শিশুর আয়রনের ঘাটতি হলে করণীয় - Child Helth tips
05:41:05 12/10/2023
শিশুর আয়রনের ঘাটতি হলে করণীয় : গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু রক্ত স্বল্পতায় ভোগে। এর কারণ হলো তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন খায় না। যদি আয়রনের অভাব পূরণ করা না হয় তাহলে—এ অবস্থায় শিশুদের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, তাদের দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং মানসিক সক্ষমতা কমে যায়।
জীবনের প্রথম বছরে শিশুর মস্তিষ্ক বিস্ময়করভাবে বেড়ে ওঠে। এ স্তরে আয়রন সংকটপূর্ণ। এ সময়ে এটার অভাব ঘটলে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। এ সময়ে এ সমস্যার প্রধান কারণ হলো দ্রুত মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেয়া এবং শিশুকে গরুর দুধ দেয়া। কিন্তু সাধারণ গরুর দুধ আয়রনের ভালো উৎস নয়।
কমপক্ষে জীবনের প্রথম বছরে এবং দ্বিতীয় বছরের প্রথম কয়েক মাসে শিশুকে অবশ্যই মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে কিংবা প্রয়োজন দেখা দিলে পাউডারড ইনফ্যান্ট মিল্ক খাওয়াতে হবে। পাউডারড ইনফ্যান্ট ফর্মুলা আয়রনসমৃদ্ধ। বুকের দুধের আয়রন খুব অনায়াসে শোষিত হয়। কিন্তু ৪-৫ মাস পর দুধ একা যথেষ্ট নয়। মা এ সময়ে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যাবেন, কিন্তু তাকে নিশ্চিত হতে হবে যে শিশু যেন শক্ত খাবার থেকেও আয়রন পায়।
নির্দ্বিধায় বলা চলে মাংসে পর্যাপ্ত আয়রন রয়েছে, কিন্তু নিরামিষ উৎস এক্ষেত্রে ভালো। এক্ষেত্রে শিশুকে ফল খাওয়ানো যেতে পারে, তাহলে আয়রনের সাথে সে ভিটামিন-সিও পাবে। ভিটামিন-সি আয়রন শোষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ক্ষেত্র বিশেষে আয়রনের অভাব পূরণ করার জন্য আয়রন সাপ্লিমেন্ট দেয়া যেতে পারে যদি সময় মতো এটা বন্ধ করা যায়।
শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হবার জন্য একমাত্র বাস্তব উপায় হলো সাধারণ রক্ত পরীক্ষা। সাধারণভাবে এই পরীক্ষা শিশুর ১৪ মাস বয়সে করা যেতে পারে যখন মা তার শিশুকে রুটিন মাম্পস, হাম বা মিজেলস ও রুবেলা টিকা দেবার জন্য নিয়ে আসেন। যদিও অধিকাংশ মা সচরাচর তাদের শিশুদের রক্ত পরীক্ষা করতে দিতে চান না। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, সব শিশুর ক্ষেত্রেই রুটিন হিসেবে এ পরীক্ষা করা উচিত। পরীক্ষায় শিশুর আয়রনের ঘাটতি ধরা পড়লে চিকিৎসক শিশুকে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার ও দুধের ব্যবস্থাপত্র দেবেন। এতে শিশু আয়রনের ঘাটতি থেকে রেহাই পাবে। ফলে তার আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা হবে না।
বাবা-মায়েদের করণীয়
- নিচের সাধারণ নির্দেশাবলী মেনে চললে বাবা-মা তাদের শিশুদের আয়রনের ঘাটতি প্রতিহত করতে পারবেন-
- শিশুর চার মাস বয়সের সময় আয়রনসমৃদ্ধ শক্ত খাবার শুরু করতে হবে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে আয়রনসমৃদ্ধ খাদ্যশস্য, মাংস, মাছ কিংবা ডিম।
- আয়রনসমৃদ্ধ শাক সবজি যেমন ব্রকলি, মসুরের ডাল এবং শিম বা মটর শুঁটি খাওয়াতে হবে। একই সময়ে শিশুকে ভিটামিন-সি দেবেন। এতে আয়রন শোষণের
- মাত্রা বাড়বে।
- শিশুকে দুধ চা না দেয়াই ভালো। কারণ চায়ে বিদ্যমান ট্যানিন আয়রন শোষণে বাধা দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্মগ্রহণকারী শিশুর এবং খুব কম ওজনের শিশুর ঝুঁকি বেশি থাকে, কারণ তাদের সঞ্চিত আয়রন কম। এ কারণে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।