শহীদের লাশ বহু বছর পরও অক্ষত থাকার প্রমাণ - Shahider Lash
14:44:59 12/13/2023
শহীদের লাশ বহু বছর পরও অক্ষত থাকার প্রমাণ : মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক গ্রন্থে আছে, হযরত আমর ইবনে জামুহ আনসারী (রা) এবং আবদুল্লাহ ইবনে আমর আনসারী (রা) উভয়ে ওহুদ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে শহীদ হলে দু'জনকেই একই কবরে দাফন করা হয়। দীর্ঘ ছেচল্লিশ বছর পর পানি প্রবাহের কারণে তাদের কবরটি ভেঙ্গে যায়। তখন অন্যস্থানে দাফন করার প্রয়োজনে তাদের কবর খনন করা হয়। খননান্তে তাদের লাশ দু'টি সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়, বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। দেখে মনে হচ্ছিল যেন, তাঁরা গতকাল শহীদ হয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে একজনের দেহে জখম ছিল এবং দাফনের পূর্বে যখমের স্থানটি তাঁর নিজ হাত দ্বারা চেপে ধরা ছিল। প্রথমবার এ অবস্থায়ই তাদেরকে দাফন করা হয়, দ্বিতীয়বার কবর খননের পর জখম হতে হাত সরান হয়েছিল, কিন্তু পুনরায় হাত নিজে নিজেই পূর্বের স্থানে এসে স্থাপিত হল। ওহুদ যুদ্ধ এবং এ ঘটনার মধ্যে ব্যবধান ছিল ছেচল্লিশ বছর । ---মুয়াত্তারে ইমাম মালেক।
এ ঘটনাকে আল্লামা ইবনে কাছীর (র) আল বিদায়া ওয়াননিহায়া গ্রন্থে এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ওহুদ যুদ্ধের শহীদগণকে যে স্থানে দাফন করা হয়েছিল, সে স্থান দিয়ে মুয়াবিয়া (রা)-এর শাসনামলে একটি নহর খননের পরিকল্পনা করা হল। তখন শহীদগণের লাশ মোবারক অন্যত্র সরানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, আমি সেখানে শহীগণের কবর খনন করেছি। আমি আমার পিতার লাশ এমন অবস্থায় পেলাম যে, মনে হয় তিনি যেন নিজের অভ্যাস মাফিক ঘুমিয়ে আছেন।
তাঁর কবরে তাঁর সাথে আমর ইবনে জামুহ আনসারী (রা)-কেও দাফন করা হয়েছিল। আমি তাকে দেখলাম, তাঁর হাত দ্বারা দেহের একটি যখম চেপে ধরা। হাতটি জখম হতে সরান হলে জখম থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে লাগল। এরপর আল্লামা ইবনে কাছীর (রঃ) লেখেছেন, এ কথা প্রচলিত রয়েছে যে, তাদের কবর থেকে মেশকের সুঘ্রাণ পাওয়া গিয়েছিল। আর এ ঘটনা দাফন করা থেকে ছেচল্লিশ বছর পরের ঘটনা।
এছাড়া আল্লামা ইবনে কাছীর (র) মুহাদ্দিস বায়হাকী (র)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে লেখেছেন : মুয়াবিয়া (রা)-এর শাসনামলে ওহুদ প্রান্তর দিয়ে নহর কাটার জন্য মাটি খনন করা হয়। খননকালে শহীদ হামযা (রা)-এর পায়ে গিয়ে কোদালের আঘাত লাগে। এর ফলে লাশের আহত স্থান থেকে রক্তধারা প্রবাহিত হচ্ছিল। আল বিদায়া ওয়াননিহয়া, ৪র্থ খণ্ড, ৪৩ পৃঃ।
ওহুদের শহীদগণ ছাড়াও মুসলিম জাতির শীর্ষস্থানীয় বুজুর্গ ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের জীবনী গ্রন্থ দ্বারা প্রমাণ হয় যে, দাফনের পর বহু বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও তাঁদের লাশ বিন্দুমাত্রও পরিবর্তন হয়নি।
নবী-রাসূলদের প্রসঙ্গে হাদীসে সুস্পষ্ট ও সন্দেহাতীতভাবে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে যে, তাঁদের মোবারক দেহকে মাটি পচাতে বা গলাতে পারে না। তবে নবী নয় এমন কোন ব্যক্তিকেও যদি আল্লাহ তাআ'লা এ সৌভাগ্য ও মর্যাদা দান করেন, তা আল্লাহর অনুগ্রহ ও ক্ষমতার বাইরে কোন বিষয় নয় ।