দেশ্য তাদেরকে তাদের এ কুকর্মে প্ররোচিত করছে। 

আরাফাতের প্রান্তরে, জাবলে রহমতের পাদদেশে দাঁড়িয়ে আল্লাহর নবী ৯ই জিলহজ্ব নবম হিজরী সনে যখন বিদায় হজ্বের ভাষণ দিচ্ছেন তখন বলেছিলেন, হে পুরুষরা তোমাদের অধীনে তোমাদের স্ত্রীরা আছে । তোমাদেরকে আমি আজকের পবিত্র দিনে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। খবরদার, তাদেরকে হাতের নাগালে পেয়েছ বলে তাদের উপর নির্যাতন করতে পারবেনা । জেনে রাখ, তোমার যেমন স্ত্রীর উপর অধিকার আছে স্ত্রীরও তোমার উপর অধিকার রয়েছে। খবরদার সে অধিকারকে নষ্ট করবেনা ।

” এর চেয়ে সুন্দর উপদেশ নারী জাতির পক্ষে ইসলামের আগে কোন জাতি কি দিয়েছে? যে অধিকার ইসলাম দান করেছে নারীর শারীরিক অবকাঠামোর সাথে তা পুরাপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ, এর চেয়ে বেশী বা কম দেয়া হলে তা হবে নারীর প্রতি জুলুম, অবিচার ও নির্যাতন । ইসলাম প্রদত্ত অধিকার ও দায়িত্ব হল নারী জাতির প্রতি যথাযথ ইনসাফ ।

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color