Narrow selection

মদীনা মুনাওরায় সর্বপ্রথম মাদরাসা


13:02:30 01/07/2025

মদীনা মুনাওরায় সর্বপ্রথম মাদরাসা

মদীনায় গিয়ে আউস ও খাযরাজের দায়িত্বশীল লোকগণ মহানবী সা. এর নিকট পত্র লিখলেন যে, এখানে আলমদিল্লাহ ইসলাম প্রচার হয়েছে। এখন আমাদের এখানে কোন সাথীকে পাঠিয়ে দিন, যিনি আমাদেরকে কুরআনে কারীম শিক্ষা দিবেন। মানুষকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিবেন। আমাদেরকে শরীয়তের আহকাম শিক্ষা দিবেন এবং নামাযে আমাদের ইমাম হবেন। মহানবী সা. মুসআব ইবনে উমাইর রা.কে কুরআনে কারীম শিক্ষা দেয়ার জন্য পাঠালেন। ইসলামে সর্বপ্রথম মাদরাসার ভিত্তি মদীনা তায়্যিবায় স্থাপিত হল। [সীরাতে হালবিয়া ১/৪০৩/

 

পরবর্তী বছর হজ্বের সময় মদীনা তায়্যিবার এক বড় কাফেলা মক্কা মুয়ায্যামায় পৌঁছল। তন্মধ্যে সত্তরজন পুরুষ ও দুইজন নারী ছিল। নবী কারীম সা.তাদেরকে স্বাগতম জানালেন এবং তাদের সাথে আকাবার নিকট রাতে সাক্ষাতের ওয়াদা করলেন। ওয়াদানুযায়ী অর্ধ রাতে সকলেই একত্রিত হল। মহানবী সা. এর সাথে তাঁর চাচা আব্বাস রা. তাশরীফ আনেন। (যদিও সে সময় আব্বাস মুসলমান হননি)।

 

যখন সকলেই একত্রিত হল হযরত আব্বাস রা. তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, ইনি (নবী কারীম সা.) আমার ভাতিজা। সর্বদা তিনি নিজ গোত্রে সম্মানী ও হেফাজতের সাথে আছেন। তোমরা যারা তাকে মদীনায় নিয়ে যেতে চাচ্ছ, তোমরা দেখ, যদি তোমরা তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করতে পার এবং তার বিরুদ্ধবাদীদের থেকে তাকে পরিপূর্ণভাবে হেফাজত করতে পার তাহলে তার দায়িত্ব নাও, অন্যথায় তাকে নিজ গোত্রে থাকতে দাও ।

 

মদীনার কাফেলার সরদার বলল, নিঃসন্দেহে আমরা তাঁর দায়িত্ব নিচ্ছি। আমাদের এটাই উদ্দেশ্য যে, মহানবী সা.-এর বাইয়াত পূর্ণ করব। একথা শুনে (অঙ্গীকার এবং বাইয়াত পোক্তা করার জন্য) হযরত আসআদ ইবনে যুরারা রা. বলে উঠলেন,“হে মদীনাবাসী! একটু থাম। তোমরা উপলব্ধি করতে পারছ যে, আজ তোমরা কোন বস্তুর উপর বাইয়াত গ্রহণ করছ। এই বাইয়াত সমস্ত আরব ও অনারবের মুকাবালা ও বিরোধিতার অঙ্গীকার। তোমরা যদি তা পালন করতে পার তাহলে বাইয়াত হও, অন্যথায় ওজর দেখাও। তার কথার উপর সকলেই এক বাক্যে বলে উঠল যে, আমরা কোন অবস্থাতেই এই বাইয়াত থেকে সরব না। তারপর নিবেদন করল, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমরা এই অঙ্গীকার পূর্ণ করি তাহলে এর প্রতিদান কি পাওয়া যাবে? মহানবী সা. ইরশাদ করলেন, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও জান্নাত। এ শুনে সকলেই বলে উঠল আমরা এতে রাজি। আপনি পবিত্র হাত বাড়ান, আমরা বাইয়াত হব। মহানবী সা. হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং সকলেই বাইয়াত গ্রহণ করলেন।

 

সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি

 

আল্লাহ জানেন যে, এই সত্যবাদী রাসূলের করু ণার দৃষ্টির প্রতিক্রয়া এবং কয়েকটি বাক্য ঐসমস্ত লোকদের উপর কি প্রভাব ফেলল যে, একটি মাত্র সান্নিধ্যে দুনিয়ার সমস্ত সম্পর্ক, মর্যাদা ও সম্পদের ভালবাসা হৃদয় থেকে দূর হয়ে শুধু এক পবিত্র আল্লাহর ভালবাসা এই পরিমাণ গভীরে উপনীত হল যে,জান, মাল, ইজ্জত ও সম্মান উহার বিপরীতে কুরবানী করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল । এমনকি তাদের এই অবস্থা তাদের সন্তানদের পর্যন্ত বহাল থাকল ।


 

হযরত উম্মে উমারা যিনি বাইয়াতে শরীক ছিলেন, তার পুত্র হযরত হাবীবের ঘটনা, তাকে নবুওয়াতের দাবীদার মুসাইলামা কাজ্জাব গ্রেফতার করে বিভিন্ন শাস্তিতে রেখে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে হত্যা করে। কিন্তু এই অঙ্গীকারের বিপরীত কোন কালিমা মুখ থেকে বের করেননি। এই জালিম তাকে জিজ্ঞেস করত যে, তুমি সাক্ষ্য দাও মুহাম্মদ সা. আল্লাহ তায়ালার রাসূল। তখন তিনি বলতেন: অবশ্যই। অতঃপর জিজ্ঞেস করত একথারও সাক্ষ্য দাও আমিও আল্লাহর রাসূল। তখন তিনি বলতেন, কখনই নয়। তার পর সে তার একটি অঙ্গ কেটে নিত। অতঃপর দ্বিতীয় বার তাকে এভাবে জিজ্ঞেস করত। যখন তিনি তার নবুওয়াত মানতে অস্বীকার করতেন তখন হতভাগা তার আরেকটি অঙ্গ কেটে ফেলত। এভাবে এক এক অঙ্গ করে কাটতে কাটতে সমস্ত শরীর টুকরা টুকরা করল। -[সীরাতে হালবিয়া পৃ ৪০৯]

 

মোটকথা, তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। কিন্তু জায়েয হওয়া সত্ত্বেও এটা পছন্দ করলেন না যে, ইসলামের বিপরীত কোন শব্দ মুখ থেকে বের করবেন। কবির ভাষায়

اگر چه خر من عمرم غم تو داد بیاد بخاک پائے عزیزت کہ عبد نشکستم

অর্থাৎ, ওহে প্রিয়! আমার গোটা জীবন বিলীন যদিও বাসনায় তোমার তোমার পদধূলির শপথ আজো ভঙ্গ করিনি অঙ্গীকার।

এরপর সবাই বাইয়াত হলেন। ঐ সময় যারা বাইয়াত হয়েছিল তাদের সংখ্যা তেহাত্তর জন পুরুষ আর দুইজন নারী। এই বাইয়াতের নাম বাইয়াতে আকাবায়ে সানী। এরপর মহানবী সা. তাদের মধ্য থেকে বারজন লোককে সমস্ত কাফেলার আমীর যুক্ত করেন। [হালবিয়া পৃ ৪১১]

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color