বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ভিত্তি
15:45:03 12/03/2023
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ভিত্তি: ১৯৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ী দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে এই কথাই ছিল, কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন তারা পাশ করবে না । ১৯৭০ এর এই নির্বাচনের উপর ১৯৭১ এ স্বাধীনতা আন্দোলন হয় । তাহলে বুঝা যায়, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা এই মূলনীতির উপর হয়েছে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন, কোন কার্যক্রম এই দেশে পাশ হবেনা। এটা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। মুসলমানদের একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হল, নতুন নাম পেল ‘বাংলাদেশ।
মুসলমানদের নতুন একটি রাষ্ট্র সৃষ্টির কারণে মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধি হল । ২৬ শে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর যখন আসবে, মুসলমানদের জন্য আল্লাহর দরবারে বিনয়ের সাথে শুকরিয়া আদায় করা দরকার যে, হে আল্লাহ! -আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু এই স্বাধীনতায় যদি তুমি সাহায্য না কর, কখনো আমরা তা হেফাজত করতে পারবনা। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের স্বাধীনতাকে হেফাজত কর । ইজ্জতের সাথে যেন পৃথিবীর মধ্যে টিকে থাকতে পারি, আমাদেরকে সে তাওফীক দান কর; এটাই হচ্ছে আজকের দিনের শপথ এবং দোয়া ।
সুন্নাহর আলোকে বিজয় দিবসের করণীয়
সুন্নাহ আমাদেরকে কি বলে? বিজয়ের দিনে করণীয় সম্পর্কে আল্লাহর নবীর আদর্শ কি ছিল? যে মক্কা নগরী থেকে আল্লাহর নবী বিতাড়িত হলেন, ১০ বছর পর শত- সহস্র সাহাবায়ে কেরামের বিশাল জামাত নিয়ে তিনি যখন পবিত্র মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন, তখন তিনি বিজয় মিছিল করেননি । গর্ব-অহংকার করেননি, বাদ্য-বাজনা বাজাননি। আল্লাহর নবীর অবস্থা কি ছিল, আল্লাহর নবী একটি উষ্ট্রীর উপর আরোহনাবস্থায় ছিলেন, তাঁর চেহারা ছিল নিম্নগামী অর্থাৎ আল্লাহর দরবারে বিনয়ের সাথে তিনি মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন । মক্কা নগরীতে প্রবেশ করে সর্ব প্রথম তিনি উম্মে হানীর ঘরে প্রবেশ করলেন। সেখানে আট রাকাত নফল নামাজ আদায় করলেন । এই নামাজকে বলা হয় ill Bigha 'বিজয়ের নামাজ' । মুসলমানরা কোন এলাকা দখল করলে সেখানে সর্বপ্রথম আট রাকাত নামাজ পড়ে । এটা আল্লাহর নবীর সুন্নাত। বিজয়ের নামাজ আদায় করার পর আল্লাহর নবী কা'বা শরীফে আসলেন, হারাম শরীফের ভিতরে আসলেন। এসে জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করলেন । বক্তব্যের মধ্যে আল্লাহর প্রশংসা করে বললেন-
يا معشر قريش اما ترون انى فاعل بكم؟
হে কুরাইশের মানুষ! তোমাদের আজকে কি মনে হয়, আজকে আমি তোমাদের সাথে কেমন আচরণ করব? আজকে মক্কা আমার হাতে, মক্কার চাবি আমার হাতে, আমি মক্কা নগরী দখর করেছি, তোমাদের উপর বিজয় অর্জন করেছি। তোমাদের কি মনে পড়ে, বেলালের সাথে তোমরা কি আচরণ করেছিলে। সুহাইবের উপর কি আঘাত করেছিলে, আমি সেজদায় যখন যেতাম আমার পিঠের উপর আবর্জনার স্তুপ তুলে দিতে। দুই বছর বয়কট করে রেখেছ, কোন দোকানদার আমাদের কাছে মাল বিক্রি করেনি। যার কারণে অনেক মুসলমান দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। বৃদ্ধরা, ছোট বাচ্চারা অসুস্থ আনসার-দেরকে দায়িত্ব দিয়ে দিচ্ছি এই কয়েদীগুলোকে দেখাশুনা করবে। সত্তর জনকে সত্তর জন আনসারের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
বদরের প্রাঙ্গণ থেকে মদীনা অনেক দূরে, কিভাবে যাবে? মুসলমানদের কাছে তো অত যানবাহন নেই, এই কাফের গুলোকে কি করে আনা হবে? ইতিহাসের সোনালী পাতায় লেখা আছে, মুসলমানরা হেঁটে আসছে আর কয়েদীগুলোকে যানবাহনের উপর আরোহন করে আরামে আরামে মদীনার মধ্যে পৌঁছে দিয়েছে। মদীনায় পৌঁছার পর, সাহাবায়ে কেরামের অবস্থা দূর্দশা জর্জরিত ছিল, দারিদ্র ছিল, টাকা পয়সা ছিল না, খাবার ছিল না। একজন বন্দির স্বীকারোক্তি ইতিহাসে আছে- বন্দী বলল : আমাকে মহানবী একজন আনসারি সাহাবীর ভাগে দিল, আমি তার বাড়িতে গেলাম । তখন কোন জেলখানা নির্মাণ করা হয়নি। সে আমাকে রুটি এবং গোস্ত দিল, আমি আরামে খেয়ে ফেললাম। তারপর আমি খেয়াল করলাম যে, সে কি খায়? আমি দেখতে পেলাম, তার ঘরে আর কোন রুটি নেই, তরকারি নেই। সে দু'টা খেজুর খেল, রাত্র বেলায় একইভাবে সে আমাকে গোস্তরুটি দিল, আর তার খাবার জন্য কিছু ছিলনা । আমি তাঁকে বললাম, ভাই, আমি একজন অপরাধী, তোমাদের দৃষ্টিতে আমি কয়েদী, আমি বন্দি, আমাকে গোস্ত এবং রুটি দিয়ে আরামে খাওয়াচ্ছ আর তুমি মালিক হয়ে শুধুমাত্র খেজুর খেয়ে জীবন যাপন করছো। কয়েকদিন পর্যন্ত আমি এই অবস্থা দেখলাম।
ইতিহাসের পাতায় এ ধরনের উদারতা আপনি খুঁজে পাবেন না। আধুনিক কালের সর্বশেষ যে নজীর ইরাকের আবুগারিব কারাগারে আমরা দেখেছি, সভ্যতার দাবিদার মানবাধিকারের ঘোষণাকারীরা, যে রাষ্ট্রে সব চেয়ে বেশী মানবাধিকার সংস্থা আছে, সে রাষ্ট্রের বাহিনী ইরাকের আবুগারিব কারাগারে বন্দিদের সাথে কি আচরণ করেছে, সারা পৃথিবীর ইলেক্ট্রানিক মিডিয়া ও প্রিন্টেড মিডিয়া এবং ওয়েব সাইট গুলোতে তাদের নির্যাতনের ছবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। সে ছবিগুলো দেখার পর আমাদের মনে হয়েছে আধুনিক কালের কোন ছবি আমরা দেখছিনা, মনে হচ্ছে সে লোহার যুগ, তামার যুগ, অসভ্যতার যুগের ছবি যেন আমরা দেখছি।
যারা মানবাধিকার ঘোষণা করেছে, ৩০টি ধারা ঘোষণা করেছে। তারাই আবুগারিব কারাগারে মুসলমান কয়েদীদেরকে নির্যাতন করেছে। ইদানিং নির্যাতনের আরো ছবি প্রকাশিত হচ্ছে। লজ্জাস্থানে জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে নির্যাতন করছে। মুখে পেশাব করে দিয়েছে, মহিলা সৈনিকের আন্ডারওয়ার মুখের মধ্যে আবৃত করে রেখেছে, যৌন হয়রানি করেছে, ছোট ছোট বালকদেরকে মহিলা সৈনিকরা যৌনকাজ করার জন্য উৎপীড়ন করেছে। হয়ে গিয়েছিল, তের বছর ধরে যে নির্যাতন আমাদের উপর করেছ, এর বিপরীতে আজকের দিন তোমাদের কি মনে হয়, কি রকম প্রতিশোধ তোমাদের থেকে আমরা গ্রহণ করব? মক্কার মানুষ বলল-
انت اخ كريم ابن كريم
হ্যাঁ, আমরা অন্যায় করেছিলাম, অত্যাচারের ষ্টিম রোলার আমরা মুসলমানদের উপর চালিয়েছিলাম । ঠিক, তদুপরি আমাদের বিশ্বাস, আপনি আমাদের উদার ভাই এবং আমাদের বয়স্কদের উদার সন্তান আপনি, আপনি আমাদের সাথে উদারতা প্রদর্শন করবেন, এটা আমরা প্রত্যাশা করি। আল্লাহর নবী বলেছেন- হ্যাঁ, আমি আজকে তোমাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, সকলের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলাম । হযরত ইউসুফ (আঃ) তার ভাইদের যেভাবে ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন, যে ভাইয়েরা তাকে অন্ধকার কূপে ফেলে দিয়েছিল । যখন ইউসুফ (আঃ) মিশরের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসলেন সকল ভাইদেরকে বলেছেন-
لا تسريب عليكم اليوم
তোমাদের থেকে কোন প্রতিশোধ নেয়া হবেনা। সকল ভাইদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। আমিও মক্কার মানুষ, কুরাইশের মানুষ আমাদের উপর যত নির্যাতন করেছ, সকলকে ক্ষমা করে দিলাম। তোমাদের থেকে কোন প্রতিশোধ নেয়া হবেনা । আল্লাহর নবী বিজয়ের দিনে কা'বা শরীফে ভাষণ দিলেন । আল্লাহর নবী যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে বিজয় মিছিল করে মক্কার প্রতি ঘরে ঘরে প্রবেশ করতে পারতেন। যারা নির্যাতন করেছিল, তাদের রক্ত প্রবাহিত করে দিতে পারতেন। মক্কাকে রক্তের নহরে পরিণত করতে পারতেন। ঘরে ঘরে লুণ্ঠন করাতে পারতেন, কিছুই করা হলনা । শান্তিপূর্ণ ভাবে মক্কা বিজয় হল এবং কাফেরগণ আশ্বস্ত হল যে, আল্লাহর নবী তাদের থেকে কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন না । মুসলমানদের এ কর্মসূচী থেকে বুঝায় যায়, মুসলমানরা যে অঞ্চল বিজয় করবে, সে অঞ্চলের উপর কখনো আঘাত করবে না । এটা হচ্ছে ইসলামের শিক্ষা ।
ইসলামী রাজনীতির স্বরূপ
ইসলামী রাজনীতির শিক্ষা হল, একজন আরেক জনের উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েও প্রতিশোধ গ্রহণ না করা। যেমন আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহর নবী ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর যারা এত নির্যাতন করেছিল,তাদের উপর আঘাতের পর আঘাত করতে পারতেন, কিন্তু তিনি কিছুই করলেন না । মুসলমানরা যখন আল্লাহর নবীর এই আদর্শকে গ্রহণ করবে পুরা রাষ্ট্রের উপর আল্লাহর রহমত নাযেল হবে।
বিজয়ের দিনের শিক্ষা হল, আল্লাহর দরবারে নামাজ আদায় করে শুকরিয়া আদায় করা। বিজয়ের দিন যখন আসে, স্বাধীনতা দিবস যখন আসে আমরা ফুলের তোড়া নিয়ে শহীদ মিনারে দৌঁড় দেই, প্রশ্ন জাগে, এটা কি কুরআনের আদেশ? না আল্লাহর নবীর সুন্নাতের নির্দেশ? কবরস্থানে ফুল দেয়া, শহীদদের উদ্দেশ্যে ফুলের তোড়া দেয়া এগুলো পাশ্চাত্য সভ্যতার নিদর্শন। খ্রীষ্টানরা কবর জেয়ারত করে না । তারা প্রতিদিন সকাল বেলায় তাজা ফুল কবরের উপর দিয়ে আসে । কবরে ফুল দেয়া তাদের আদর্শ। প্রশ্ন জাগে, আমরা মুসলমান হওয়ার পরেও কুরআন-সুন্নাহর অনুকরণ না করে পাশ্চাত্য সভ্যতাকে কেন অনুকরণ করতে গেলাম । আল্লাহর নবীতো বলেছেন-
من تشبه بقوم فهو منهم
•যে ব্যক্তি কোন জাতির অনুকরণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।' আমাদের জন্য উচিৎ আল্লাহর দরবারে দোয়া করা। স্বাধীনতা অর্জন করা সহজ, স্বাধীনতা রক্ষা করা, স্বাধীনতার মাধ্যমে পৃথিবীতে দেশের সুনাম উজ্জল করা কঠিন । হে আল্লাহ! সেই কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করার তাওফীক তুমি আমাদেরকে দান কর । এটাই হবে আজকের দিনের ফরিয়াদ
বাংলাদেশের অখন্ডতার জন্য জঘন্য হুমকি
আপনারা জানেন, পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন রিপোর্টে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জরিপ থেকে একথা বুঝা যায়, গত শতাব্দীর সূচনা লগ্নে বাংলাদেশে খ্রীষ্টানদের সংখ্যা ছিল পঞ্চাশ হাজার। এই শতাব্দীর শেষে বাংলাদেশে খ্রীষ্টানদের সংখ্যা হয়েছে পঞ্চাশ লক্ষ এবং তাদের লক্ষ্য ও টার্গেট ২০১০ ইংরেজীতে তারা খ্রীষ্টানদের সংখ্যা করবে ১ কোটি। পুরা দেশের মধ্যে একসাথে তারা কাজ করবে তা নয়, বিভিন্ন অঞ্চলে একেকটি টার্গেট নিয়ে তারা কাজ করবে । আপনি যদি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির গভীর অরণ্যে যান, দূরপ্রান্তে যেখানে বাংলাদেশী মুসলিম কম, উপজাতীয়রা বাস করে, এমন এমন জায়গা আপনি খুঁজে পাবেন যেখানে পুরা গ্রাম খ্রীষ্টানরা দখল করে। ফেলেছে। তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে খ্রীষ্টান হয়ে আসছে, তারা বাংলা ভাষা জানেনা, তারা সকলে ইংরেজী ভাষায় কথা বলে ।
কেন? সুদূর ইউরোপ আমেরিকা থেকে পাদ্রীরা, খ্রীষ্টান মিশনারীর লোকেরা রাঙ্গামাটি গভীর অরণ্যে গিয়ে কাজ করছে, তাদের ধর্মের প্রচার করছে। মানুষকে দলে দলে খ্ৰীষ্টান বানাচ্ছে । ইন্দোনেশিয়াতে যেমন পূর্ব তিমুর একটি অঞ্চল আছে, সে অঞ্চলে কিছু কিছু খ্রীষ্টান ছিল, তারা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে গিয়ে পূর্ব তিমুরে খ্রীষ্টানদের সংখ্যাকে বৃদ্ধি করে ফেলল। এক সময় তারা জাতিসংঘের কাছে দাবি করল, পূর্ব তিমুরে খ্রীষ্টান বেশী আমরা মুসলমান রাষ্ট্রের সাথে থাকতে চাইনা । আমরা স্বাধীন হতে চাই। আপনারা জানেন, জাতিসংঘ বলেছে যে, তোমরা খ্রীষ্টান রাষ্ট্র চাও, তাহলে তোমাদেরকে খ্রীষ্টান রাষ্ট্র গঠন করে দেয়া হবে । জাতিসংঘ মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পূর্ব তিমুরকে স্বাধীন করে দেয়, ইন্দোনেশিয়াকে করে দুই ভাগ। ইন্দোনেশিয়া মুসলমানদের প্রধান রাষ্ট্র, বৃহত্তর রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের একটি অঞ্চলকে খ্রীষ্টান রাষ্ট্র করে দিয়েছে । একই ভাবে প্ল্যান করছে, আরেকটি বৃহত্তর রাষ্ট্র বাংলাদেশ, যার দশ ভাগের একভাগ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম।
পার্বত্যাঞ্চলেও তারা টার্গেট করে এগুচ্ছে। উপজাতিগুলোকে যাতে ব্যাপক ভাবে খ্রীষ্টান বানানো যায়। এক পর্যায়ে তারাও জাতিসংঘের কাছে দাবী করবে, আমরা বাংলাদেশ মুসলিম রাষ্ট্রে থাকতে চাইনা, আমরা পার্বত্যাঞ্চলকে একটি খ্রীষ্টান রাষ্ট্র বানাতে চাই। জাতিসংঘের তাদের, আমেরিকা তাদের। তারা বলবে ঠিক আছে, গণভোট হবে এবং তারা যখন বিশাল ভাবে ভোট দেবে, তখন সে অঞ্চলকে বাংলাদেশ থেকে কেটে পৃথক করে দেয়া হবে। তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোথায় থাকবে। এজন্য স্বাধীনতার দিনে শুধু একজন আরেকজনের প্রতি কাদা ছুঁড়াছুঁড়ি করা, একদল আরেক দলকে গালা-গালি করা, কে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে তা নিয়ে মারপিট করার পরিবর্তে আগামী পঞ্চাশ বছর পর যখন বাংলাদেশে জনসংখ্যা বহুলভাবে বাড়বে, দেশ যেন সম্মানজনক ভাবে থাকতে পারে সে রকম দীর্ঘ পরিকল্পনা নেয়া দরকার। ঐক্যবদ্ধ ভাবে সকল নাগরিক বাংলাদেশের জন্য কাজ করাই হবে স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর ।
নতুন মুক্তিযুদ্ধ চাই
মনে রাখতে হবে, আমরা স্বাধীন হলাম, অথচ বাংলাদেশে সারা পৃথিবীতে এখন দুর্নীতি পরায়ন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত, এ স্বাধীনতার কি মূল্য? যদি আমরা সারা পৃথিবীতে চোর জাতি হিসেবে পরিচিত হই, দুর্নীতিবাজ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হই, তাহলে স্বাধীনতার সুফল আমরা কোথায় পেলাম? আজকের স্বাধীনতার দিনে দল-মত নির্বিশেষে সকল মানুষ তিনি আওয়ামী লীগ করুন বা বিএনপি করুন, তিনি যেই দল করুন সকল দলের সব মানুষ ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। নতুন করে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা করা দরকার চোরদের বিরুদ্ধে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যারা দেশকে সারা পৃথিবীর মাঝে কলংকিত করে রেখেছে। আমরা প্রত্যেকে আমাদের এলাকা সম্পর্কে জানি, আমাদের এলাকাতে কারা কারা ঘুষ খেয়ে, কারা দুর্নীতি করে বড় হচ্ছে । যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদেরকে ঘৃণা করি, তাহলে এটা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় মুক্তিযুদ্ধ ।
দেশকে দুর্নীতির আগ্রাসন থেকে, সন্ত্রাসের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করে সারা পৃথিবীতে মুসলমানদের এই দেশকে উজ্জল করাই হোক আজকের দিনের শপথ। এটাই হউক আজকের দিনের সংকল্প। প্রত্যেক বিবেকবান, প্রত্যেক শিক্ষিত-দ্বীনদার মানুষ নিজেদেরকে দুর্নীতির কবল থেকে পবিত্র করে ফেলি। পুরা সমাজকে কি করে পবিত্র করা যায়, সে জন্য ঐকব্যবদ্ধভাবে নতুন করে জেহাদের সূচনা করি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আজকের স্বাধীনতা দিবসে আমাদের এই ফরিয়াদকে যেন কবুল করেন । আমাদের রাষ্ট্রকে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের কলংক থেকে মুক্তি দান করে সম্মানজনক একটি রাষ্ট্র হিসেবে সারা পৃথিবীতে পরিচিত করুন । আমীন ।