Narrow selection

​​​​​​​বদর যুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য - Bodor juddher tatporjo


03:41:20 12/10/2023

বদর যুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য : দ্বিতীয় হিজরীর রমযান মাসে সংঘটিত হয়েছিল গাযওয়ায়ে বদরে কুবরা (তথা বদর প্রান্তরের বৃহত্তম যুদ্ধ)। এটাই ছিল সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধ যা মুসলিম জাতির ভবিষ্যৎ নিরাপদ ও নিশ্চিত করেছিল; ইসলামী দাওয়াতের কণ্টকাকীর্ণ পথ সুগম ও সহজ করেছিল। আর যার ওপরই তখন নির্ভরশীল ছিল গোটা বিশ্ব মানবতার আদর্শিক ও আধ্যাত্মিক গন্তব্য।

এ কারণেই পরবর্তী সময়ে ইসলামী সমর-ইতিহাসের পরতে পরতে সে যতগুলো সফলতা আর বিজয়ের বরমাল্যে ভূষিত হয়েছিল, এক লা-শরীক ইলাহ আর রিসালতে মুস্তফার কালিমা খচিত ঝাণ্ডা পৃথিবীর যতগুলো ভূখণ্ডের আকাশে সগর্বে উড়েছিল- তারা সবাই বদর প্রান্তরের সেই প্রকাশ্য বিজয়ের কাছে ঋণী হয়ে আছে। আর এ কারণেই আল্লাহ তাআলা এ যুদ্ধের নাম: রেখেছেন 'ফয়সালার দিন'। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

إِن كُنتُمْ آمَنتُمْ بِاللَّهِ وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَى عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ

যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের ওপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। [সূরা আনফাল: ৪১ ]

যুদ্ধের পটভূমি: রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে সংবাদ এসে পৌঁছল, কুরাইশের একটি বিশাল বাণিজ্যিক কাফেলা আবু সুফিয়ান ইবনে হরবের নেতৃত্বে সিরিয়া থেকে ফিরে আসছে। সেখানে রয়েছে তাদের বহু দিনের কামাই- প্রচুর ধন-সম্পদ আর মূল্যবান ব্যবসায়িক সরো সামান। মনে রাখতে হবে, এটা ছিল সেই সময়ের কথা- যখন ইসলামের অনুসারী মুসলমান আর শিরক পূজারী সেই কুরাইশদের মাঝে সংঘাত আর সংঘর্ষের ছাইচাপা আগুন থেকে থেকে জ্বলে উঠছিল। 

ইসলামের বিরুদ্ধে যে কোনো সুযোগে কোমর বেঁধে রণাঙ্গনে নেমে আসতে, আল্লাহর পথে বাধা দিতে আর মুসলমানদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার লক্ষ্যে তাদের পথে বড় বড় খুঁটি দিতে তারা এতটুকু ত্রুটি করছিল না। ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ক্ষেত্রে, মুসলমানদেরকে বেহাল দশার ভাগাড়ে ঠেলে ফেলার ক্ষেত্রে তারা দিনরাত তাদের সকল শক্তি-সামর্থ্য, উপায়-উপকরণ আর অর্থ-সম্পত্তি দেদারসে ঢেলে যাচ্ছিল। ইতোমধ্যেই তাদের সেনাবাহিনী মদীনা সীমান্তের প্রতি হাত বাড়িয়েছিল, মদীনার চারণভূমিতে এসে হুলুস্থুল কাণ্ড বাধিয়ে গিয়েছিল।

পাশাপাশি রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এ সংবাদও পৌঁছেছিল যে, এ বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আবু সুফিয়ান (তখনো তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি)। তিনি ছিলেন তখন ইসলামের বিরুদ্ধে সকল দুশমনি আর ষড়যন্ত্রের গুরুঠাকুর। তাই রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সঙ্গে সঙ্গে সাহাবায়ে কিরামের একটি বাহিনী প্রস্তুত করলেন। বাকি এখানে যেহেতু কোনো সশস্ত্র সংগ্রামের ব্যাপার ছিল না; তাই এ সেনা অভিযাত্রার জন্য বড় ধরনের কোনো আহ্বান আয়োজন করা হয়নি।

অপরদিকে যখন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ বাহিনী প্রেরণের সংবাদ আবু সুফিয়ানের কানে গিয়ে পড়ল তিনি তৎক্ষণাৎ মুসলিম বাহিনী থেকে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কুরাইশদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে ঝড়ো গতিতে এক দূত পাঠিয়ে দিলেন। দূতের মুখে অনাকাঙ্খিত এ বিপদের কথা শুনে সকলে কান খাড়া করল। চরম উন্মাদনায় ফেটে পড়ে দ্রুত এক বিশাল বাহিনী প্রস্তুত করে ফেলল। কুরাইশের নেতৃস্থানীয় একজনও এ বাহিনী থেকে পাশ কাটিয়ে পেছনে বসে রইল না। আশপাশের কীলাগুলোও এসে তাদের দলে ভিড়ল।

হাতে গনা কয়েকটি কুরাইশী শাখাগোত্র কেবল তাদের সঙ্গে এলো না। এভাবে অতি অল্প সময়ে এক বিশাল বাহিনী মক্কা থেকে বের হলো। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে প্রত্যেকের দাঁত তখন কড়মড় করছিল। নাক আর কান দিয়ে হিংসার ধোঁয়া বের হচ্ছিল। রাগে আর ক্রোধে সবাই ঠোঁট কামড়াচ্ছিল।

 

● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color