Narrow selection

​​​​​​​দাদ হলে করণীয় কি? - What to do if ringworm?


06:54:28 12/11/2023

দাদ হলে করণীয় কি? দাদকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে রিংওয়ার্ম বা টিনিয়া। এটা চরম এক অস্বস্তিকর চর্মরোগ ডার্মাটোফাইট ছত্রাকের সংক্রমণে এ রোগ হয়। এ ছত্রাক প্রধান তিন ধরনের-

১. ট্রাইকোফাইটন (ত্বক, চুল ও নখে সংক্রমণ ঘটায়)।

২. মাইক্রোস্পোরাম (ত্বক ও চুলে সংক্রমণ ঘটায়)। ৩. এপিডার্মোফাইটন (ত্বক ও নখে সংক্রমণ ঘটায়।

রোগের উপসর্গ

কোন স্থানে সংক্রমণ ঘটেছে এবং কোন প্রজাতির ছত্রাক সংক্রমণ ঘটিয়েছে তার উপর নির্ভর করে রোগের উপসর্গ।

টিনিয়া করপোরিস (পিঠ, বুক বা উরুর দাদ)

  • প্রাপ্ত বয়স্ক এবং বৃদ্ধলোকেরা সাধারণত কৃষকরা এ ধরনের দাদে বেশি আক্রান্ত হয়। পশু কিংবা পাখি থেকে এ সংক্রমণ ঘটে।
  • ত্বকে গোল চাকা সদৃশ ক্ষত সৃষ্টি হয়, চুলকায়, লাল হয়। গোল চাকার পরিধি ক্রমশ বাড়তে থাকে। চুলকানির ফলে পুঁজ হয়।

টিনিয়া ক্যাপিটিস (মাথার ত্বকের দাদ)

  • সাধারণত বাচ্চাদের এটা বেশি হয়।
  • মাথার ত্বকে গোল চাকা চাকা ক্ষত সৃষ্টি হয়। চুলকায়। সামান্য খুশকি থাকে ।
  • অল্প জায়গা জুড়ে টাক সৃষ্টি হয়। ওখান করে চুল ত্বকের সমতলে ভেঙে যায়। চুলের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যায়।
  • সামান্য চুলকালে কিংবা চুল ধরে টান দিলে কোনো ধরনের ব্যথা ছাড়াই চুল উঠে আসতে পারে।
  • চুলের গোড়ায় প্রদাহজনিত পুঁজ সৃষ্টি হয়।

টিনিয়া ক্ররিস (কুঁচকির দাদ)

  • তরুণ এবং বয়স্ক লোকদের এটা বেশি হয়। ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়।
  • কুঁচকি এবং উরুর উপরি ভাগে লাল, গোল চাকা চাকা ক্ষত সৃষ্টি হয়।
  • ক্ষতের মধ্যে অল্প পরিমাণ গুঁজে পূর্ণ ফুসকুঁড়ি থাকে।
  • ক্ষতগুলো সাধারণত এক দিকে অপ্রতিসম হয়। খুব চুলকানি থাকে ।

টিনিয়া পেডিস (পায়ের দাদ)

  • মানুষের মধ্যে ছত্রাক সংক্রমণের এ ধরনটি সবচেয়ে বেশি। একই বাথরুমে অনেকে গোসল
  • করলে বা পা ধুলে এবং সুইমিং পুলে সাঁতার কাটলে এ ছত্রাক সংক্রমণের প্রকোপ বৃদ্ধি পায় ।
  • অল্প বয়স্ক লোক এবং সাধারণত ক্রীড়াবিদদের এ রোগ বেশি হয়। যাদের পা ভেজা অবস্থায় থাকে কিংবা যারা সারাদিন মোজাসহ জুতা পরে থাকে তাদের রোগটি বেশি হয়। পায়ের পাতার কিনারায় ফাটল ধরে, আঁশ ওঠে।
  • পায়ের পাতা পুরু হয়ে যায় এবং অনেকগুলো ক্ষত দেখা দেয়।
  • পায়ের আঙুলের ফাঁকে, বিশেষ করে তৃতীয় ও চতুর্থ আঙ্গুলের ফাঁকে ক্ষত হয় এবং চামড়া নরম, ভেজা হয়ে ওঠে।

টিনিয়া আনগুইয়াম ( নখের দাদ)

হাতের নখের চেয়ে পায়ের নখে সংক্রমণ বেশি ঘটে। সাধারণত পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখে এটা হয় ।

  • আক্রান্ত নখ সাদাটে হয়ে যায়। নখ প্রান্ত থেকে ভেঙে যেতে শুরু করে।
  • নখ ভঙ্গুর ও পুরু হয়ে ওঠে। নখ শয্যা থেকে নখ খসে যেতে পারে।

টিনিয়া ম্যানাম (হাতের দাদ)

হাতের তালুতে অপ্রতিসম ক্ষত হয়। তালুর রেখা থেকে শুকনো, গুঁড়ো গুঁড়ো চামড়া ওঠে।

চিকিৎসা

স্থানীয় চিকিৎসা

  • আক্রান্তস্থানে লোশিও আয়োডিন কিংবা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ব্যবহার করতে হবে।
  • ক্ষত মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত দৈনিক ২বার আনগুয়েন্টাম হুইটফিল্ড মাখতে হবে। অথবা, দৈনিক ২-৩ বার ১% কোটাইমাজল মাখতে হবে।
  • আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখতে হবে।
  • আক্রান্ত স্থানে সাবান মাখা পরিহার করতে হবে।

বিশেষ চিকিৎসা

  • ট্যাবলেট গ্রাইসিওফুলভিন ৫০০ মি. গ্রা. অথবা সিরাপ গ্রাইসিওফুলভিন।
  • প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৫০০ মি. গ্রা.-১ গ্রাম। দৈনিক একক অথবা বিভক্ত মাত্রায়।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে (৬ বছর পর্যন্ত) : ১ চা চামচ দৈনিক ২ বার
  • শিশুদের ক্ষেত্রে (৭–১২ বছর পর্যন্ত) : ১ চা চামচ দৈনিক ৩ বার
  • ওষুধটি ভরাপেটে সাধারণত ৪-৬ সপ্তাহ খেতে হয়। তবে মাথার ত্বক ও নখের দাদের চিকিৎসায় ৫-৯ মাস খেতে হয়।
  • সংক্রমণ থাকলে এন্টিবায়োটিক খেতে হবে।
  • এন্টিহিস্টামিন খাওয়া যেতে পারে।

সাধারণ ব্যবস্থা

  • অন্যের চিরুনি ও কাপড়চোপড় ব্যবহার বাদ দিতে হবে।
  • দৈনিক পরনের কাপড়চোপড় সেদ্ধ করতে হবে।
  • সংক্রামিত পশু, যেমন—কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, গরু প্রভৃতির সাহচর্য এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

 

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color