আমিনা ও আব্দুল মুত্তালিবের ওফাত - Death of Amina and Abdul Muttalib
00:57:07 12/14/2023
আমিনা ও আব্দুল মুত্তালিবের ওফাত : আমরা আগেই বলে এসেছি যে, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মানিত পিতা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব তাঁর শুভজন্মের আগেই ইন্তেকাল করেছিলেন। তিনি সিরিয়া থেকে বাণিজ্যিক কাফেলা নিয়ে ফিরছিলেন। এমতাবস্থায় পথিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মদীনায় তার মামার গোষ্ঠী বনু আদী বিন নাজ্জারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখানেই যৌবনের এক সুন্দর বসন্তে আব্দুল্লাহ পার্থিব জীবনের সমাপ্তি টানেন। তখন তার বয়স কত ছিল- এই নিয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক বিতর্ক ও বাদানুবাদ। ওয়াকেদীর মতে, তখন তার বয়স ছিল ২৫ বছর। কেউ কেউ আরও কম হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
মা আমিনার ওফাত
রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বয়স যখন ছয় বছর হলো, তখন তার সম্মানিতা মাতা আমিনা নিজ পিতাকে দেখা এবং স্বামী আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিবের কবর যিয়ারতের নিমিত্ত মদীনার পথে যাত্রা করেন। কিন্তু মদীনা থেকে ফেরার পথে মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী আবওয়া নামক স্থানে এসে আমিনাও ধরাধাম ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান। এভাবে সেই অচিন ভূখণ্ডে এক অবুঝ শিশু পৃথিবীতে তার ওপর সবচেয়ে বড় স্নেহময়ী আত্মা জননীকেও হারিয়ে ফেললেন।
তবে এটাই তার জীবনের ঝড় ঝঞ্ঝার উদ্বোধন ছিল না। বরং যেদিন তিনি এই পৃথিবীর আলো-বাতাসে চোখ মেলে চেয়েছিলেন- সেদিন থেকেই তিনি নিয়ত এমন অভিজ্ঞতার মুখামুখি হচ্ছিলেন। আর এর মধ্যেই লুক্কায়িত ছিল মহামহীম আল্লাহর পক্ষ থেকে তার শিক্ষা-দীক্ষা আর লালন-পালনের যিম্মাদারির এক বিশাল রহস্য- যা তিনি ব্যতীত পৃথিবীর আর কোনো মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। অতঃপর হাবশী বাঁদী উম্মে আইমন বারকা তাকে নিয়ে মক্কায় উপস্থিত হয়ে দাদা আব্দুল মুত্তালিবের হাতে তুলে দেন। এরপর থেকে তিনি দাদা আবদুল মুত্তালিবের ছায়ায় বড় হতে থাকেন।
দাদা আব্দুল মুত্তালিবের ইন্তেকাল
অতঃপর যখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বয়স আট বছর হলো, তখন দাদা আব্দুল মুত্তালিবও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ওপারে চলে যান। এবার তিনি যে আঘাত পান তা প্রথম আঘাতের চেয়ে ছিল আরও বেশি বেদনার। আরও বেশি মারাত্মক। কেননা তিনি কোনো দিন নিজের পিতাকে এক নজর দেখেননি। ফলে তার স্নেহ আর মায়া-মমতার পরশও কখনো অনুভব করেননি। সেই হিসেবে পিতা হারানোর অনুভূতি ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক ও স্বভাবজাত। আর এর বিপরীতে আজকের দাদা হারানোর অনুভূতি ছিল বাস্তবিক, আক্ষরিক আর অভিজ্ঞতামূলক। আর এই দুই বেদনার মাঝে পার্থক্য সুস্পষ্ট।
● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন