Narrow selection

তাবলীগের ছয় উসূল কি বিদআত? - Tabliger Usul ki bidat


01:50:04 12/04/2023

তাবলীগের ছয় উসূল কি বিদআত?

উত্তর : তাবলীগের ছয় গুন তাবলীগীদের মনগড়া বানানো বা হযরতজী মাওঃ ইলিয়াস (রহ.) এর পক্ষ হতে সংযোজন করা হয়েছে এমন কথা বলা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা অপবাদ মাত্র। কারণ এই ছয় গুণ আল্লাহর কালাম ও নবীজীর হাদীস এবং সাহাবাদের আমল থেকেই বের করা হয়েছে। যদি এই ছয় গুনকে কেউ অস্বীকার করে তাহলে সে নবীজীকেই অস্বিকার করল। কারণ ছয় গুনের মধ্যে এমন একটি গুণও নেই যার কথা কুরআনে বা নবীজীর হাদীসে নেই। হাদীসের সকল কিতাবেই ভিন্ন ভিন্নভাবে ছয় গুণ বর্ণিত আছে। বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থ মেশকাত শরীফের ১ম হাদীসটি হলো সহীহ নিয়্যত সম্পর্কে-

১. সিহাহ সিত্তার অসংখ্য স্থানে এই হাদীসটি স্থান পেয়েছে। সুতরাং নবীজীর মুখের বাণী সহীহ নিয়্যত এই গুণকে যারা অস্বিকার করে তারা কোন ধরনের মুসলমান? পাঠক সমাজ অবশ্যই বুঝতে সক্ষম ।

২. ইলম সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস রয়েছে। হাদীসের কিতাবে (কিতাবুল ইলম) নামে স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে। আল্লাহর রাসূল (সা:) ইরশাদ ফরমান-

طلبُ الْعِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ وَمُسْلِمَةٍ.

দ্বীনী ইলম শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। কত নম্বর গাধা আর মূর্খ হলে ইলমকে অস্বীকার করতে পারে? তাবলীগ বিরোধী বেদাতীরাতো নবীর তরীকার উপর নেই । আছে মনগড়া ও নিজের পক্ষ হতে বানানো শয়তানী তরীকার উপর। যদি তারা নবীজীর বাস্তব অনুসারী হতো, তাহলে ছয় গুনের অন্যতম ইলমকে কখনো অমান্যও অস্বিকার করতে পারে না। তাদের শরীয়ত ও তরীকতের কোন ইলমই নেই। যা আছে শয়তানী ইলম মাত্র । শয়তানের যুক্তি ও চাপা কম ছিল না। চাপাবাজীতে শয়তান ছিল এক নাম্বার । কিন্তু মানার কিছুই ছিল না। তদ্রুপ তাবলীগ বিরোধী যত ফেরকা আছে সবগুলোই শয়তানের মত চাপাবাজীতে এক নাম্বার । 

তাই তারা নবুওয়াতী ও কুরআনী ইলামকে সইতে পারে না। অন্তরে ইলমের দরদ থাকলে, সুন্নাতের ভাল বাসা থাকলে, নবীর ভালবাসা থাকলে নবীর ইলম অর্জনের জন্য গোটা জীবনকে তাবলীগের কাজেই নিজেকে লাগিয়ে রাখত । আসল কথা হলো- যত যুক্তি বিদ্যা আর চ্যালেঞ্জ ছুরিনা কেন এই তাবলীগ বিরোধী ও গোমরাহ, বেদাতীরা মূলতঃ অন্ধ । তাদের অন্তর দৃষ্টিতে যেন মহর মেরে দেওয়া হয়েছে । তাই বেদাতীদর হেদায়াত সাধারণতঃ মিলে না। তারা শয়তানী যুক্তির মাধ্যমে হয়তো আমার এই লেখার উত্তর দিতে উঠে পড়ে লাগবে। কিন্তু হক বুঝা ও কবুল করা কতজনেরই বা নসীব হবে, আল্লাহই ভাল জানেন । তবে মাওলায়ে কারীমের দরবারে আশাবাদী তিনি তার অবুঝ বান্দাদের অন্তর দৃষ্টি উম্মোচন করে তাবলীগ বিরোধীদের হেদায়াত দান করবেন ।

৩. যিকির সম্পর্কে কুরআনে আল্লাহর বাণী-

আল্লাহর হাবীব বলেন-

যিকিরের মধ্যেই অন্তরের প্রশান্তি আছে।

لِكُلِّ شَيْ صِقَالَةٌ وَصِقَالَةُ الْقُلُوْبِ ذِكْرُ اللهِ.

অসংখ্য আয়াত ও হাদীস যিকির সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও তাবলীগ বিরোধীরা কত নম্বার গর্দভ হলে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট ও সত্য একটি জিনিসকে অস্বিকার করতে পারে? ভ্রাস্ত্র ও গোমরাহ না হলে কোন ব্যক্তি তাবলীগের এই ছয় গুনের বিরোধীতা করতে পারে না ।

৪. তাবলীগ সম্পর্কে রাব্বুল আলমীনের ঘোষণা

وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلاً مِمَنْ دَعَا إِلى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ.

আল্লাহর হাবীব বলেন- আমার একটি বাণীও যদি তোমার কাছে পৌঁছে থাকে তাহলে তোমরা তা অন্যের নিকট তাবলীগ কর । অসংখ্য আয়াত ও হাদীস আছে তাবলীগ সম্পর্কে। তাহলে তাবলীগ বিরোধীদের প্রতি আমার জিজ্ঞাসা, কোন কারণে নিজেদের মুসলমান দাবী করে, নবীর আশেক দাবী করে, সুন্নী দাবী করে, কুরআন ও হাদীসের এই নির্দেশনার বিরোধীতা? কুরআন-হাদীসের সাথে বেয়াদবী? কুখ্যাত মুরতাদ লতীফ সিদ্দীকীর মত মুরতাদ ঘোষণা দিয়ে তাবলীগের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেইতো নবী প্রেমিকদের গণধোলাই ও জুতো পিটুনী খেয়ে দেশ ত্যাগ করে ইহুদী-নাসারাদের আচলের নীচে আশ্রয় নেয়া যায় ।

তাবলীগিরা প্রায় প্রত্যেক গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে কালেমা ভুলা মানুষদেরকে কালেমা ও নামাযের দিকে দাওয়াত দিয়ে থাকেন ।

এ মোট ছয়গুণ এ গুণগুলোর কোনটি ইসলামের বহির্ভুত নয় সবগুলোই ইসলামের জরুরী বিষয়। এ সকল গুণগুলো সকল নবী রাসূল, সাহাবী, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ, খোলাফায়ে রাশেদ্বীন ও আইম্মায়ে মুজতাহেদ্বীন সকলের মধ্যেই বিদ্যমান ছিল। অপর দিকে একশ্রেণীর লোক না বুঝে এদের বিরোধীতায় লিপ্ত এটা নতুন কোন বিষয় নয় । হুযুর (সা:) কালেমার দাওয়াত দিতেন, তখন তারও বিরোধীতায় হাজারো লোক ছিলো এ জন্য হুযূর (সা:) তার কালেমার দাওয়াত বন্ধ করে দেয়নি ।

তাবলীগ করার জন্য নবীজী (সা:)-এর প্রতি আল্লাহর নির্দেশ

يَايُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ وَ إِنْ لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَفِرِينَ.

অর্থাৎ, (হে রাসূলে কারীম (সা:) আপনার মহান প্রভুর পক্ষ থকে আপনার নিকট যা অবতীর্ণ করা হয়, তা আমার বান্দাদের কাছে তাবলীগ করুন বা পৌছাতে থাকুন। (আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয়গুলো মানুষের কাছে তাবলীগ করুন) যদি একটা কথাও তাবলীগ করা বাকী থাকে, তাহলে আপনার রিসালাতের দায়িত্ব অসমাপ্ত থেকে যাবে।) (সূরা মায়েদা : ৬৭)


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color