মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ১০ উপায় - 10 ways to maintain good mental health
01:04:21 12/14/2023
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ১০ উপায় : খুব কম লোকই আছেন যারা সকালে ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর সজীব বোধ করেন। চোখ জ্বালা করা, মাথা ভার ভার অনুভূতি, আলস্য প্রভৃতি উপসর্গ লেগেই থাকে। অথচ প্রত্যেকেই চান সকাল বেলাটায় ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠতে। সকালবেলাটায় অস্বস্তি মানে সারাটা দিন নির্জীব হয়ে থাকা। প্রকৃত পক্ষে রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না বলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তাই এখানে এমন কিছু টিপস দেয়া হলো যা অনুসরণ করলে আপনার চমৎকার ঘুম হবে, সজীব লাগবে নিজেকে এবং কেটে যাবে সারাদিনের অস্বস্তি।
০১. ঘর নিস্তব্ধ রাখুন
যে ঘরে আপনি ঘুমোবেন, লক্ষ রাখবেন সেখানে যেন বাইরের শোরগোল কম ঢোকে। কেননা বেশি আওয়াজে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। আপনি যদি তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় থাকেন তাহলে শব্দের জন্য আপনি ঘুমের গভীর ধাপে প্রবেশ করতে পারবেন না। এসব ক্ষেত্রে আপনি দু'কানে তুলো গুঁজে নিতে পারেন।
০২. ঘরটা আরামদায়ক তাপমাত্রায় রাখুন
অনেকের ধারণা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ঘুম ভালো হয়, কিন্তু এ ধারণা ভুল। ভালো ঘুমের জন্য অনুকূল তাপমাত্রা হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। সুতরাং আপনার ঘরটিকে এরকম তাপমাত্রায় বিন্যস্ত করুন।
০৩. এলকোহল পরিহার করুন
কেউ কেউ মনে করেন ঘুমোতে যাবার আগে এলকোহল পান করলে বুঝি ঘুমটা ভালো হবে। কিন্তু এ ধারণা ভুল। এলকোহল পানে স্নায়ু উত্তেজিত হয় এবং কার্যত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়া এলকোহল মূত্র বর্ধক হিসেবে কাজ করে বিধায় রাতে ঘনঘন বাথরুমে যাবার প্রয়োজন হয়। এসব কারণে সকালবেলাটা বিশ্রী লাগে। সুতরাং এলকোহল পরিহার করাটাই এক্ষেত্রে বুদ্ধিমানের কাজ।
০৪. ধূমপান ত্যাগ করুন
কারও কারও অভ্যাস রয়েছে ঘুমোতে যাবার আগে ধূমপান করা। ঘুমোতে যাবার আগে কিংবা দিনের যে কোনো ভাগে ধূমপানের ফলে নিকোটিনসমূহ আমাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করে তোলে। ফলে ঘুমটা কখনোই আরামদায়ক হয় না । পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যারা ধূমপান ছেড়ে দেন তারা ধূমপান ছাড়ার ৩ দিনের মধ্যে চমৎকার ঘুমোতে পারেন।
০৫. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত সকালে ব্যায়ামে করলে তা আপনার আলস্য কাটিয়ে আপনাকে সজীব হতে সহায়তা করবে। অনেকে ঘুমোতে যাবার আগে ব্যায়াম করেন। কিন্তু এটা একটি ভুল প্রয়োগ। কেননা ঘুমোতে যাবার আগে ব্যায়াম করলে কার্যত ঘুমের ব্যাঘাতই ঘটে। গবেষকদের মতে ঘুমোতে যাবার আগে আধঘণ্টা ধীরলয়ে হাঁটলে আরামদায়ক ঘুম হয় । কিন্তু অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে তা আপনার ঘুমকে বিতাড়িত করবে।
০৬. নিয়ম মাফিক কাজ করুন
সময় মতো নিয়ম মাফিক কাজ করার চেষ্টা করবেন, নইলে পরে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে হুলস্থুল বাঁধবে এবং আপনার কাজে বিঘ্ন ঘটবে। এর ফলে এক ধরনের মানসিক চাপে আপনাকে আক্রান্ত হতে হবে যা বস্তুত আপনার ঘুমকে ব্যাহত করবে। আর চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোতে যাবার। এতে একটা অভ্যাস তৈরি হবে। নতুবা একেক দিন একেক সময় ঘুমোতে গেলে আপনার ঘুমের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।
০৭. সান্ধ্যকালীন চা-কফি পান থেকে বিরত থাকুন
চা কিংবা কফি সুন্দর ঘুমের জন্য ক্ষতিকর। ঘুমোতে যাবার কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা আগে থেকে চা কিংবা কফি পান বন্ধ রাখাই উত্তম। কফিতে ক্যাফেইন নামক এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্ককে ৭ ঘণ্টা পর্যন্ত জাগ্রত রাখতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে তা ২০ ঘণ্টা পর্যন্তও কার্যকর থাকে। সুতরাং সন্ধ্যা বেলায় চা কিংবা কফি পান থেকে বিরত থাকাই ভালো।
০৮. বিছানায় যাবার আগে মনকে শান্ত করুন
উত্তেজনা নিয়ে কখনও ঘুমোতে যাবেন না। এতে আপনার ঘুম তো ঠিক মতো হবেই না উপরন্তু মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ঘুমোতে যাবার আগে মনটাকে শান্ত করুন। ঝেড়ে ফেলুন মাথায় আটকে থাকা সমস্ত চিন্তাভাবনা।
০৯. গোসল করুন
প্রতিদিন অন্তত দু'বার গোসল করুন। গোসলের ফলে আপনার মনে প্রযুদ্ধভাব জাগ্রত হবে। শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তার নিচে থাকুন। গোসলের সময় নরম ব্রাশ দিয়ে হালকা ভাবে সমস্ত শরীরে ঘষুন। দেখবেন দূর হয়ে গেছে সমস্ত ক্লান্তি।
১০. ঘরের ভেতর রোদ আসতে দিন
আপনার জানালার পর্দা সরিয়ে রাখুন যাতে ঘরে ভোরের আলো প্রবেশ করতে পারে। রোদ খুব সহজে ঘুম ভাঙাতে পারে। গবেষকরা বলেন, ঘড়ির এলার্ম কিংবা রেডিওর শব্দ শুনে ঘুম ভাঙার চেয়ে ভোরের মিষ্টি রোদের পরশে ঘুম ভাঙাটা বেশি চিত্তাকর্ষক, আনন্দময় ।
● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন