মুহাম্মাদ স. এর নবুওয়াত প্রাপ্তি
07:12:35 01/04/2025
মুহাম্মাদ স. এর নবুওয়াত প্রাপ্তি
যখন মহানবী সা. এর বয়স চল্লিশ বছর একদিন হল, তখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রকাশ্যে মহানবী সা. কে নবুওয়াতের ভূষণে অলংকৃত ও ধন্য করা হল। জন্ম তারিখের ন্যায় যার তারিখ ছিল রবিউল আওয়াল মাসের সোম বার দিন। (এগুলো ছাড়া আরো অনেক উক্তি রয়েছে। [সীরাতে মুগলতাঈ পৃঃ ১৪] পৃথিবীতে ইসলাম প্রচার
তাবলীগের প্রথম ধাপ : শুরুতে যখন মহানবী সা. এর উপর ওহী অবতীর্ণ হতে লাগল তখন মহানবী সা. প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারে আদিষ্ট ছিলেন না; বরং তাতে মহানবী সা. এর ব্যক্তিগত জীবন বিধান ছিল।
সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি
তারপর কিছু দিন ওহীর ধারাবাহিকতা বন্ধ থাকার পর মহানবী সা. এর উপর দ্বিতীয় বার ওহী আসা শুরু হল। তাতে মহানবী সা. কে ইসলাম প্রচারের জন্য আদেশ করা হল। কিন্তু দুনিয়াতে মূর্খতা ও ভ্রষ্টতার রাজত্ব ছিল। বিশেষ করে আরবদের অহংকার ও পিতৃপুরুষদের অনুসরণ তাদেরকে হকের আওয়াজের উপর কর্ণপাত করার অনুমতি দিত না। এজন্য আল্লাহ তায়ালার প্রজ্ঞার চাহিদা এ ছিল যে, শুরুতে মহানবী সা.কে তাবলীগ ও ইসলাম প্রচারের আদেশ না করা। যাতে মানুষের প্রথম থেকেই ঘৃণা সৃষ্টি না হয়। সুতরাং মহানবী সা. প্রথমে ইসলামের দাওয়াত পরিচিত লোকদের মাঝে এবং এমন ব্যক্তিদের মাঝে শুরু করলেন যাদের উপর তাঁর ভরসা ছিল অথবা মহানবী সা. বিচক্ষণতার মাধ্যমে তাদের মাঝে কল্যাণ ও মঙ্গলের নিদর্শন দেখতেন।
এ পদ্ধতিতে সর্বপ্রথম স্বতী-স্বাধী স্ত্রী হযরত খাদীজা রা., আবু বকর রা., মহানবী সা. এর চাচাত ভাই হযরত আলী রা. এবং মহানবী সা. এর পালিত পুত্র যাইদ বিন হারেসা ইসলাম গ্রহণ করেন। হযরত আবু বকর মহানবী সা. এর নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্ব থেকেই বন্ধু ছিলেন। মহানবী সা. এর সত্যবাদিতা, ধর্মভীরুতা এবং চরিত্র সম্পর্কে খুব অবগত ছিলেন। তাকে যখন মহানবী সা. আল্লাহর রাসূল হওয়ার কথা অবহিত করলেন তৎক্ষণাৎ তিনি মহানবী সা.কে বিশ্বাস করলেন এবং কালিমা শাহাদত পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন ।
হযরত আবু বকর রা.স্বীয় গোত্রের সর্বস্বীকৃত বুযুর্গ ছিলেন। সকল বিষয়ে লোকজন তার উপর বিশ্বাস করত। ইসলামে দীক্ষিত হবার পর তিনিও তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করলেন, যাদের মাঝে কিছু কল্যাণ ও মঙ্গলের নিদর্শন দেখলেন। সুতরাং, হযরত উসমান গনী, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ, সাআদ ইবন আবি ওয়াক্কাস, যুবাইর বিন আওয়াম, তালহা বিন উবায়দুল্লাহ রা. তার দাওয়াত গ্রহণ করলেন। তিনি তাদের সবাইকে মহানবী সা. এর দরবারে নিয়ে গেলেন এবং সকলেই মুসলমান হয়ে গেলেন।
তাদের পর আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ, উবায়দা ইবনুল হারিস বিন আব্দিল মুত্তালিব, সাঈদ বিন যাইদ আদাবী, আবু সালামা মাখযুমী, খালিদ ইবনে সাঈদ ইবনুল আছ, উসমান বিন মাযউন এবং তার দুই ভাই কুদামা ও উবায়দুল্লাহ এবং আরকাম বিন আরকাম রা. ইসলামে দীক্ষিত হলেন। এরা সবাই কুরাইশ বংশের ছিলেন। কুরাইশ ছাড়া সুহাইব রূমী, আম্মার ইবনে ইয়াসির, আবু যর গিফারী, আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ ইসলামে প্রবেশ করলেন।
সে সময় ইসলামের দাওয়াত শুধু গোপনে চলত। ইবাদতসমূহ এবং শরীয়তের আমলগুলো চুপে চুপে আদায় করা হত। এমনকি পুত্র পিতা থেকে এবং পিতা পুত্র থেকে গোপনে নামাজ পড়ত। যখন মুসলমানদের সংখ্যা ত্রিশের বেশী হল তখন মহানবী সা. তাদের জন্য একটি প্রশস্থ ঘর নির্ধারণ করলেন। সে ঘরে সকলেই একত্রিত হতেন এবং মহানবী সা. তাদেরকে শিক্ষা দিতেন। এপদ্ধতিতে ইসলামের দাওয়াত তিন বছর চলতে লাগল। সে সময় কুরাইশদের মোটামুটি এক দল ইসলামে প্রবেশ করল। অন্য লোকেরাও ইসলামে প্রবেশ করতে লাগল । এ সংবাদ যখন মক্কায় প্রচার হল এবং লোকদের মাঝে বিভিন্ন স্থানে এর চর্চা হতে লাগল, তখন প্রকাশ্যে সত্যের দাওয়াতের সময় হল ।