Narrow selection

বনু হাশিমের সঙ্গে কুরাইশদের বয়কট - Bonu Hasemer Ghotona


03:42:52 12/11/2023

বনু হাশিমের সঙ্গে কুরাইশদের বয়কট : ধীরে ধীরে ইসলাম আরবের অন্যান্য কবীলার মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে লাগল। তখন কুরাইশরা একটি জায়গায় সমবেত হয়ে সবাই পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিলো- বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবকে বয়কট করতে হবে। তাদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে। তাদের সঙ্গে আমরা আমাদের কাউকে বিয়ে দিব না। আবার তাদের কাউকে বিয়ে করব না। তাদের কাছে কিছু বেচব না। আর তাদের কিছু আমরা কিনব না। এই ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা একটি কাগজে চুক্তিনামা লিখল এবং এটা কাবার দরজায় ঝুলিয়ে দিলো।

শি’আবে আবী তালিবে

যখন কুরাইশরা এমন করল, বনু হাশিম আর বনু মুত্তালিব তখন আবু তালিবের কাছে গেল। অতঃপর তারা তাকে নিয়ে আবু তালিবের ঘাঁটিতে প্রবেশ করল। এটা ছিল নবুওতের সপ্তম বছরের মুহাররম মাসের ঘটনা।

বনু হাশিম থেকে কেবল আবু লাহাব বের হয়ে কুরাইশদের দলে যোগ দিয়েছিল। এভাবেই বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিব সেই ঘাঁটিতে অবস্থান করলেন। এক পর্যায়ে অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করল। অভাবে তারা গাছের পাতা খেয়ে থাকতে লাগলেন। বাচ্চারা ক্ষুধার তাড়নায় উচ্চস্বরে বিলাপ করতে লাগল। এমনকি বাইরে থেকে তাদের কান্নার আওয়ায শোনা যেত। কুরাইশরা তাদেরকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিছু কিনতে দিত না। পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিত যাতে করে তারা কিছু কিনতে না পারে।

এভাবেই কেটে গেল তিনটি বছর। গোপনে ব্যতীত তাদের কাছে কিছুই পৌঁছতে পারত না। রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই অবস্থাতেই স্বীয় কওমকে দিনে রাতে, গোপনে প্রকাশ্যে ইসলামের দিকে ডাকতে লাগলেন। আর বনু হাশিম সওয়াবের প্রত্যাশায় ধৈর্য ধারণ করে থাকতে লাগল ।

বয়কটের অবসান

তিন বছর পরে কুরাইশের কিছু ভালো ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ এই বয়কটের বিরোধিতা করতে লাগল। তাদের সবার সামনে ছিলেন হিশাম ইবনে আমর ইবনে রবীআ। তখন অন্যান্য অনেকেই এই বয়কট চুক্তির বিরোধিতা করতে লাগলেন। হিশাম ছিলেন আত্মীয়তার সম্পর্কের প্রতি খুবই সচেতন ও জাগ্রত মানুষ। 

তিনি কুরাইশের অনেক ব্যক্তিদের কাছে গেলেন। তাদেরকে এই ব্যাপারে খুব বুঝালেন। এক পর্যায়ে মোট পাঁচজন এই চুক্তির বিরোধিতার জন্য দাঁড়িয়ে গেল। কুরাইশদের এক মজলিসে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী যুহাইর ইবনে আবী উমাইয়্যা- তার মা আতিকা ছিলেন আব্দুল মুত্তালিবের মেয়ে দাঁড়িয়ে বললেন, হে মক্কাবাসী! আমরা খাবার খাবো। আমরা কাপড় পরব। আর বনু হাশিম ওদিকে হালাক হয়ে যাবে- কত ভালো আর সুন্দর ফয়সালা তাই না? খোদার কসম! আজ আমি সেই চুক্তিনামা না ছিঁড়ে বসব না।

আবু জাহল তার কথার মাঝখানে বাম হাত ঢুকাতে চাইল। কিন্তু আজ সে আর পারল না। মুতঈম বিন আদী সঙ্গে সঙ্গে চুক্তিপত্রটি ছিড়ে ফেলার জন্য উঠে দাঁড়ালো। সে দেখল- উইপোকা 'বিসমিকা আল্লাহুম্মা' জায়গাটুকু বাদ দিয়ে আর সবকিছু খেয়ে ফেলেছে। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতঃপূর্বেই আবু তালিবকে এই কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। এভাবে সেটা টুকরা টুকরা করে দেওয়া হলো এবং বয়কট শেষ হলো।

আবু তালিব ও খাদীজার ওফাত

নবুওতের দশম বছর আবু তালিব ও খাদীজা রা. ইন্তেকাল করলেন। ইসলাম ও ইসলামের নবীর প্রতি তদের মায়া আর মমতা, দরদ আর ভালোবাসা সম্পর্কে জানে না এমন লোকের সংখ্যা ভারি দুর্লভ। আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ করেননি। এভাবে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওপর একের পরে এক মুসীবত আসতেই থাকে।

● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color