মুহাজির ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন - Establishing brotherhood
06:20:51 12/10/2023
মুহাজির ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন : অতঃপর রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুহাজির ও আনসার সাহাবায়ে কিরামের মাঝে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দিয়েছিলেন। সহমর্মিতার ভিত্তিতে তিনি তাদের মাঝে ভাইয়ের সম্পর্ক গড়ে দিয়েছিলেন। আনসাররা মুহাজিরদের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিজেদের মাঝে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনকি কখনো কখনো এর জন্য লটারি দিতে হতো। তারা তাদের মুহাজির ভাইদেরকে নিজেদের ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, ধন-সম্পদ, জায়গা-জমি, এমনকি নিজেদের ওপরও অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন ।
আনসার তার মুহাজির ভাইকে বলতেন, আপনি আমার অর্ধেক সম্পদ নিয়ে নিন। আমার অধীনে দু'জন স্ত্রী রয়েছে। তাদের দু'জনের যেজন আপনার বেশি ভালো লাগে- আমি তাকে তালাক দিয়ে দিই, আপনি তাকে বিয়ে করে নিবেন। আর তখন মুহাজির ভাই বলতেন, আল্লাহ তাআলা আপনার ধন-সম্পদ আর পরিবারের মধ্যে বরকত দান করুন। আপনি কেবল আমাকে বাজারের রাস্তাটুকু বলে দিন ।
সুতরাং আনসারদের পক্ষ থেকে ছিল কুরবানি ও উৎসর্গ আর মুহাজিরদের পক্ষ থেকে ছিল আত্মসংবরণ।
মুহাজির ও আনসারদের মাঝে গেঁথে দেওয়া এই ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক ছিল পরবর্তীতে গোটা দুনিয়াজুড়ে ইসলামের অভাবনীয় ও বিস্ময়কর ভ্রাতৃত্বের মূল ভিত্তি। বস্তুত এটা ছিল একটি নতুন দাওয়াত, নতুন ঈমান আর নতুন পয়গামের মুকাদ্দমা। যেটা এমন একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলবে- যার ভিত্তি হবে আল্লাহতে সঠিক ও সুদৃঢ় ঈমান, যেই নতুন পৃথিবীর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য আর গন্তব্য হবে সম্পূর্ণ নির্ভেজাল।
যেটা গোটা বিশ্ব চরাচরকে অধঃপতন, বিলুপ্তি, ধ্বংস আর আত্মাহুতির আগুনে ঝাঁপ দেওয়া থেরে সুরক্ষা নিশ্চিত করার সনদ দিতে পারে। যেটা পৃথিবীর মানুষের মাঝে এমন একটি নতুন সম্পর্ক আর একটি নতুন বন্ধন গড়ে দেয়- যে সম্পর্ক গোটা দুনিয়ার ইতিহাসে তখনো পর্যন্ত অজানা ছিল। বস্তুত মুহাজির ও আনসারদের এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিল গোটা দুনিয়া আর ইনসানিয়াতের জন্য এক নয়া যিন্দিগির সূচনা। আর এত সব দিকের প্রতি লক্ষ রেখেই পবিত্র কুরআন সেই ছোট একটি শহরের হাতে গনা কিছু মানুষকে সম্বোধন করে বলছে: অর্থাৎ তোমরা যদি এমন ব্যবস্থা না কর, তবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বিস্তার লাভ করবে এবং দেশময় বড়ই অকল্যাণ হবে। সূরা আনফাল: ৭৩]
● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন