নুরুল আনওয়ার এর মুছান্নিফ - Nurul anwarer lekhk
05:04:57 12/04/2023
নুরুল আনওয়ার এর মুছান্নিফ : আহমদ ইবনে সাঈদ মোল্লা জিউন রহ.
জন্ম ও বংশ : নাম আহমাদ। পিতার নাম আবু সাঈদ। তবে তিনি মোল্লা জিউন নামে বেশী পরিচিত। দাদার নাম আব্দুল্লাহ। তিনি ১০৪৮ হিজরীতে ভারতের আমিঠি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
ইলম অর্জন : তিনি মাত্র সাত বছর বয়সে কুরআন মজীদ হিফয করেন। ভারতের বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করে সকল জ্ঞানী-গুণী ও প্রজ্ঞাবান আলিমদের নিকট থেকে জ্ঞানাহরণ করেন। পাঠ্যভূক্ত অধিকাংশ গ্রন্থ শেখ মুহাম্মদ সাদেক তুরকীর নিকট অধ্যায়ন করেন। এছাড়া বিভিন্ন আলেমদের নিকট থেকেও উপকৃত হন এবং জ্ঞান সাধনায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। পরিশেষে কর্ম জীবনের শুরুতে নিজের জন্মভূমিতে অধ্যাপনা শুরু করেন।
স্মৃতিশক্তি ও আচার-ব্যবহার : তিনি অনন্য সাধারণ মেধাবী ছিলেন। তাঁর ব্যবহার, উঠাবসা, চলাফেরাও কথাবার্তা ছিল অতুলনীয় মধুর। তিনি ছিলেন মিশুক, সদালাপী, নম্র ও ভদ্র স্বভাবের মানুষ। কারও প্রতি তিনি কোন অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন না। তিনি পাঠ্যভূক্ত বই পাতার পর পাতা দীর্ঘ কবিতা ইত্যাদি একবার দেখে বা শুনে হুবহু মুখস্থ বলতে পারতেন।
মোল্লা জিউন ও বাদশাহ আলমগীর : ৪০ বছর বয়সে তিনি আজমীর সফর শেষে দিল্লী আগমন করেন। এখানে তিনি দীর্ঘ দিন অবস্থান করেন এবং জ্ঞান চর্চার ধারা অব্যাহত রাখেন। ক্রমান্বয়ে বাদশাহর দরবারে তার সুনাম ও সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। বাদশাহ তাকে তার পুত্র আওরঙ্গজেবের শিক্ষক নিযুক্ত করেন। তিনি নিজেও তার নিকট ছাত্রের ন্যায় বিনয়ী হয়ে থাকতেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে তাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দান করেন। মোল্লা জিউনও বাদশাহ এবং তার পুত্রকে ভালবাসতেন।
হজ্জ্ব ব্রত পালন : ৫৫ বছর বয়সে হারামাইন শরীফ যিয়ারত করেন। সেখানে তিনি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। ১১১২ হিজরীতে পুনরায় হারামাইন শরীফ যিয়ারত করেন। তখন মাতা-পিতা উভয়ের পক্ষ থেকে দুটি বড় হজ্জ্ব আদায় করেন। তৎসঙ্গে বুখারী ও মুসলিম শরীফের অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পাঠ দান করেন।
আধ্যাত্মিক সাধনা ও খেলাফত লাভ : ১১১৬ হিজরীতে ভারত প্রত্যাবর্তন করেন এবং দুই বছর অবস্থান করেন। ইতোমধ্যে তিনি আধ্যাত্মিক সাধনায় ঝুঁকে পড়েন। অবশেষে হযরত শায়খ ইয়াসীন কাদেরী থেকে খেলাফত লাভ করেন।
ইন্তেকাল : ১১৩০ হিজরীতে ইলমের এই বুযুর্গ পরকালের ডাকে সাড়া দেন এবং আমিঠি নামক স্থানে তারই প্রিয় মাদ্রসার পাশে তাকে দাফন করা হয়।
রচনাবলী : তিনি সারাটা জীবন দরস তাদরীস, তাছনীফ-তালীফ প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত থাকেন। উছুলে ফিক্হ শাস্ত্রে নুরুল আনওয়ার তার জীবন্ত প্রমাণ। এটি মক্কায় হজ্বের সফরে মাত্র দুই মাসে রচনা করেছিলেন। অনুরূপভাবে তিনি প্রথমে উপমহাদেশে আহকামে কুরআনের উপর তাফসীরে আহমদী রচনা করেন। এতে আহকাম সম্পর্কিত ৫০০ আয়াতের বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পেশ করা হয়েছে। এছাড়া তার অন্যান্য রচনাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মানাকেবুল আউলিয়া আদাবে আহমাদী আস সাওয়ানেহ।
নূরুল আনওয়ার এর হাশিয়া ও শরাহ : কামরুল আকমার হাশিয়ায়ে নূরুল আনওয়ার উর্দু শরাহ - মাওলানা ওবায়েদুল হক।