Narrow selection

​​​​​​​বদর যুদ্ধে মুসলমানদের অস্ত্রবল কেমন ছিল- Muslim Power in badr War


03:39:29 12/10/2023

বদর যুদ্ধে মুসলমানদের অস্ত্রবল কেমন ছিল : তিন শ' তেরো জন সাহাবী নিয়ে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্রুত বের হয়ে এলেন মদীনা থেকে। বলতে গেলে ইসলামের ইতিহাসের সর্বপ্রথম এই বৃহত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ গাযওয়াতে মুসলিম বাহিনী ছিল ভাঙাচুরা। জোড়াতালি দেওয়া। 

পুরো বাহিনীতে নামে মাত্র দু'টি ঘোড়া ছিল। সর্বসাকুল্যে উট ছিল সত্তরটি। একটি উটের পিঠে দু'জন তিনজন করে একজনের পর একজন ধারাবাহিকভাবে উঠতেন এ ছিল সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত যেখানে ইসলামের সাম্যের অশ্রুত ও অদৃষ্টপূর্ব দৃশ্য আরেকবার পৃথিবী দেখতে পেয়েছিল। যেখানে একজন সাধারণ সেনা ও সিপাহসালারের মাঝে কোনো ব্যবধান ছিল না।

যেখানে অগ্রগামী ও অনুগামী, অনুসারী ও অনুসৃতের মাঝে কোনো ফারাক ছিল না। এভাবে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং আবু বকর ও উমর রা. এর মতো বড় বড় সাহাবায়ে কিরামও অপর একজন সাধারণ সেনার মতো অধিকার লাভ করেছিলেন।

পুরো মুসলিম বাহিনীর বড় ও মূল ঝাণ্ডাটি দেওয়া হলো মুসআব বিন উমাইর রা. কে। মুহাজির ও আনসারদের পতাকা ছিল যথাক্রমে আলী ইবনে আবী তালিব ও সা'দ বিন মুয়ায রা. এর হাতে।

যখন আবু সুফিয়ান মুসলমানদের বের হওয়ার সংবাদ পেলেন তৎক্ষণাৎ তিনি চুপিসারে মক্কাগামী মূলপথ ছেড়ে উপকূলের পথ ধরে কাফেলা নিয়ে দ্রুত অগ্রসর হতে লাগলেন। পরক্ষণে বিপদ-সীমান্ত পেরিয়ে যখন তিনি কাফেলার সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হলেন তখন কুরাইশের কাছে পত্র পাঠিয়ে তাদেরকে মক্কায় ফিরে যেতে বললেন। 

তাদেরকে তিনি লিখলেন, তোমরা ফিরে যাও! কারণ তোমরা তো এসেছিলে তোমাদের কাফেলা রক্ষা করতে। আবু সুফিয়ানের এ পত্র পেয়ে সবাই ফিরে যেতে মনোস্থ করল। কিন্তু বাধ সাধল কেবল ইতরপ্রাণ আবু জাহল । কুরাইশদের সংখ্যা ছিল এক হাজারের চেয়ে কিছুটা বেশি ।৩৩৪ এ বাহিনীতে ছিল তাদের বড় বড় সরদার আর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ । কুরাইশদের বড় বড় বীর আর তাদের মাথাগুলির কেউই অনুপস্থিত ছিল না সেখানে। তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, 'এই তো মক্কা এবার তোমাদের সামনে তার কলিজার টুকরোগুলো পেশ করেছে।

রণ-নায়কের ভূমিকায় রিসালতের মহান নায়ক

হিদায়াত আর আসমানী পথ-নির্দেশনার প্রকৃত ধারা-নির্ঝর রিসালতের সুমহান বিভায় মণ্ডিত হওয়ার পাশাপাশি রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রণ-কুশলতা ও সামরিক প্রজ্ঞা ফুটে উঠছিল এ সময়কার প্রতিটি পদক্ষেপে। বাহিনী পরিচালনা, সেনা-সারি বিন্যাস, শত্রুশিবিরের অবস্থা ও অবস্থান অবগতি, আর খতরা ও বিপদের প্রতিটি দরজা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ নিপুণতা প্রস্ফুটিত হচ্ছিল। সীরাতের বড় বড় গ্রন্থগুলোতে এর বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। ৩৩৫

চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি

বদর প্রান্তরেই রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অবস্থানের জন্য একটি তাঁবু নির্মাণ করা হলো। এখান থেকে পুরো ময়দান দেখা যেত। অতঃপর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রণাঙ্গনে শান্ত পদক্ষেপে হাঁটতে লাগলেন আর হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বলতে লাগলেন, আগামী কাল অমুকে এখানে ধারাশায়ী হবে ইনশাআল্লাহ! আগামীকাল এটা অমুকের মরণশয্যা হবে ইনশাআল্লাহ। পরবর্তী সময়ে হবহু তা-ই হয়েছিল। সকলেই সে জায়গাগুলিতে মারা পড়েছিল।

অতঃপর আচানক ময়দানে মুশরিকদের উদয় ঘটল। উভয় বাহিনী যখন সামনাসামনি একে অপরকে দেখছিল তখন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আল্লাহ! এইতো কুরাইশ বাহিনী দত্ত ভরে আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে। অহঙ্কারে ফুলে উঠে আপনার রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে এসেছে।

সাঁঝের শোণিমা ছড়িয়ে ধীরে ধীরে দ্বিতীয় হিজরীর ১৬ ই রমযান বৃহস্পতিবার দিনের শেষে ১৭ই রমযান শুক্রবারের রাত নেমে এলো। নিস্তব্ধ ও নিস্তরঙ্গ এই ক্ষণদার উপসংহারে যে আলোকিত ভোর অপেক্ষা করছিল সে ভোরই জন্ম দিয়েছিল ইতিহাসের এক বিস্ময়কর কারিশমা।

 

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color