শবে বরাতের আমল কি কি?
11:04:54 12/03/2023
শবে বরাতের আমল কি কি? আজকের রাতে অধিক হারে নফল নামাজ আদায় করার জন্য চেষ্টা করব। দু'রাকাত নফল নামাজ যদি আল্লাহর দরবারে কবুল হয় আমরা জান্নাতে যাওয়ার জন্য সে দু'রাকাতেই যথেষ্ট হয়ে যাবে । বোখারী এবং মুসলিম শরীফের হাদীস-
ان تعبد الله كانك تراه فان لم تكن تراه فاته پراک
অর্থাৎ এমনভাবে তুমি এবাদত করব আল্লাহকে যেন তুমি দেখছো । অতটুকু যেতে না পারলেও অন্তত মনে করবে যেন আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। আমি আল্লাহর দরবারে দাঁড়িয়েছি শুরু থেকে সালাম ফিরানো পর্যন্ত পুরা দু'রাকাত নামাজে যদি আমার মনোভাব থাকে অবশ্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার নামাজ কবুল করবেন ।
বৎসরের প্রতি রাতেই তো আমরা ঘুমাচ্ছি। অন্তত কয়েকটি রাত, শা'বানের মধ্য রাত, কদরের রাত এবং দুই ঈদের রাত জাগ্রত থেকে পূর্ণরাত এবাদত করে আল্লাহর দরবারে যদি কাটিয়ে দিই তাহলে আমাদের কোন ক্ষতি হবেনা । কাজেই পুরা রাত এবাদত করার জন্য আমরা চেষ্টা করব। নামাজ পড়বো, এরপর সুন্দর ভাবে শুদ্ধ করে কোরআন তেলাওয়াত করার চেষ্টা করতে হবে । যখন জান্নাতের কথা আসবে 'জান্নাত' শব্দ আসবে তখন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করব, হে আল্লাহ, তুমি আমাকে জান্নাতের অধিকারী করে দাও।
আর যখন জাহান্নাম শব্দ আসবে তখনও আল্লাহর কাছে বলব, হে আল্লাহ তুমি আমাকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ দাও । এভাবে কোরআনে কারীমের তেলাওয়াত করব। এরপর বেশি করে আল্লাহর নবীর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করব। এক বার যে ব্যক্তি আল্লাহর নবীর উপর দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার উপর দশটি রহমত নাজিল করবেন।
যে দোয়ার শুরুতে আল্লাহর নবীর উপর দরূদ পড়া হয়না আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা কবুল করেন না । এজন্য দোয়ার শুরুতেও দরূদ পাঠ করতে হবে এবং শেষেও দরূদ পাঠ করতে হবে। সংক্ষিপ্ত দরুদ আছে যেমন : 'সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম' বা
الصلوة والسلام على سيد الانبياء والمرسلين
‘আসসালাতু ওয়াসালামু আলা সৈয়্যদিল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন' ছোট বড় দরূদ শরীফ বেশি করে আমরা পড়ব। এর পর আমরা ‘ইস্তেগফার করব ।
استغفر الله من كل ذنب واتوب اليه
হে আল্লাহ অনেক গোনাহ করেছি সে গোনাহ থেকে আমরা ক্ষমা চাই এটাকে বলা হয় ‘ইস্তেগফার'। বার বার করতে থাকব। কারণ এটা তাওবার রাত, গোনাহ মাফ চাওয়ার রাত। এজন্য দরূদ এবং ইস্তেগফার বেশি বেশি আদায় করতে হবে । আর রাতে আমরা কবর যিয়ারত করব। একটু আগেই হযরত আয়েশা (রাঃ)-র বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, এ রাতে মহানবী (সাঃ) কে জান্নাতুল বাকীতে যিয়ারত করার অবস্থায় তিনি দেখতে পেয়েছেন । কাজেই কবর যিয়ারত করার জন্য আমরা চেষ্টা করব।
দিনে রোযা পালন
ইবনে মাজাহ শরীফের হাদীসে আছে-
اذا كانت ليلة النصف من شعبان فقو موا ليلها وصوموا نهارها
যখন শাবানের মধ্যরাত আসবে তখন তোমরা আল্লাহর দরবারে দাঁড়িয়ে এবাদত কর, আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি কর, ইবাদতের মাধ্যমে রাতকে জাগ্রত কর। আর দিনের বেলায় রোজা রাখ। শাবান মাসে আল্লাহর রাসূল সবচেয়ে বেশি রোজা রাখতেন, বিশেষ করে মধ্য শাবান ১৫ তারিখের রোজা রাখার কথা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত
যারা অসুস্থ কিংবা দুর্বল পুরা রাত এবাদত করার সুযোগ হবেনা, তারা তাড়াতাড়ি শুয়ে ভোর রাতে উঠে যাবেন। যাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায়। কারণ তাহাজ্জুদের সময় দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে মধ্য শাবানের এই রাতে তাহাজ্জুদ যেন কারো ছুটে না যায়। রাতে যখন পরিবারের সবাই জাগ্রত থাকবে এই রাতে যদি আমি তাহাজ্জুদ পড়তে না পারি আমার চেয়ে পোড়া কপাল আর কে হতে পারে ।
এজন্য দুর্ভাগা মানুষের তালিকায় যেন আমার নাম অন্তর্ভূক্ত না হয়। সেহরী খেয়ে ফজরের নামাজ মসজিদে এসে জামাতে আদায় করার জন্য চেষ্টা করতে হবে, কারণ হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি এশার নামাজ এবং ফজরের নামাজ মসজিদে এসে জামাতের সাথে আদায় করবেন। কাজেই এশা এবং ফজরের নামাজকে প্রথম তাকবীরের সাথে আদায় করার চেষ্টা করতে হবে। এটাই হল সংক্ষিপ্ত ভাবে আজকের এবাদতের নিয়ম।