Narrow selection

স্বাস্থ্য সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান - Home remedies for health problems


00:59:43 12/14/2023

স্বাস্থ্য সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান : বেশকিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় আপনার চিকিৎসকের কাছে যাবার প্রয়োজন হয় না। কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও পরামর্শ মেনে চললেই সমস্যা কেটে যায়। রোগ নিরাময়ের এ ব্যবস্থাকে ঘরোয়া প্রতিষেধক বলা হয় । চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করে এসব পদ্ধতি বের করেছেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, ওষুধের মতো চিকিৎসাক্ষেত্রে এসব প্রাকৃতিক বস্তুসমূহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যদি তেমন কোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে তাহলে তা সাথে সাথেই বাদ দিতে হবে।

দই বা ঘোল ছত্রাক সংক্রমণ বাড়ায়

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী ছত্রাক সংক্রমণ ঘটেছে এমন নারীদের প্রত্যহ ১ কাপ দুধজাত দই বা ঘোল গ্রহণে তাদের সংক্রমণ দুই তৃতীয়াংশ আরো বেড়ে গেছে। কিন্তু শুধুমাত্র দই, যার মধ্যে এসিডোফাইলাস নামক ব্যাকটেরিয়া সংযোগ করা হয়েছে তা ছত্রাক সংক্রমণ কমিয়ে দেয়। বাদামি গরু এবং পাথুরে জমির খামারের গবাদিসমূহের কোনটায় এই ব্যাকটেরিয়া আছে তা খুঁজে বের করুন। প্রতিরোধক হিসেবে শুধুমাত্র এসিডোফাইলাসপূর্ণ দইকে সুপারিশ করা হয়। তা চুলকানি এবং যোনির সংক্রমণ কমিয়ে দেয়। ছত্রাক বিরোধী ওষুধ হিসেবে অথবা শুক্রনাশক হিসেবে তা যোনিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বেকিং সোডা চুলকানি কমায়

পেয়ালার এক চতুর্থাংশ থেকে এক তৃতীয়াংশ ঠাণ্ডা পানি অথবা বাথটাবের অর্ধেক সহযোগে বেকিং সোডা শরীরের ছোট ছোট লাল ফুসকুড়ি, চিকেনপক্স (জলবসন্ত), অথবা লতাপাতার বিষ নাশ করে। কখনো কখনো তা যোনি অথবা পায়ুদেশের চুলকানিও উপশম করে। আপনি ঘষে ঘষে এটা প্রয়োগ করতে পারেন অথবা এ দিয়ে আক্রান্ত জায়গা সিক্ত করতে পারেন। বেকিং সোডা ও পানির তৈরি পেস্ট পোকামাকড় এবং মৌমাছির কামড়ে খুবই কার্যকর। বেকিং সোডার ক্ষারত্ব চামড়ার চুলকানি বন্ধ করে।

টেপ আঁচিল বা জডুলে মুছে ফেলে

আপনি আঁচিল বা জঙুলের মতো কুৎসিত বৃদ্ধি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারেন তাদের অল্প কয়েক সপ্তাহ মুড়ে রেখে। আঁচিল বা জঙুলের উপরে আঠালো টেপ চার ধাপে লাগাবেন। তা এমন বায়ুরোধী হয় যেন আপনার আঙুলে তা না সরে যায়। সাড়ে ৬ দিন এভাবে রাখবেন। ৬ দিনের পরের অর্ধ দিনে এটা খুলবেন এবং তখন নতুন আরেকটি প্রয়োগ করবেন। আঁচিল বা জড়ুল মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এরকম করতে থাকবেন। সাধারণত সময় লাগে দুই থেকে দশ সপ্তাহ।

আদা দুর্বল পাকস্থলীকে শান্ত রাখে

যদি আপনার মা আপনাকে গোলমেলে পাকস্থলীর জন্য আদা দেন, তাহলে বলতে হবে তিনি একটি কাজের মতো কাজ করেছেন। পাকস্থালীর উপর আদার একটি শান্তকর প্রভাব রয়েছে। হাঁটাচলা করার সময় যাদের বমিবমি ভাব, বমি অথবা মাথা ঘোরে—আদার রস তাদের জন্য খুব কার্যকর। দু'কাপ পানিতে আদা মিশিয়ে চায়ের মতো খান। আদা দিয়ে তৈরি চা আপনার পাকস্থলীর জন্য সুখকর। প্রতি কাপে এক চা চামচ লেবু; লবঙ্গ নির্যাস এবং রোজমারি সমানভাবে মেশান।

আদা চা ঠাণ্ডার জন্যও সহায়ক হতে পারে। এটা আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং সংক্রমিত শ্বাস পথের জীবাণু ধ্বংস করে ও কোষ সুস্থ করতে সাহায্য করে।

বুক ভারি হওয়া এবং স্বল্প ব্রংকাইটিসের জন্য আপনি যা করবেন তা হলো- একটি ছোট তোয়ালে আরামদায়ক গরম আদা চা দিয়ে ভেজান। অতঃপর তা আপনার বুকের উপর রাখুন। একটি প্লাস্টিক মোড়ক এবং একটি তোয়ালে দিয়ে তা ঢেকে রাখুন যে পর্যন্ত না স্থানটি ঠাণ্ডা হয়। আদামূল কখনো সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করবেন না-তা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।

চায়ের ব্যাগ ঘর্মাক্ত পায়ের তালু এবং যন্ত্রণাদায়ক দুষ্ট ক্ষতকে শুকনো রাখে চায়ের ট্যানিক এসিড এসট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে যার ফলে পা শুকনো এবং গন্ধহীন থাকে । (এসট্রিনজেন্ট হলো এক ধরনের পদার্থ যা দেহজ কলা ও রক্তনালিকাসমূহ সংকুচিত করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে)। দু'টি চায়ের ব্যাগ সহকারে ১ পাইন্ট পানি ১৫ মিনিট ধরে ফুটান। তারপর তাতে ২ লিটার ঠাণ্ডা পানি মেশান। সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ মিনিট তাতে পায়ের তালু ভিজিয়ে রাখুন। যন্ত্রণাদায়ক দুষ্ট ক্ষতের জন্য কুসুম গরম পানিতে একটি চায়ের ব্যাগ ভেজান এবং ক্ষতের উপরে কয়েক মিনিট ধরে রাখুন।

ঠাণ্ডা এবং ফুর বিরুদ্ধে রসুন যুদ্ধ করে

রসুনের রাসায়নিক উপাদান জীবাণু ধ্বংসের মাধ্যমে রোগ উপশম করে। ঠাণ্ডা, গলাব্যথা অথবা ফ্লুতে তা কাছে রাখুন। সঙ্গে দু'তিনটে লবঙ্গ যোগ করুন। সর্বোচ্চ উপশম ক্ষমতার জন্য বিশেষ স্যুপ এভাবে তৈরি করুন : ভিটামিন 'এ' এবং 'সি' সমৃদ্ধ (গাজর, ফুলকপি, সবজি, টমেটো, লাল ও সবুজ মরিচ) ভেজিটেবল স্যুপে রসুন, লবঙ্গ এবং আদা মেশান। সবধরনের ঠাণ্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাবার জন্য এটা এক মহৌষধ। রসুনের গন্ধ পরিহার করুন। অনেক দোকানে রসুন ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়, তা সংগ্রহ করুন।

মালোক্স দুষ্টক্ষতকে শান্ত রাখে

হজমের গণ্ডগোলের জন্য এলুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড (উদাহরণস্বরূপ মালোক্স) ব্যবহার করা যায়। চায়ের ব্যাগের মতো তা দুষ্টক্ষতের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে। তরল পদার্থ দুষ্ট ক্ষতের উপর আবরণ তৈরি করে যা পুনরায় জ্বালাপোড়া থেকে একে রক্ষা করে । প্রশমনের জন্য এন্টাসিডের সাথে এন্টিহিস্টামিন ডাইফেন হাইড্রামিন (উদাহরণস্বরূপ বেনাড্রিল যা তরল আকারে বাজারে পাওয়া যায়) যোগ করা যেতে পারে। আপনার মুখের চারপাশে তা এক অথবা দুই মিনিটের জন্য মাখুন, তারপর তা ধুয়ে ফেলুন।

আকুপাংচার বমিভাব এবং ব্যথা লাঘব করে

বমিবমি ভাব দূর করতে আপনার কজির উপরের বিন্দুতে চাপ প্রয়োগ করুন। আপনার কব্জির ভেতরের দিকের দুটো বড় টেনডনের মধ্যকার খাঁজ খুঁজে বের করুন যা তালুর গোড়া থেকে কনুই পর্যন্ত গিয়েছে। কব্জির প্রায় দুই ইঞ্চি উপরে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ প্রয়োগ করুন যে পর্যন্ত না আপনি কিছুটা ব্যথা অনুভব করেন। এতে স্বল্প দুর্বলতার দ্রুত উপশম ঘটে। অতিরিক্ত বমিবমি ভাব দূর করতে হলে প্রায় ২০ মিনিট ধরে বারবার চাপ প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। 

চাপ প্রয়োগের অন্য বিন্দুটি হলো বুড়ো আঙুল এবং কড়ে আঙুলের মধ্যবর্তী পাতলা মাংসল জায়গাটি, যেখানে মাঝারি ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়। ঐ ত্রিকোণ স্থানের এক ইঞ্চি জুড়ে একটি দাগ খুঁজে বের করুন, যেখানে শুধু চামড়া নয়, মাংস রয়েছে এবং সেখানে চাপ প্রয়োগ করুন যতক্ষণ না ব্যথা অনুভব করেন। তিন থেকে চারবার এ রকম করুন অথবা কয়েক মিনিট যাবত চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। এ পদ্ধতি মাথা অথবা গাড়ের ব্যথা সারাতে বিশেষ কার্যকর, যদিও এ পদ্ধতিতে যে কোনো ব্যথাই সেরে যায়। কারণ, এটার মাধ্যমে এনডোরফিন নিঃসরণ হয় যা শরীরের প্রাকৃতিক ব্যথানাশক।

শুকনো কাপড় বাচ্চার ব্যথা প্রশমন করে

বাসায়, গাড়িতে কিংবা কোথাও বেড়াতে গেলে বাচ্চাকে শুকনো কাপড়ে জড়িয়ে রাখুন। বাচ্চার বিছানা সর্বদা শুকনো রাখুন।

মরিচের গুড়ো ঠাণ্ডা পায়ের পাতা গরম রাখে

লালমরিচের গুঁড়ো যা সরাসরি আপনার চামড়ায় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে না, তা আপনার ঠাণ্ডা পায়ের পাতার জন্য কার্যকর। আপনি পায়ের পাতার উপর তা ছড়িয়ে দিন, দেখবেন কেমন উষ্ণতা অনুভব করছেন।

চিনি কাটা এবং পোড়া সারায়

এটি টিস্যু থেকে পানি শুষে নেয় যার ফলে পুনরায় ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হতে পারে না এবং তখন ক্ষতস্থান পরিষ্কার থাকে, ক্ষত তাড়াতাড়ি সারে এবং কাটাদাগ কমে। প্রকৃতপক্ষে চিনি এত আর্দ্রতামুক্ত যে, তিন অথবা চার ভাগ চিনির সাথে একভাগ এটা অল্প পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ক্ষতস্থানে ছড়িয়ে দিতে হবে। এবং তা সাধারণ গজ এবং টেপ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। প্রত্যহ ড্রেসিং পরিবর্তন করতে হবে এবং পুরানো চিনি ধুয়ে ফেলে নতুন চিনির পেস্ট প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে দুটো শর্ত রয়েছে-যে কোনো কাটার ক্ষেত্রে যদি রক্তপাত হয় তাহলে চিনি প্রয়োগের পূর্বে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। কারণ, চিনি রক্ত জমাট হওয়াকে বাধা দিতে পারে। এবং সাধারণ সাদা দানাযুক্ত চিনি ব্যবহার করুন।

বরফ পোকামাকড়ের কামড়, আঠালো সাইনাস এবং দাঁতের ব্যথা উপশম করে

বরফ ঘরোয়া প্রতিষেধক হিসেবে খুব কার্যকর। কোথাও আগাত পেলে, আক্রান্ত স্থানকে বিশ্রাম দিন। তারপর সেখানে বরফ প্রয়োগ করুন। বরফ চেপে ধরার ফলে আপনার ফোলা কমে যাবে। পোকামাকড়ের কামড়ে ব্যথা এবং চুলকানো সারাতে বরফ ব্যবহার করুন। আপনার চুলকানোর জায়গায় বরফ ঘষতে থাকুন। আপনার কপালে এবং গালে স্থাপন করুন-যে পর্যন্ত তা ঠাণ্ডা না হয়। তারপর বরফ পানিতে কাপড় চুবান এবং আগের মতো সমান সময়ে তা একই পদ্ধতিতে প্রয়োগ করুন। এভাবে ১০ বার করুন। এই পদ্ধতি সাইনাস গহ্বর থেকে নিউকাস বের করতে সাহায্য করে।

দাঁতের ব্যথায় বরফ ভালো কাজ করে। বরফখণ্ড টিস্যুতে বুড়ো আঙুল এবং অনামিকা সহযোগে ঘষতে থাকুন। ঠাণ্ডা স্নায়ুর উপর এতো বেশি প্রভাব ফেলে যে, বরফ দিয়ে ম্যাসেজ করলে ব্যথা কমে যায়।

বিশ্রাম মেরুদণ্ডের ব্যথা কমায়

যদি আপনার মেরুদণ্ডের নিচে ব্যথা করে তবে আরামদায়ক অবস্থানে শুয়ে পড় না । প্রয়োজনে মেরুদণ্ডের নিচে বালিশ ব্যবহার করুন, তা আপনার হাঁটুর নিচেও রাখতে পারেন। এমন চেয়ারে বসুন যার পিছনটা একেবারে খাড়া এবং ঘুমোনোর সময় শক্ত বিছানা বেছে নিন। দেখবেন একদিনে আপনার ব্যথা কমে গেছে। কিন্তু যদি ব্যথা আপনার দেহের পশ্চাদভাগে অথবা পায়ে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কখন আপনি চিকিৎসক ডাকবেন?

অনেক ঘরোয়া প্রতিষেধক খুব কার্যকর। স্বল্প অসুস্থতায় আপনি ঘরোয়া প্রতিষেধকের মাধ্যমে চেষ্টা করে দেখুন। আপনার সমস্যার উপর নির্ভর করে আপনার প্রতিষেধকের ক্রিয়া।

যদি আপনি এতে ভালোবোধ না করেন তাহলে আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বেশিরভাগ ঘরোয়া চিকিৎসা হলো সাময়িক ব্যবস্থা যদি সমস্যা এক রাত থাকে, তাহলে কোনো কথা নেই, কিন্তু যদি তা বেশিদিন থাকে এবং বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই চিকিৎসক ডাকবেন।পোভিডন আয়োডিন মিশিয়ে সল্যুশন বানানো যায়। কিন্তু বিশেষ করে ছোটখাট কাটা, ছড়ে যাওয়া অথবা পোড়ার ক্ষেত্রে সাধারণ চিনি ভালো কাজ করে।

স্বাস্থ্য সমস্যায় ঘরোয়া সমাধান : বেশকিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় আপনার চিকিৎসকের কাছে যাবার প্রয়োজন হয় না। কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও পরামর্শ মেনে চললেই সমস্যা কেটে যায়। রোগ নিরাময়ের এ ব্যবস্থাকে ঘরোয়া প্রতিষেধক বলা হয় । চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করে এসব পদ্ধতি বের করেছেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, ওষুধের মতো চিকিৎসাক্ষেত্রে এসব প্রাকৃতিক বস্তুসমূহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যদি তেমন কোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে তাহলে তা সাথে সাথেই বাদ দিতে হবে।

দই বা ঘোল ছত্রাক সংক্রমণ বাড়ায়

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী ছত্রাক সংক্রমণ ঘটেছে এমন নারীদের প্রত্যহ ১ কাপ দুধজাত দই বা ঘোল গ্রহণে তাদের সংক্রমণ দুই তৃতীয়াংশ আরো বেড়ে গেছে। কিন্তু শুধুমাত্র দই, যার মধ্যে এসিডোফাইলাস নামক ব্যাকটেরিয়া সংযোগ করা হয়েছে তা ছত্রাক সংক্রমণ কমিয়ে দেয়। বাদামি গরু এবং পাথুরে জমির খামারের গবাদিসমূহের কোনটায় এই ব্যাকটেরিয়া আছে তা খুঁজে বের করুন। প্রতিরোধক হিসেবে শুধুমাত্র এসিডোফাইলাসপূর্ণ দইকে সুপারিশ করা হয়। তা চুলকানি এবং যোনির সংক্রমণ কমিয়ে দেয়। ছত্রাক বিরোধী ওষুধ হিসেবে অথবা শুক্রনাশক হিসেবে তা যোনিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বেকিং সোডা চুলকানি কমায়

পেয়ালার এক চতুর্থাংশ থেকে এক তৃতীয়াংশ ঠাণ্ডা পানি অথবা বাথটাবের অর্ধেক সহযোগে বেকিং সোডা শরীরের ছোট ছোট লাল ফুসকুড়ি, চিকেনপক্স (জলবসন্ত), অথবা লতাপাতার বিষ নাশ করে। কখনো কখনো তা যোনি অথবা পায়ুদেশের চুলকানিও উপশম করে। আপনি ঘষে ঘষে এটা প্রয়োগ করতে পারেন অথবা এ দিয়ে আক্রান্ত জায়গা সিক্ত করতে পারেন। বেকিং সোডা ও পানির তৈরি পেস্ট পোকামাকড় এবং মৌমাছির কামড়ে খুবই কার্যকর। বেকিং সোডার ক্ষারত্ব চামড়ার চুলকানি বন্ধ করে।

টেপ আঁচিল বা জডুলে মুছে ফেলে

আপনি আঁচিল বা জঙুলের মতো কুৎসিত বৃদ্ধি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারেন তাদের অল্প কয়েক সপ্তাহ মুড়ে রেখে। আঁচিল বা জঙুলের উপরে আঠালো টেপ চার ধাপে লাগাবেন। তা এমন বায়ুরোধী হয় যেন আপনার আঙুলে তা না সরে যায়। সাড়ে ৬ দিন এভাবে রাখবেন। ৬ দিনের পরের অর্ধ দিনে এটা খুলবেন এবং তখন নতুন আরেকটি প্রয়োগ করবেন। আঁচিল বা জড়ুল মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এরকম করতে থাকবেন। সাধারণত সময় লাগে দুই থেকে দশ সপ্তাহ।

আদা দুর্বল পাকস্থলীকে শান্ত রাখে

যদি আপনার মা আপনাকে গোলমেলে পাকস্থলীর জন্য আদা দেন, তাহলে বলতে হবে তিনি একটি কাজের মতো কাজ করেছেন। পাকস্থালীর উপর আদার একটি শান্তকর প্রভাব রয়েছে। হাঁটাচলা করার সময় যাদের বমিবমি ভাব, বমি অথবা মাথা ঘোরে—আদার রস তাদের জন্য খুব কার্যকর। দু'কাপ পানিতে আদা মিশিয়ে চায়ের মতো খান। আদা দিয়ে তৈরি চা আপনার পাকস্থলীর জন্য সুখকর। প্রতি কাপে এক চা চামচ লেবু; লবঙ্গ নির্যাস এবং রোজমারি সমানভাবে মেশান।

আদা চা ঠাণ্ডার জন্যও সহায়ক হতে পারে। এটা আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং সংক্রমিত শ্বাস পথের জীবাণু ধ্বংস করে ও কোষ সুস্থ করতে সাহায্য করে।

বুক ভারি হওয়া এবং স্বল্প ব্রংকাইটিসের জন্য আপনি যা করবেন তা হলো- একটি ছোট তোয়ালে আরামদায়ক গরম আদা চা দিয়ে ভেজান। অতঃপর তা আপনার বুকের উপর রাখুন। একটি প্লাস্টিক মোড়ক এবং একটি তোয়ালে দিয়ে তা ঢেকে রাখুন যে পর্যন্ত না স্থানটি ঠাণ্ডা হয়। আদামূল কখনো সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করবেন না-তা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।

চায়ের ব্যাগ ঘর্মাক্ত পায়ের তালু এবং যন্ত্রণাদায়ক দুষ্ট ক্ষতকে শুকনো রাখে চায়ের ট্যানিক এসিড এসট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে যার ফলে পা শুকনো এবং গন্ধহীন থাকে । (এসট্রিনজেন্ট হলো এক ধরনের পদার্থ যা দেহজ কলা ও রক্তনালিকাসমূহ সংকুচিত করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে)। দু'টি চায়ের ব্যাগ সহকারে ১ পাইন্ট পানি ১৫ মিনিট ধরে ফুটান। তারপর তাতে ২ লিটার ঠাণ্ডা পানি মেশান। সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ মিনিট তাতে পায়ের তালু ভিজিয়ে রাখুন। যন্ত্রণাদায়ক দুষ্ট ক্ষতের জন্য কুসুম গরম পানিতে একটি চায়ের ব্যাগ ভেজান এবং ক্ষতের উপরে কয়েক মিনিট ধরে রাখুন।

ঠাণ্ডা এবং ফুর বিরুদ্ধে রসুন যুদ্ধ করে

রসুনের রাসায়নিক উপাদান জীবাণু ধ্বংসের মাধ্যমে রোগ উপশম করে। ঠাণ্ডা, গলাব্যথা অথবা ফ্লুতে তা কাছে রাখুন। সঙ্গে দু'তিনটে লবঙ্গ যোগ করুন। সর্বোচ্চ উপশম ক্ষমতার জন্য বিশেষ স্যুপ এভাবে তৈরি করুন : ভিটামিন 'এ' এবং 'সি' সমৃদ্ধ (গাজর, ফুলকপি, সবজি, টমেটো, লাল ও সবুজ মরিচ) ভেজিটেবল স্যুপে রসুন, লবঙ্গ এবং আদা মেশান। সবধরনের ঠাণ্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাবার জন্য এটা এক মহৌষধ। রসুনের গন্ধ পরিহার করুন। অনেক দোকানে রসুন ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়, তা সংগ্রহ করুন।

মালোক্স দুষ্টক্ষতকে শান্ত রাখে

হজমের গণ্ডগোলের জন্য এলুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড (উদাহরণস্বরূপ মালোক্স) ব্যবহার করা যায়। চায়ের ব্যাগের মতো তা দুষ্টক্ষতের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে। তরল পদার্থ দুষ্ট ক্ষতের উপর আবরণ তৈরি করে যা পুনরায় জ্বালাপোড়া থেকে একে রক্ষা করে । প্রশমনের জন্য এন্টাসিডের সাথে এন্টিহিস্টামিন ডাইফেন হাইড্রামিন (উদাহরণস্বরূপ বেনাড্রিল যা তরল আকারে বাজারে পাওয়া যায়) যোগ করা যেতে পারে। আপনার মুখের চারপাশে তা এক অথবা দুই মিনিটের জন্য মাখুন, তারপর তা ধুয়ে ফেলুন।

আকুপাংচার বমিভাব এবং ব্যথা লাঘব করে

বমিবমি ভাব দূর করতে আপনার কজির উপরের বিন্দুতে চাপ প্রয়োগ করুন। আপনার কব্জির ভেতরের দিকের দুটো বড় টেনডনের মধ্যকার খাঁজ খুঁজে বের করুন যা তালুর গোড়া থেকে কনুই পর্যন্ত গিয়েছে। কব্জির প্রায় দুই ইঞ্চি উপরে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ প্রয়োগ করুন যে পর্যন্ত না আপনি কিছুটা ব্যথা অনুভব করেন। এতে স্বল্প দুর্বলতার দ্রুত উপশম ঘটে। অতিরিক্ত বমিবমি ভাব দূর করতে হলে প্রায় ২০ মিনিট ধরে বারবার চাপ প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। 

চাপ প্রয়োগের অন্য বিন্দুটি হলো বুড়ো আঙুল এবং কড়ে আঙুলের মধ্যবর্তী পাতলা মাংসল জায়গাটি, যেখানে মাঝারি ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়। ঐ ত্রিকোণ স্থানের এক ইঞ্চি জুড়ে একটি দাগ খুঁজে বের করুন, যেখানে শুধু চামড়া নয়, মাংস রয়েছে এবং সেখানে চাপ প্রয়োগ করুন যতক্ষণ না ব্যথা অনুভব করেন। তিন থেকে চারবার এ রকম করুন অথবা কয়েক মিনিট যাবত চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। এ পদ্ধতি মাথা অথবা গাড়ের ব্যথা সারাতে বিশেষ কার্যকর, যদিও এ পদ্ধতিতে যে কোনো ব্যথাই সেরে যায়। কারণ, এটার মাধ্যমে এনডোরফিন নিঃসরণ হয় যা শরীরের প্রাকৃতিক ব্যথানাশক।

শুকনো কাপড় বাচ্চার ব্যথা প্রশমন করে

বাসায়, গাড়িতে কিংবা কোথাও বেড়াতে গেলে বাচ্চাকে শুকনো কাপড়ে জড়িয়ে রাখুন। বাচ্চার বিছানা সর্বদা শুকনো রাখুন।

মরিচের গুড়ো ঠাণ্ডা পায়ের পাতা গরম রাখে

লালমরিচের গুঁড়ো যা সরাসরি আপনার চামড়ায় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে না, তা আপনার ঠাণ্ডা পায়ের পাতার জন্য কার্যকর। আপনি পায়ের পাতার উপর তা ছড়িয়ে দিন, দেখবেন কেমন উষ্ণতা অনুভব করছেন।

চিনি কাটা এবং পোড়া সারায়

এটি টিস্যু থেকে পানি শুষে নেয় যার ফলে পুনরায় ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হতে পারে না এবং তখন ক্ষতস্থান পরিষ্কার থাকে, ক্ষত তাড়াতাড়ি সারে এবং কাটাদাগ কমে। প্রকৃতপক্ষে চিনি এত আর্দ্রতামুক্ত যে, তিন অথবা চার ভাগ চিনির সাথে একভাগ এটা অল্প পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ক্ষতস্থানে ছড়িয়ে দিতে হবে। এবং তা সাধারণ গজ এবং টেপ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। প্রত্যহ ড্রেসিং পরিবর্তন করতে হবে এবং পুরানো চিনি ধুয়ে ফেলে নতুন চিনির পেস্ট প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে দুটো শর্ত রয়েছে-যে কোনো কাটার ক্ষেত্রে যদি রক্তপাত হয় তাহলে চিনি প্রয়োগের পূর্বে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। কারণ, চিনি রক্ত জমাট হওয়াকে বাধা দিতে পারে। এবং সাধারণ সাদা দানাযুক্ত চিনি ব্যবহার করুন।

বরফ পোকামাকড়ের কামড়, আঠালো সাইনাস এবং দাঁতের ব্যথা উপশম করে

বরফ ঘরোয়া প্রতিষেধক হিসেবে খুব কার্যকর। কোথাও আগাত পেলে, আক্রান্ত স্থানকে বিশ্রাম দিন। তারপর সেখানে বরফ প্রয়োগ করুন। বরফ চেপে ধরার ফলে আপনার ফোলা কমে যাবে। পোকামাকড়ের কামড়ে ব্যথা এবং চুলকানো সারাতে বরফ ব্যবহার করুন। আপনার চুলকানোর জায়গায় বরফ ঘষতে থাকুন। আপনার কপালে এবং গালে স্থাপন করুন-যে পর্যন্ত তা ঠাণ্ডা না হয়। তারপর বরফ পানিতে কাপড় চুবান এবং আগের মতো সমান সময়ে তা একই পদ্ধতিতে প্রয়োগ করুন। এভাবে ১০ বার করুন। এই পদ্ধতি সাইনাস গহ্বর থেকে নিউকাস বের করতে সাহায্য করে।

দাঁতের ব্যথায় বরফ ভালো কাজ করে। বরফখণ্ড টিস্যুতে বুড়ো আঙুল এবং অনামিকা সহযোগে ঘষতে থাকুন। ঠাণ্ডা স্নায়ুর উপর এতো বেশি প্রভাব ফেলে যে, বরফ দিয়ে ম্যাসেজ করলে ব্যথা কমে যায়।

স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায় কী?

বিশ্রাম মেরুদণ্ডের ব্যথা কমায়

যদি আপনার মেরুদণ্ডের নিচে ব্যথা করে তবে আরামদায়ক অবস্থানে শুয়ে পড় না । প্রয়োজনে মেরুদণ্ডের নিচে বালিশ ব্যবহার করুন, তা আপনার হাঁটুর নিচেও রাখতে পারেন। এমন চেয়ারে বসুন যার পিছনটা একেবারে খাড়া এবং ঘুমোনোর সময় শক্ত বিছানা বেছে নিন। দেখবেন একদিনে আপনার ব্যথা কমে গেছে। কিন্তু যদি ব্যথা আপনার দেহের পশ্চাদভাগে অথবা পায়ে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কখন আপনি চিকিৎসক ডাকবেন?

অনেক ঘরোয়া প্রতিষেধক খুব কার্যকর। স্বল্প অসুস্থতায় আপনি ঘরোয়া প্রতিষেধকের মাধ্যমে চেষ্টা করে দেখুন। আপনার সমস্যার উপর নির্ভর করে আপনার প্রতিষেধকের ক্রিয়া।

যদি আপনি এতে ভালোবোধ না করেন তাহলে আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বেশিরভাগ ঘরোয়া চিকিৎসা হলো সাময়িক ব্যবস্থা যদি সমস্যা এক রাত থাকে, তাহলে কোনো কথা নেই, কিন্তু যদি তা বেশিদিন থাকে এবং বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই চিকিৎসক ডাকবেন।পোভিডন আয়োডিন মিশিয়ে সল্যুশন বানানো যায়। কিন্তু বিশেষ করে ছোটখাট কাটা, ছড়ে যাওয়া অথবা পোড়ার ক্ষেত্রে সাধারণ চিনি ভালো কাজ করে।

 

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color