Narrow selection

গোসলের ফরজ কয়টি? গোসলের মাসআলা


07:04:32 12/03/2023

গোসলের ফরজ কয়টি? গোসলের মাসআলা

[১] হলক পর্যন্ত মুখ ভরে একবার কুলি করা। [২] নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত শ্বাসের সাথে একবার পানি টানা। [৩] সমস্ত শরীরে একবার পানি

চালা

গোসলের সুন্নত সমূহ

(১) গোসলের নিয়ত করা। [২] গায়ে নাপাক লেগে থাকলে পরিষ্কার করা এবং এস্তেঞ্জা করা। [৩] তারপর ওযু করা। [৪] শরীর ডলে ধোয়া। [৫] সমস্ত শরীরে তিনবার পানি ঢালা। [৬] তিন তিনবার কুলি করাও নাকে পানি দেয়া ।

মাসআলা :- যদি যখমের পট্টি খুলে যখমের উপর মাসেহ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে অথবা পট্টি খুলতে বেশ কষ্ট হয়, তবে পট্টির উপর মাসেহ করে নেয়া জায়েয। অন্যথায় পট্টির উপর মাসেহ করা জায়েয় নেই । পট্টি খুলে যখমের উপর মাসেহ করবে।

মাসআলা :- যদি পট্টি খুলে নীচের যখম ছাড়া বাকী অংশটুকু ধোয়া সম্ভব হয় তবে তাই করবে। আর যদি নিজে পট্টি খুলতে না পারে এবং খুলে দেয়ার মত কাউকে না পায় কিংবা খুললে ক্ষতির আশংকা থাকে, তবে সম্পূর্ণ পট্টির উপরে মাসেহ করবে, চাই তার নীচে যখম থাকুক বা না থাকুক

মাসআলা :- যে সব জিনিস বের হলে ওযু নষ্ট হয়ে যায় সেগুলো নাপাক। অপরপক্ষে যে সব জিনিস বের হলে ওযু নষ্ট হয় না সেগুলো নাপাক নয়। কাজেই যদি সামান্য রক্ত বের হয় যা যখমের মুখ থেকে গড়িয়ে পড়েনি অথবা মুখ ভরে নয় বরং সামান্য বমি হয় এবং তাতে খাবার, পানি, পিত্ত অথবা জমাট রক্ত বের হয়, তবে ঐ রক্ত এবং বমি নাপাক নয় এবং তা ধোয়া ওয়াজিব নয় । আর যদি মুখ ভরে বমি হয়, তবে তা নাপাক, শরীরে বা কাপড়ে কোথাও লেগে গেলে ধোয়া ওয়াজিব। মুখ ভরে বমি হওয়ার পর সরাসরি গ্লাস ইত্যাদিতে মুখ লাগিয়ে কুলি করবে না। বরং হাতের তালু ইত্যাদিতে পানি নিয়ে কুলি করবে, যাতে পাত্রটি নাপাক না হয়ে যায়। দুধের শিশু যদি মুখ ভরে দুধ উদগীরন করে তবে তা নাপাক হবে।

মাসআলা : নিজের বা অন্যের সতর দেখা বা দেখানোর কারণে ওষু নষ্ট হয় না। তবে কারো সতর দেখা বা নিজের সতর দেখানো কবিরা গুনাহ ও হারাম কাজ।

মাসআলা : ওযু করার পর যদি নখ কাটে অথবা শরীরের কোন 'জায়গায় চামড়া উপড়িয়ে নেয়, তবে এতে ওযু নষ্ট হবে না এবং সে জায়গাটিও পুনরায় ধুতে হবে না।

মাসআলা : ওযু করার পর ওযু ভংগ হয়েছে কিনা তা ভালভাবে মনে না পড়লে ওযু আছে বলেই ধরে নেয়া হবে এবং এ ওষু দ্বারা নামায পড়া জায়েয হবে। তবে পুনরায় ওযু করে নেয়াই উত্তম।

মাসআলা : নাবালেগ শিশুকে ওযুর সাথে কুরআন শরীফ পড়ার অভ্যাস করাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে তার সাথে কঠোরতা করবে না। কেননা তার জন্য ওযু ছাড়া কুরআন শরীফ ছোঁয়া না জায়েয নয় ।

গোসলর কয়েকটি জরুরী মাসআলা 

মাসআলা :- ফরয গোসলের সময় মুখ ভরে গড়গড়াসহ কুলি করা এবং নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত এবং কানের ছিদ্রে আঙ্গুল দ্বারা পানি পৌঁছানো ফরয।

মাসআলা :- গোসল করার সময় যখন বড় এস্তেঞ্জা করবে তখন ভালভাবে খুলে বসবে যাতে যতটুকু পানি যাওয়া সম্ভব পৌঁছে যায় । তদ্রূপ মহিলারা স্বীয় লজ্জাস্থানের চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছাবে। অন্যথায় গোসল হবে না।

মাসআলা : নাকের ফুল এবং কানের বালির ছিদ্রে ভালভাবে লক্ষ্য করে পানি পৌঁছাবে। তাতে পানি না পৌঁছলে গোসল হবে না। যদি আঙ্গুলে সংকীর্ণ আংটি পরা থাকে তবে তা পানি ঢালার সময় নেড়ে নিবে। বগলে এবং উরুর চিপায় লক্ষ্য করে পানি পৌঁছাবে।

মাসআলা :- গোসলের সময় কোন জায়গা শুকনো থাকলে পরে স্মরণ হওয়ার পর ঐ শুকনো জায়গাটুকুই শুধু ধুয়ে নিলে চলবে।

মাসআলা :- যদি নখে বা অন্য কোন স্থানে আটা বা অন্য কিছু লেগে শুকিয়ে যায় এবং ওযু গোসলের সময় ভিতরে পানি পৌঁছে যায় তবে ওষু গোসল হয়ে যাবে অন্যথায় তা পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। নখ পালিশের কারণে যেহেতু ভিতরে পানি পৌঁছে না সেহেতু তা পরিষ্কার করা ছাড়া ওযু হবে না।

মাসআলা :- যদি দাঁতের মধ্যে অথবা দাতের ফাঁকে সুপারী আটকিয়ে থাকে তবে তা পরিষ্কার করে গোসল করবে অন্যথায় গোসল হবে না

মোজার উপর মাসেহ করার সময়সীমা

হযরত শুরাইহ ইবনে হানী [রহঃ] বলেন যে, আমি হযরত আয়েশা [রাঃ]-এর নিকট এসে মোজার উপর মাসেহের সময়সীমা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, হযরত আলী [রাঃ]-এর কাছে যাও কেননা তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃ] এর সফর সংগী ছিলেন। কাজেই তাঁর ওযু সম্পর্কে সাহাবীদের মাঝে তিনিই বেশী জানেন। হযরত আলী [রাঃ]-কে জিজ্ঞেস করার পর বললেন[ মোজার উপর মাসেহ করার সময়সীমা] মুর্কীমের জন্য একদিন একরাত্র এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত্র।" [তাহাবী শরীফ এবং মুসলিম শরীফ]

শরীয়ত আমাদের উপর যে সকল কাজ সহজ করেছে তার একটি এই যে, ওযু করে চামড়ার মোজা পরার পর ওযু ভেঙ্গে গেলে পুনরায় ওযু করার সময় মোজা খুলে পা ধোয়াার পরিবর্তে মোজার উপর মাসেহ করে নেয়াই যথেষ্ট, তবে শর্ত হল যে, এমন মোজা হতে হবে যার দ্বারা পায়ের টাখনু ঢেকে যায়।

মাসআলা :- ওযু করে মোজা পরার পর যখন পুনরায় ওযু ভেঙ্গে যাবে তখন থেকে মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত্র এবং মুকীমের জন্য একদিন এক রাত্র পর্যন্ত মোজার উপর মাসেহ করা বৈধ। যত বারই ওযু করুক, তবে সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় মোজা খুলে পা ধোয়া ছাড়া ওযু হবে না।

মুসাফির কাকে বলে?

শরীয়তের পরিভাষায় মুসাফির ঐ ব্যক্তি, যে ৪৮ মাইলের দূরত্ব সফরের উদ্দেশ্যে নিজ গ্রাম বা শহর থেকে বেরিয়ে পড়েছে। যদিও এ সফর প্লেনে বা অন্য কোন যানবাহনে হয় । এছাড়া অন্যদেরকে মুকীম বলা হয় ।

মাসআলা :- মুকীম যদি একদিন এক রাত্র পুরা হওয়ার পূর্বেই সফরে বেরিয়ে পড়ে তবে তিন দিন তিন রাত্র পূর্ণ করবে। আর মুসাফির যদি একদিন এক রাত্র পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই বাড়িতে পৌঁছে যায় তবে এক দিন এক রাত্র পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত মাসেহ করতে পারে। আর যদি বাড়ী পৌছার পূর্বেই এক দিন এক রাত্র পূর্ণ হয়ে থাকে তবে বাড়ী পৌঁছে মোজা খুলে পা ধুয়ে নিবে। আর এসব ক্ষেত্রেই তিন দিন তিন রাত্র বা এক দিন এক রাত্রের হিসাব হবে পা ধুয়ে মোজা পরার পর যখন ওযু ভেঙ্গে ছিল তখন থেকে।

মাসআলা :- মোজার উপর মাসেহ করার নিয়ম এই যে, উভয় হাতের আঙ্গুলগুলো ভিজিয়ে পায়ের আঙ্গুলগুলোর উপর রেখে পায়ের গোড়ার দিকে টেনে আনবে। কমপক্ষে হাতের তিনটি আঙ্গুল দ্বারা মাসেহ করা আবশ্যক। দুই আঙ্গুল দ্বারা মাসেহ করা জায়েয নেই। এবং শুধু আঙ্গুলের অগ্রভাগ দ্বারা মাসেহ করবে না। বরং সম্পূর্ণ আঙ্গুলগুলো দ্বারা মাসেহ করবে।

মাসআলা: যদি একটি মোজা খুলে যায় বা তার ভিতর পানি ঢুকে যায়, তাহলে উভয় পায়ের মাসেহ ভেঙ্গে যাবে। তদ্রূপ মাসেহের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও মাসেহ ভেঙ্গে থাকে, তবে শুধু পা ধুয়ে মোজা পরে পূর্বের ওযু দ্বারাই নামায পড়তে পারে। নতুন ওযু করা আবশ্যক নয় ।

মাসআলা :- ফরয গোসলের ক্ষেত্রে মোজার উপর মাসেহ করা - জায়েয নেই। বরং মোজা খুলে পা ধোয়া ফরয। যদিও মাসেহের সময়সীমা এখনও শেষ হয়নি।

মাসআলা : সাধারণতঃ যে পশমী সুতী বা নাইলনের মোজা ব্যবহার করা হয় এগুলোর উপর মাসেহ করা জায়েয নেই। অবশ্য যদি খুব মোটা হয় তবে বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষ। প্রয়োজনের সময় কোন নির্ভরযোগ্য আলেমের কাছে জেনে আমল করবে। যদি নির্ভরযোগ্য আলেম কাছে না পাওয়া যায় তবে পা ধুয়েই নিবে যাতে নিশ্চিতভাবে ওযু হয়ে যায়।


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color